প্রসংঙ্গঃ নোবেল শান্তি পূরষ্কারের মর্যাদা । সরদার মোহম্মদ রাজ্জাক
প্রসংঙ্গঃ নোবেল শান্তি পূরষ্কারের মর্যাদা । সরদার মোহম্মদ রাজ্জাক

প্রফেসর . মুহাম্মদ ইউনুস ২০০৬ সালে শান্তিতে আন্তর্জাতিক নোবেল পূরষ্কারের অর্ধেক লাভ করেন বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর বিশেষ অবদান রাখার কারনে। বাকী অর্ধেক লাভ করে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে তিনি কর্তৃক পরিচালিত বাংলাদেশের গ্রামীন ব্যাংক-ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক উদ্দোক্তাও . মুহাম্মদ ইউনুস। কাগজে কলমে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল ব্যংকটি বাংলাদেশের গ্রামীন জনপদের হতদরিদ্র নারীদের মাঝে তাদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে আর্থিক ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান রে তাদেরকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করে তুলবে যা দেশের সার্বিক দারিদ্র বিমোচনে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। লক্ষ্য নিয়েই বিগত ১৯৮৩ ইংরেজী সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বিশেষ আইনের অধীনে গ্রামীন ব্যাংক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং একই বছর .মুহাম্মদ ইউনুসকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রদান করা লে বাংলাদেশ ব্যাংক তা আইন অনুযায়ীই অনুমোদন করে। এখনে উলে­খ্য যে, ১৯৯৩ সালের গ্রামীন ব্যাংক অধ্যাদেশ অনুযায়ী ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের পদটি হবে সার্বক্ষনিক। নিয়োগের শর্তানুযায়ী ব্যাবস্থাপনা পরিচালক গ্রামীন ব্যাংকের একজন কর্মী হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং তার চাকুরী থেকে অবসর গ্রহনের বয়স সীমা হবে ৬০ বছর। এখানে আরও উলে­খ্য যে, ১৯৯০ সালে . মুহাম্মদ ইউনুসকে গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক পূণরায় এমডি পদে নিয়োগ দেয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংক তা অনুমোদন করে। কিন্তু পরবর্তীতে অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোন প্রকারের অনুমোদন ছড়াই গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক আবার তাকেই অনির্দিষ্টকালের জন্যে এমডি পদে নিয়োগ প্রদান করা হয় যা কোনভাবেই আইনসিদ্ধ নয়- যেহেতু এই নিয়োগকে আইনানুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদন করে নি। সে প্রেক্ষিতে গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদে . মুহাম্মদ ইউনুসের অবসরের বয়স সীমা ১৯৯৯ সালেই শেষ হয়ে যায়। সে সুত্রেই বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ আইন অনুযায়ী বিগত ২৮ফেব্রƒয়ারী২০১১ গ্রামীন ব্যাংকের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত একটি চিঠির মাধ্যমে জানায় যে,বর্তমানে গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদে . মুহাম্মদ ইউনুসের অবস্থান আইনগতভাবে বৈধ নয়। এর পর বিগত ০২ মার্চ২০১১ তারিখ গ্রামীন ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে . মুহাম্মদ ইউনুসকে অব্যাহতি প্রদানের নির্দেশ দিয়ে গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে চিঠি প্রদান করে। চিঠি দুটি প্রাপ্তির পর . মুহাম্মদ ইউনুস দুটি চিঠিরই কার্যকারীতাকে স্থগিত করা সহ চিঠি দুটিকে অবৈধ এবং বেআইনী হিসেবে ঘোষনা করবার আবেদন জানিয়ে বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে রিট পিটিশন দাখিল করেন। একই সাথে গ্রামীন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ১২ জন সদস্যের মধ্যে ০৯ জন সদস্যও একই বিষয়ের ওপর আরও একটি রিট মামলা দায়ের করে। আদালত দুটি মামলার ওপরই তিনদিন পর্যন্ত উভয় পক্ষের শুনানী শেষে দুটি রিট পিটিশনই খারিজ করে দেন। রিট পিটিশন দুটি খারিজ হবার পর .ইউনুস এবং উলে­খিত ০৯ জন সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে দুটি আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানী শেষে আবেদন  দুটির ওপর কোন প্রকার আদেশ না দিয়ে শুনানীর জন্যে ১৫-০৩-২০১১ তারিখ নির্দ্ধারন রে সুপ্রিম কোর্টের

পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। মামলা দুটি তখন  আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকে। এরপর ১৫-০৩-২০১১ তারিখ উভয় পক্ষের শুনানী শেষে সুপ্রিমকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চও মামলা দুটির ওপর প্রদত্ত হইকোর্টের বায়ের ওপর কোন স্থগিতাদেশ না দিয়ে দুসপ্তাহ পর শুনানীর তারিখ ধার্য করেন। অর্থাৎ ১৫-০৩-১১ তারিখ থেকে পরবর্তী দুসপ্তাহ পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়েেকই সুপ্রিমকোর্ট বহাল রাখেন।

         এই হলো মোটামুটি গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদ থেকে . মুহাম্মদ ইউনুসের আইনানুগভাবে অব্যাহতি (বাংলাদেশ ব্যাংকের মতানুযায়ী ) সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি প্রাপ্তির পর . মুহাম্মদ ইউনুস কর্তৃক গৃহীত আইনগত পদক্ষেপের সর্বশেষ অব¯হাÑযা ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন জাতীয় প্রিন্ট মিডিয়াসহ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। এবং দেশের জনগণও বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক অবগত হবার পর ইতিমধ্যেই .ইউনুস সম্পর্কে তাদের মনের মধ্যে যে একটি ইতিবাচক ধারনা ছিল তা ধীরে,ধীরে মুছে যেতে শুরু করে এবং সময় পরিক্রমার এক পর্যায়ে এসে তা নেতিবাচক ধারনায় রূপান্তরিত হয়।   

 

         এখন এখানে লক্ষনীয় বিষয় হলো- গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদ থেকে .মুহাম্মদ ইউনুসের অব্যাহতি সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি চিঠিই যে বৈধ ছিল তা উচ্চ আদালতের রায়েই প্রমানিত। নিশ্চয়ই আদালত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইন,কানুন পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিশ্লেশণ না রে রায়টি প্রদান করেন নি। সংগত কারনে এখানে আরও একটি বিষয় আপনা আপনিই এসে যায় যে, ব্যাপারটি সম্পর্কে . ইউনুসের কি আদৌ কোন ধারনা ছিল না? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবেই তিনি সব জেনে শুনে শুধুমাত্র গ্রামীন ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার একজন উদ্দোক্তা হবার সুবাদে নিজেকে সবকিছুর উর্দ্ধে ভেবেছিলেন? আর অর্দ্ধেক নোবেল পূরষ্কার প্রাপ্তির পর মনে করেছিলেন তিনি রাস্ট্রেরও ওপরে উঠে গেছেন এবং রাষ্ট্রের কোন আইনই তার গ্রামীন ব্যাংক সংক্রান্ত কোন কাজের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয় অথবা আইনের কোন হাত কোনভাবেই তাকে ষ্পর্শ করতে পারবে না?  

 গ্রামীন ব্যাংক কোনভাবেই কোন প্রকারের এনজিও নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বিশেষ  আইনের অধীনে সৃষ্ট একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। সেদিক থেকে- ‘বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানী আইন”-এর অধীনেই ব্যাংকটি পরিচালিত। সে কারনে আইনের কোন প্রকার ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশ ব্যংক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করবে সেটাই স্বাভাবিক। অতীতে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি কোন ব্যাবস্থা গ্রহন না করে থাকে তাহলে সেটি অতীতের বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দুর্বলতা অথবা ত্রটি-বর্তমান কর্তৃপক্ষের নয়। আর অতীতে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলেও বর্তমানেও যে করা যাবে না তেমন আইন কি রয়েছে?                 

         দেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্র,পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে অবিরামভাবে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়ে আসছে এবং দেশের অর্থমন্ত্রী বিষয়টির ওপর যেসব মতামত ব্যাক্ত করেছেন তাতে সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, বিগত এক বছর ধরেই তিনি বিষয়টি নিয়ে .ইউনুসের সংগে আলোচনা করে আসছিলেন এবং .ইউনুসকে সেচ্ছায় গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করে বিষয়টির একটি সন্তোষ সম্মানজনক সমাধান প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু .ইউনুস তাতে রাজী হন নি। বরং অর্থমন্ত্রীকে- ‘মুহিত ভাই’- সম্বোধন করে লিখিত একটি ব্যাক্তিগত চিঠিতে এমডি পদ থেকে পদত্যাগের শর্ত হিসেবে তিনি গ্রামীন ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদটি দাবী করেছিলেন এবং সে চিঠিটিকে তিনি হলফনামার মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপনও করেছিলেন-যা আদালতের কাছে আইনগতভাবেই গ্রহনযোগ্য ছিল না। যেহেতু চিঠিটি ছিল ব্যাক্তিগত সেইহেতু চিঠিটির আইনী কোন মূল্যই ছিল না আদালতের কাছে। আদালত শুনানীর সময় সেকথাটি ষ্পষ্টভাবেই উলে­ করেছে।এতক্ষন যা বলা হলো তার সবটুকুই উপক্রমনিকা। এখন মূল প্রসঙ্গের অবতারনাঃÑএকটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাস্ট্রের আইনী কাঠামোর ভেতর প্রতিষ্ঠিত একটি বিশেষ ব্যাংক বাংলাদেশর গ্রামীন ব্যাংক এবং সে বিধিবদ্ধ ব্যাংকটিরই মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যাবস্থাপনা পরিচালক . মুহাম্মদ ইউনুস। এর বাইরে তিনি আর কিছু নন। ক্ষুদ্রঋণ প্রচলনের প্রবক্তা বলে দাবী করলেও প্রকৃত অর্থে তিনি তা নন। তিনি কর্তৃক ক্ষুদ্রঋণ প্রচলনের অনেক আগেই এদেশে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প চালু হয়। তবে সে সময় ঐসব প্রকল্পের পরিচিতি এত ব্যাপক আকারে বি¯তৃত ছিল না। সাধারনতঃ তপশীলি ব্যাংকগুলিই ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকত-যাদের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বংক অন্যতম-যার সুদের হার কোনক্রমেই সর্বোচ্চ ১৩% অতিক্রম করত না।অথচ গ্রামীন ব্যাংকের সুদের হার সবকিছু মিলিয়ে হিসেব করলে দাঁড়ায় শতকরা প্রায় ৩৮ শতাংশের কাছাকাছি। এই হারে সুদ নিয়ে গ্রামীন ব্যাংক যে ঋণ প্রদান করে সে ঋণের মাধ্যমে দেশের হত দরিদ্র মানুষের ভাগ্যের কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তা নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ,অনেক গবেষনা ইতিমধ্যেই হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। সে সব বিশ্লেষণ,গবেষনা থেকে ষ্পষ্টতঃই প্রতিয়মান হয় যে, সব ঋণ নিয়ে শতকরা ০৫ ভাগ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের বিপরীতে ৩০ ভাগ মানুষের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটেছে। সুদ সহ গৃহীত ঋনের বোঝা বহন করতে না পেরে কেউ,কেউ ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে,কেউ বা ভিটেমাটি বিক্রী করে দিয়েও ঋণের দায় শোধ করতে পারেনি, এই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে কেউ তার সন্তানকে বিক্রী করে দিতেও কুন্ঠা বোধ করেনি আবার কেউ বা ঋণ পরিশোধের কোন উপায়ন্তর না দেখে চরম ভীতি, লজ্জা আর আতঙ্ক নিয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়েছে। তাহলে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে যে দরিদ্র জনগষ্ঠির ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে গ্রামীন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা- যে ব্যাংকে সরকারেরও ২৫ ভাগ শেয়ারও রয়েছে- সেই ব্যাংক যদি কয়েক যুগ আগে চরম দারিদ্র পীড়িত কুসংষ্কারাচ্ছন্ন আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে দেশে আগত কাবুলিওয়ালাদের মতো উচ্চ সুদের ব্যাবসা করে তাহলে সে ব্যাংককে কি জনকল্যানমূখী কোন ব্যাংক বলা যায়? প্রকৃত অর্থে যা বলা যায় তা হলো অতিদরিদ্র জনগনের অতি দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে তাদের জীবনীশক্তি শোষনকারী অতি মুনাফালোভী নিছক একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি একদিকে যেমন পশ্চিমা ধনী দেশগুলির কাছে আমাদের দারিদ্রের পসরা বিকিয়ে মাত্র ০২ শতাংশ হার সুদে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ এনে ৩৮ শতাংশ হার সুদে হত দরিদ্র জনগণের মাঝে বিনিয়োগ করে। যদিও জাতীয় ঋণের ক্ষেত্রে দাতা দেশ অথবা সংস্থা গুলির শর্ত থাকে যে, দরিদ্রদের মাঝে সর্বোচ্চ ০৫ শতাংশের ওপর সুদ চার্জ করে কোন ঋণ প্রদান করা যাবে না। সে শর্ত মেনেই গ্রামীন ব্যাংক তাদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহন করে থাকে কিন্তু সে শর্ত মানে না। এরপরেও ধরনের ঋণের বাইরে বিভিন্ন দেশ বা সংস্থার অনুদান তো আছেই। আবার অন্যদিকে এর বিপরীতে পশ্চিমা কোন কোন ধনাঢ্য দেশের কোন কোন সংস্থা উচ্চ সুদের হারে গ্রামীন ব্যাংককে ঋণ প্রদান করে থাকে এবং ঋণ প্রদানের বিনিময়ে তারা বিপুল পরিমান অর্থ গ্রামীন ব্যাংক থেকে উপার্জন করে থাকে লে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়-যা নেহাতই ব্যবসা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের পূরোটাই পরিচালিত হয়ে থাকে ব্যাংকটির ব্যাবস্থাপনা পরিচালক .ইউনুসের মাধ্যমে। যদিও গ্রামীন ব্যাংকের নামেমাত্র একটি পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে কিন্তু সেটি পূরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হয় .ইউনুসের ব্যাক্তিগত ইচ্ছার অধীনে।

