ছবি : কবি জীবনানন্দ দাশ
প্রেমের কবি, ভালবাসার কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মদিন আজ। তিনি ছিলেন শুদ্ধতম ও রূপসী বাংলার কবি হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৯৯ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহন করেন। তাদের পূর্বপুরুষ বিক্রমপুরে বসবাস করতেন। তার মা কবি কুসুম কুমারী দাশ ও বাবার নাম সত্যনানন্দ দাশ।
কবি ব্রজমোহন স্কুল থেকে এসএসসি, ব্রজমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি, প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পেশাগত জীবনে কবি প্রথম অধ্যাপনা শুরু করেন ১৯২২ সালে কলকাতা সিটি কলেজে। এরপর পর্যায়ক্রমে দিল্লির রামযশ কলেজ, ব্রজমোহন কলেজ, বাগেরহাট কলেজ, হাওড়া গার্লস কলেজ, খড়গপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবি কলকাতার হাওড়া কলেজে অধ্যাপনা করছিলেন। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী এই লেখক একাধারে কবি, অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, উপন্যাসিক, গীতিকার। স্কুল জীবনেই কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলা ও ইংরেজিতে লেখালেখি শুরু করেন। তার প্রথম কবিতা ‘বর্ষ’ ১৯১৯ সালে ‘ব্রাক্ষ্মদী’ পত্রিকায় প্রকাশ পায়।
তার কবিতা বাংলার রূপ, প্রকৃতি, মানুষের জীবনধারা, মাটি, তাদের কর্ম, দুঃখ-কষ্ট, বৃটিশ শাসনবিরোধী, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা উঠে এসেছে। কবিতা নির্মিতিতে ভিন্ন আঙ্গিকে, ভাষাগতভাবে পূরাণকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন জীবনানন্দ। রবীন্দ্রোত্তর কবিতায় তার মতো ভিন্নভাবে সৃষ্টিশীলতা আর কারও মধ্যে কাজ করেনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবি ততটা জনপ্রিয়তা না পেলেও মৃত্যুর পর তার সৃষ্টিশীলতাই তাকে শ্রেষ্ঠ কবির মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। জীবনানন্দ দাশের প্রথম কবিতার বই ‘ঝরা পালক’ প্রকাশ পায় ১৯২৭ সালে। কলেজ জীবন থেকে তার লেখা নানা পত্রিকায় প্রকাশ পেতে থাকে।
তার প্রকাশিত অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে- ধূসর পান্ডুলিপি (১৯২৭), বনলতা সেন (১৯৪২), মহাপৃথিবী (১৯৪৪), সাতটি তারার তিমির (১৯৪৮), জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৪), রূপসী বাংলা (১৯৫৭), বেলা অবেলা কালবেলার কবিতা (১৯৬১ ), সুদর্শনা (১৯৭৬), আলো পৃথিবী (১৯৮১), মনোবিহঙ্গম, প্রেম তোমার কথা ভেবে (১৯৯২)।
গল্পগ্রন্থ: ‘জীবনানন্দ দাশের গল্প (১৯৭২), চারজন (২০০৪), শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৭৩)। এছাড়া কবির একটি প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশ পায়।