লোহার শিক
আচ্ছা বাবা,
আমি যদি তোমার মৃত্যু কামনা করি,
আমার কি খুব বড় ভুল হবে?
অবাক হচ্ছো এই ভেবে?
তুমি তোমার সন্তানের জন্য,
পৃথিবী সমান ব্যাথা বুকের মধ্যে লুকিয়ে,
হেসেছো, হাসিয়েছো।
অজস্র সংকীর্ণতায় রুদ্ধরোষ দমন করে বাড়িয়েছো হাত।
আগলে রাখার টানে শিখিয়েছো দাড় বাইতে।
এই কি তার পরিণাম?
আচ্ছা বাবা,
আজ তোমার বুকের ভেতরের ব্যাথাটা প্রকান্ড রকমের বড় হচ্ছে, না?
কিন্তু আমি ই বা কি করবো বলো?
জানোইতো,
মধ্যবিত্তরা সব অবস্থাতেই মধ্যবিত্ত।
মধ্যবিত্ত!
যেখানে বিস্তর নিষেধ, বিধান,
আইন-কানুন,
একটা লোহার শিকের মধ্যে জীবনটা।
এখান থেকে বাহির হওয়ার কোন উপায় আছে কি?
আচ্ছা বাবা,
তুমি যদি আমার মৃত্যু কামনা কর,
তোমার কি খুব বড় ভুল হবে?
আমি অবাক হব না।
কারণ,
পৃথিবী সমান যে ব্যাথাটা,
তোমার বুকের মধ্যো লুকিয়ে রেখেছো,
সেটা আমি জানি।
অবহেলা, অনিদ্রা তোমায় প্রতিনিয়ত একটু একটু করে গ্রাস করছে,
সেটাও আমার জানা।
বিসর্জনের পূর্বাভাস
নিথর দেহ ছাড়িয়া গেলাম,
হস্ত পাতিয়া নিও।
এ জীবনে আর নাহি ফিরিয়া আসিবো,
অন্যত্র সম্মতি দিও।
উজান গাঙে ভাঙ্গা তরীখানি,
হাঁকিয়া উঠিছে ডাক।
এইবার মোরে যাইতে হবে
দিয়ো না গো অভিশাপ।
সমস্তই তোমার তরে রাখিয়া গিয়াছি,
অনিদ্রা সঙ্গে লয়ে।
অন্তত এইটুকু মোরে লইতে বাঁধা,
দিয়ো না গো বলি অনুনয়ে।
যদি কোনদিন কোন কারণে,
পড়ি গো তোমার মনে।
কাঞ্চন দিঘির শাপলা পানে,
চাহিয়া রইয়ো আনমনে।
সযত্নে রাখিও কাঁসার বাটিটি,
ও মোর প্রিয়া।
আদর ভরিয়া দিও
কভু আসে যদি এ হিয়া।
ব্যাথার বার্তা
প্রিয়তমা.
বিষন্নতা কাটিয়ে উঠেছো কি?
দারুন বেমানান প্রিয়কে নিয়ে দ্বিধাগ্রস্থতা?
আঁজলা ভরা প্রবঞ্চনা কি এখনো নিশ্চল?
বিষাদ, বিরক্তি, নিরুদ্বেগ কি আজঅবধি স্থির?
প্রিয়তমা,
কি ভাবছো?
কেন কড়া নেড়েছি?
ভাবছো, একগুচ্ছ অবহেলা প্রার্থনা করছি?
না, হৃদয়ে উদিত ব্যাথার বার্তা বিতরণ করতে এসেছি।
প্রিয়তমা,
গভীর ভালোবেসেছি, আরও গভীর।
অধিক ঠকিয়েছো, আরও অধিক।
আমার প্রাণে রয়েছো গোপন, যেখানে দুঃখের প্রবেশাধিকার নেই।
তোমার প্রাণ হয়েছে শুন্য, সেখানে সুখের প্রবেশাধিকার নেই।