      .ইউনুস কর্তৃক দীর্ঘ দিন থেকে অবৈধভাবে গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদটি আকরে থাকার বিরূদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহনের পর থেকেই অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে লক্ষ্যিত হয়ে আসছে যে, পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ- বিশেষ রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কতিপয় দেশ অতি উৎসাহী য়ে .ইউনুসের পক্ষ নিয়ে তার অনৈতিক কর্মকান্ডের স্বপক্ষে লজ্জাহীনভাবে অবিরাম সাফাই গেয়ে চলেছে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাফাই গাওয়ার মাত্রাটি যেন সকল রাস্ট্রিয় শিষ্টাচারের সীমাকেই ছাড়িয়ে গেছে। এখন দেশের সাধারন মানুষের প্রশ্ন- একটি দেশের একটি বিশেষ ব্যাংকের নিতান্তই একজন এমডিকে রক্ষার জন্যে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের এত আগ্রহ কেন? মার্কিন পররাস্ট্রমন্ত্রী .ইউনুসের বিষয়টি বিবেচনার জন্যে টেলিফোনে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে অযাচিতভাবে অনুরোধ করেন, মার্কিন কংগ্রেসেরও কয়েকজন সদস্য যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান। কি শুধুমাত্র .ইউনুস গ্রামীন ব্যাংকের মাধ্যমে বিপুল পরিমানের ব্যবসা রে অর্দ্ধেক নোবেল পূরস্কার লাভ করেছেন- কারনেই নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোন ধরনের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় জড়িত রয়েছে? .ইউনুসকে ব্যাবহার করে তারা কি কোন বিশেষ স্বার্থ সিদ্ধি করতে চায়। সাধারণ মানুষের মনে ধরনের সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে একারনে যে- দেশের গ্যাস ক্ষেত্রগুলি থেকে গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান সমুহের প্রায় সবগুলিই মার্কিন যুক্তরাস্ট্র এবং কানাডীয় কোম্পানীর মালিকানাধীন। তারা বহুদিন থেকেই পাইপ লাইনের মাধ্যমে অন্য দেশের কাছে গ্যাস বিক্রীর চেষ্টা চালিয়ে আসছে কিন্তু কোনক্রমেই সফল হতে পারছে না। যদি সামনের দিনগুলিতে কোন না কোন ভাবে .ইউনুসকে কোন সরকারে প্রবিষ্ট করানো যায় অথবা তার নেতৃত্বে সরকার গঠন করা যায় তাহলে তার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই উলে­খিত দেশগুলির স্বার্থ সংরক্ষণ করা যাবে- যেহেতু তারাই তাকে নোবেলের অদ্ধের্কটা দান করেছে। সন্দেহের যথার্থতা বিগত জরুরী অবস্থা চলাকালীন .ইউনুস নিজেই .কামাল হোসেনের পরামর্শে দেশের একটি ইংরেজী দৈনিকের সম্পাদককে মহাসচিবের পদে নিযুক্ত  করে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের মধ্যে দিয়ে প্রমান করেছেন। তার এবং তার মুরুব্বিদের নিশ্চিত ধারনা ছিল যে, যেহেতু গ্রামীন ব্যাংকের নারী ঋণ গ্রহীতা বাংলাদেশের সারা পল্লী অঞ্চলে ছড়ানো সেইহেতু একটি রাজনৈতিক দল গঠন রে যদি সেই দলকে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করানো যায় এবং কেবল মাত্র  গ্রামীন ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতারাই তাদের পরিবারসহ  দলটিকে ভোট দেয় তাহলে তো আর কারুরই প্রয়োজন হয় না। দলটি একক ভাবেই সরকার গঠন করতে পারে। যেমনটি অতীতে হয়েছিল ফরিদপুরের আটরশির বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীরের ক্ষেত্রে। পীরের এত ভক্ত,এত অনুরাগী,এত মুরিদ সারা দেশে এমন কি দেশের বাইরেও যে  এসব দেখে তিনি ভাবলেন একটি রাজনৈতিক দল গঠন রে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে তার মুরিদদের ভোটেই তার দল জয় লাভ করবে এবং কারো সাহায্য ব্যাতীতই তার দল ক্ষমতায় বসতেও সক্ষম হবে। সে চিন্তার বাস্তব প্রতিফলন ঘটিয়ে তিনি মূহুর্তমাত্র বিলম্ব না রে- ‘ জাকের পার্টি’- নাম দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন রে যথা নিয়মে- ‘ গোলাপ ফুল’- প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলেন। নির্বাচন শেষে ফলাফলে দেখা গেল তার প্রার্থীদের জামানতই বাজেয়াপ্ত য়ে গেছে। অর্থাৎ সাধারন মনুষ তো দুরের কথা তার মুরিদরাই তার দলকে ভোট দেয় নি। . ইউনুস যখন দল গঠন  প্রক্রিয়া চুড়ান্ত রে এনে দলের নামটিও ঘোষনা রে ফেললেন তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শ্রোতাদের উদ্দেশ্য রে বললেন-‘এখনতো ঘুষখোর, সুদখোররাই রাজনৈতিক দল গঠন রে ক্ষমতায় যাবার স্বপ্ন দেখবে। এবং এই মূহুর্তে এটাই স্বভাবিক কেননা এখন জরুরী অব¯থা সারা দেশে। কারুরই কথা বলার অধিকার থাকবার কথা নয়। কিন্তু এর মধ্যেও একটি বিশেষ শ্রেনী- যাদেরকে কথা বলার  বিশেষ অধিকার প্রদান করা য়েছে লে সব দেখে শুনে মনে হচ্ছে তারাই সুযোগটি নেবে। ফলাফল কি হবে তা ভবিষ্যতই লে দেবেএর পর থেকেই .ইউনুসের দল গঠন সংক্রান্ত কার্যক্রম উল্টো দিকে চলতে শুরু করল। হয়তো তিনি ভেবে দেখলেন শেখ হাসিনার এমন হুমকির পর নতুন দল গঠন রে নির্বাচন করতে গেলে তার গ্রামীন ব্যাংকের অস্তিত্বই সংকটের মুখে পড়বে এবং নির্বাচনে তার দলকে জাকের পার্টির ভাগ্যই বরন করতে হবে। সময় পেরিয়ে না যেতেই তাই তিনি রাজনৈতিক সব কর্মকান্ড গুটিয়ে নিয়ে যথেষ্ঠ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় সে সময় দিয়েছিলেন।

 

         অতীতে দেখা গেছে . কামাল হোসেন দীর্ঘ নীরবতা ভেঙ্গে যখনই কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড এবং বিশেষ তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছেন তখনই কোন না কোন অঘটনের সূত্রপাত ঘটেছে। সে কারনে দেশের সহজ,সরল সাধারন মানুষের মনে আকাশে সিঁদুরে মেঘ দেখলেই অগ্নিভীতি সৃষ্টি হয়ে যায়। আর অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে ধরনের ভীতি সৃষ্টি মোটেই অস্বাভাবিক নয়। জরুরী অবস্থার সময়ও .কামাল হোসেনের তত্বাবধায়ক সরকারের নেপথ্য শক্তি সেনাবাহিনীর অলিখিত উপদেষ্টা হিসেবে    কর্মকান্ড পরিচালনার বিষয়টি তখনই প্রকাশিত য়ে পড়ে।

        বিগত ১৬ মার্চ২০১১ তারিখে প্রকাশিত এদেশের একটি জাতীয় দৈনিকের বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধের কিছু অংশ .ইউনুসের স্বরূপ উদ্ঘাটনের ক্ষেত্রে সামান্যতম হলেও সহায়ক হবে লে এখানে উদ্ধৃত করছি.মুহাম্মদ ইউনুসের বিরূদ্ধে তহবিল স্থানান্তরের অভিযোগ তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি তার প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী নাম করা তদবির প্রতিষ্ঠান বা লবিষ্ট ফার্মের দ্বারস্থ হন। এই প্রক্রিয়ায় গড়ে ওঠে-‘ফ্রেন্ডস অব গ্রামীন ফ্রান্সে জন্ম নেয়া এই সংগঠনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘের সাবেক মানবাধিকার কমিশনার মেরি রবিনসন। ছাড়াও ওই সংগঠনে রয়েছেন বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ আইনজীবী ব্যারিস্টার .কামাল হোসেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জেমস ডি উলফেনসন উইলিয়াম ডারটনের মতোা প্রভাবশালী ব্যাক্তিত্ব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ফ্রেন্ডস অব গ্রামীন মূলত মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের বানিজ্যিক লবিষ্ট ফার্ম বারসন মার্সটেলার ( Burson -Marsteller)-এর সহায়তায় গড়ে উঠেছে। সন্দেহ হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের ওই লবিষ্ট ফার্ম বিশ্বের ক্ষমতাবানদের অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে ফ্রেন্ডস অব গ্রামীনের কমিটিতে নিয়ে আসছে। নিবন্ধটিতে আরও বলা হয়েছে- ‘বিশ্ব সামাজিক ব্যবসায়ের সাইট থেকে জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রয়ারি ফ্রান্সের প্যারিসে ৫০টি বিশ্বখ্যাত এনজিও সমন্বয়ে ফ্রেন্ডস অব গ্রামীন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে প্রতিদিনই কেউ না কেউ ওই সংগঠনে যোগ দিচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বে কোন ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক দলের জন্য হয়ে লবিষ্ট ফার্মগুলো কাজ রে থাকে। বারসন-মার্সটেলার এমনই একটি প্রতিষ্ঠান,যারা বিশ্বব্যাপী লবিষ্ট ফার্ম হিসেবে কাজ রে থাকে।

          এখানে বিশেষভাবে উলে­খ্য যে, গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদের দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি  গ্রামীন ব্যাংকের তহবিল থেকে গ্রামীন অথবা বংলাদেশ ব্যাংক কারোরই কোন বিধি,বিধানের তোয়াক্কা না রে যথেষ্ঠ স্ফীত অংকের অর্থ তার অনুকুলে গ্রামীন ব্যাংকের সাথে লোক দেখানো চুক্তি রে বিনা সুদে অথবা নামমাত্র সুদে তার ব্যক্তিগত  ব্যবসায়ে স্থানান্তরিত করেছেন এবং অর্থ যদি তার সেই ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানটি চুক্তিতে বর্নিত নির্দ্ধারিত সময়ের মধ্যে অথবা কখনও গ্রামীন ব্যাংককে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সেই অর্থ গ্রামীন ব্যাংকের লোকসান লে গণ্য হবে এমন একটি হীনতম চুক্তিও তিনি নিজে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে গ্রামীন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক .ইউনুসের সংগে করেছেন। নিজের ব্যক্তিগত দায় তিনি দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি সার্বজনীন ব্যাংকের ওপর কেবলমাত্র তার ব্যক্তিস্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে  চাপিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি কি পরিমান অনৈতিক,আইনবিরূদ্ধ প্রতারনামূলক তা কি তাকে তার নোবেল দাতারা পূরস্কারটি দেবার আগে কখনও ভেবে দেখেছিলেন? দেখলেও বোধকরি বিষয়টি তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই হয়তো বিবেচনায় আনতে চান নি এই ভেবে যে, পূরষ্কারটি  .ইউনুসকে অবশ্যই দিতে হবে। না দিলে যে তাদের পক্ষে দালালী করবার মতো আর একজন এত অনুগত, বশংবদ সুদক্ষ .ইউনুসকে তৈরী করতে অনেকটা সময় লেগে যাবে। হাতের কাছে সহজলভ্য .ইউনুস থাকতে কেন তারা এত সময় অপেক্ষা করার ঝুঁকি নেবেন।                                                                                                      .ইউনুস অত্যন্ত অনৈতিক পন্থায় গ্রামীন ব্যাংকের তহবিল ব্যাবহার রে একটি,দুটি নয় বেশ কয়েকটি ব্যাক্তিগত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন-যা এক,এক রে এখন অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে

এবং সমুহ মিডিয়ার অনুসন্ধানী রিপোর্টের কারনে জনসমক্ষে প্রকাশ য়ে পড়ছে এবং ক্রমান্বয়ে তিনি জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন সাথে সাথে তার অতিমুনাফালোভী চরিত্রের বিকাশও তিনি সবের মাধ্যমে নিজেই ঘটিয়ে ফেলেছেন। 

  অতীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টেও বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে এসেছে এবং ঐসব অনিয়মের জন্যে .ইউনুসের বিরূদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের ারিশও রিপোর্টে করা হয়েছে। কিন্তু সে সময়ের বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কেন তার বিরূদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করে নি সে সম্পর্কে সে সময়ের বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষই ভাল বলতে পারবে। সময়ের পরিক্রমায় কোন অন্যায়,অনৈতিক কর্মের ফল যে চাপা থাকে না তার স্বাভাবিক প্রমান .ইউনুসের সামনে সময়ের বর্তমান প্রেক্ষিত। বিষয়টি হয়তো এতদুর পর্যন্ত গড়াত না-যদি না নরওয়ের একটি টেলিভিশন চ্যানেল এদেশে তাদের লোকজন পাঠিয়ে তাদের মাধ্যমে সরেজমিনে গ্রামীন  ব্যাংকের ঋণ গ্রহীতাদের সাথে কথা বলে, তাদের সার্বিক আর্থিক এবং সামাজিক অবস্থার উন্নয়নসহ গ্রামীন ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকান্ডের খোঁজ খবর নিয়ে এবং সে সব কর্মকান্ড বিশদভাবে পর্যালোচনা করে একটি ডকুমেন্টরী ফিল্ম তারা তৈরী করেছেনÑ যাতে তারা গ্রামীন ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহীতাদের অনেকেরই করূন মর্মন্তুদএবং হৃদয়বিদারক দুর্ভোগ লাঞ্ছনার জীবন্ত চিত্র তুলে ধরেছেনÑযা পৃথীবির বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রদর্শিত হয়েছে এবং অনেক ওয়েব সাইটের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছেÑবাংলাদেশেও যার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল সমূহে ফিল্মটি প্রদর্শিত হবার পর বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সাধারণ মানুষের স্তর পর্যন্ত গ্রামীন ব্যাংক এবং ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক .মুহাম্মদ ইউনুস সম্পর্কে আলোচনা,সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করে। এই ঝড়ের প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রামীন ব্যাংকের কর্মকান্ড .মুহাম্মদ ইউনুসের বিরূদ্ধে ডকুমেন্টরী ফিল্মে উত্থাপিত অভিযোগ সমুহ তদন্তের লক্ষ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সে কমিটি-প্রদত্ত তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে সকল আইনগত দিক পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক .ইউনুসের বিরুদ্ধে   আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে।

        এই তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই .ইউনুস প্রচন্ডভাবে বিচলিত হয়ে পড়েন। তদন্ত শুরু হওয়ার সময় তিনি দেশের বাইরে ছিলেন। সংবাদটি জানার পর তিনি তার বিদেশে অবস্থান সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত দেশে ফিরে এসে পরি¯িথতি সামাল দেবার চেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি মার্কিন লবিষ্ট ফার্মবারসন মার্সটেলার’- এর দিকে হাত বাড়ানএবং প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে তিনি তার নিজেকে এবং তার ব্যাক্তিগত সম্পদ রক্ষার লক্ষ্যেফ্রেন্ডস অব গ্রামীন’-এর মতো একটি তদবির প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেনÑযেখানে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক ব্যায় হাজার,হাজার মার্কিন ডলারের মাধ্যমে গ্রামীন ব্যাংককেই পরিশোধ করতে হয়। .ইউনুসের মানষিক অবয়বে যদি সততার অবস্থানটি দৃঢ়তর   হতো তাহলে তাকে রক্ষা করবার জন্যে অবশ্যইবারসন মার্সটেলার’- ভিত্তিক- ‘ফ্রেন্ডস অব গ্রামীন’-এর মতো তদবির প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে হতো না। .ইউনুস অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। পড়াশুনাও করেছেন অর্থনীতির ওপর। কিন্তু নেবেলের  অর্দ্ধেকটি তিনি পেয়েছন এদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অসামান্য অবদান রাখার জন্যে।  অর্থাৎ নোবেল কমিটির বিবেচনায় গ্রামীন ব্যাংকের মাধ্যমে শতকরা ৩৮ ভাগ সুদে বাংলাদেশের নিরীহ,দরিদ্র জনমানুষের মাঝে ঋণ বিনিয়োগ রে তিনি বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জনকে রূপান্তরিত  হয়েছেন।কি আাশ্চর্য সৌভাগ্য বাঙ্গালী জাতির একজন ব্যক্তি- দরিদ্র মানুষের সাথে শুধু ঋণের ব্যবসা দিয়ে বিত্তের পাহাড় গড়ে ুলে শতশত অসহায় মানুষের সর্বস্ব লুন্ঠন রে সমাজে চরম অশান্তির চক্রজালে তাদেরকে অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলে শান্তির জন্যে নোবেল পূরষ্কার পেয়ে যান। সত্যি, ভবলে আশ্চর্যই হতে হয়।

         বিশিষ্ট পদার্থ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নরওয়েরÑ‘সুইডিশ একাডেমীক্লেÑ তার সকল সম্পত্তি উইল রে দিয়ে বিশ্বব্যাপী বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষতঃ শান্তির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার ওপর উৎসাহ প্রদানের জন্যে তার নিজের নামে পূরষ্কারটি প্রবর্তনের যে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন তার কি করুন চিত্র বিশ্ববাসী আজ প্রত্যক্ষ করছে।ডিনামাইট’- নামীয় একটি মারনাস্ত্র আবিষ্কার করার পর সে মারনাস্ত্রের ভয়ঙ্কর ধ্বংশ ক্ষমতা দেখে তিনি এতটাই বিচলিত এবং অনুতপ্ত হয়েছিলেন যে তার জীবদ্দশাতেই তিনি তার সকল সম্পত্তি সুইডিশ একাডেমীকে উইল করে দিয়ে গিয়েছিলেন। শর্ত ছিল যে, তার উইলকৃত সম্পত্তি থেকে যে আয় হবে তা থেকে যেন উলে­খিত বিষয় সমূহের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ তার নামে প্রবর্তিত পূরস্কারটি বিশ্বের যে কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়। অথচ একটি নিষ্কলুষ মহান আকাঙ্খার কি কদর্য রাজনীতিকরন প্রত্যক্ষ করছি ! কেবলমাত্র রাজনৈতিক কারনে ইসরাইল কর্তৃক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দখলকৃত মিশরের সিনাই উপত্যকা মিশরকেই ফেরৎ প্রদানের জন্যেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী মোনাচেম বেগিন এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট  আনওয়ার সাদতকে যৌথভাবে নোবেল পূরষ্কারে ভূষিত করা হয়। বিশ্বখ্যাত কুচক্রী সাবেক মার্কিন পররাস্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জারও পূরস্কার প্রাপ্তির যোগ্য বিবেচিত হন এবং তাকে পূরস্কারটি দেয়া হয়। প্রথমদিকে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে খুব বড় মাপের কোন অবদান না থাকলেও শুধুমাত্র মিয়ানমারের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সামরিক জান্তা সরকারকে সমর্থনকারী সমাজতন্ত্রী চীনকে হেয় প্রতিপন্ন করার সুদুর প্রসারী লক্ষ্য নিয়ে সে সময়ে বিদেশে অবস্থানকারী সাবেক বার্মার (বর্তমান মিয়ানমার) রাস্ট্রপতি প্রয়াত অং সান-এর কন্যা অং সান সুচি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন রে সামরিক জান্তার বিরূদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করবার পরপরই নোবেল কমিটি সুচিকে পূরস্কারটি প্রদান করে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা পোষন করেও যা না বললে নয়- তা হলো ১৯১৩ সালে ইংরেজীতে অনুদিত তাঁর রচিত- ‘ গীতাঞ্জলী’- কাব্য গ্রন্থের জন্যে যখন তাঁকে নোবেল পূরস্কারে ভুষিত করা হয় তখন প্রথন বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এবং সম্পূর্ণ ভারত তখন বৃটিশ সরকারের অধীনস্ত। সমগ্র ভারতের রাজনীতিকে তখন নিয়ন্ত্রন করত গোটা বাংলা আর বাংলার ঠাকুর পরিবারের আলাদা একটি মর্যাদা ছিল বাঙ্গালী বিশেষতঃ হিন্দু বাঙ্গালীদের কাছেÑ এবং সারা ভারতে তখন  হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই সংখ্যা গরিষ্ঠ ছিল। ঠাকুর পরিবারকে তারা যথেষ্ট সম্মান করার পাশাপাশি পরিবারের যে কোন সদস্যের যে কোন সিদ্ধান্তের প্রতিও তারা শ্রদ্ধাশীল ছিল। যেহেতু এই ঠাকুর পরিবারেরই একজন সদস্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে ইতিমধ্যেই অনেকদুর এগিয়ে গেছেন এবং তিনি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বাংলা কবিতা লিখে বাঙ্গালীদের অন্তরে একটি বিশেষ ¯হান রে নিয়েছেন সেইহেতু বৃটিশ সরকার বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তা রে একটু ভিন্ন পথে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই তারা বাংলা সাহিত্যে নোবেল পূরস্কার প্রদানের বিষয়ে তাদের মানষিক প্রস্তুতি সম্পন্ন রে ফেলল এই ভেবে যে, বাঙ্গালী ঠাকুর পরিবার থেকে উদ্ভুত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে যদি নোবেল পূরস্কারটি প্রদান করা যায় তাহলে হয়তো চলমান জীবন মরন বিশ্বযুদ্ধের সময় নোবেল পূরস্কারের কারনেই বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষের জনসমর্থনই বৃটিশ সরকারের অনুকুলে থাকবেÑ একই সংগে রবীন্দ্রনাথ ঠকুরের সাহিত্য-মেধার স্বীকৃতিও প্রদান করা হবে। এর ফলও অবশ্য নিশ্চিতভাবেই বৃটিশ সরকার পেয়েছিল। প্রথন বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় জনগন বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর কোন  অবস্থান গ্রহন করে নি। তহলে দেখা যাচ্ছে। সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেকে নেবেল পূরষ্কার প্রদানের অন্তরালে একদিকে যেমন ছিল তার বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখার বিষয়টিÑ অন্যদিকে তেমনি ছিল বৃটিশ সরকারের রাজনৈতিক দুরভিষন্ধি সিদ্ধ করার লক্ষ্যটিও। যদিও নোবেল পূরস্কারটি প্রদান রে থাকে নরওয়ের সুইডিশ একাডেমী কিন্তু সুইডিশ একাডেমীকে নিয়ন্ত্রন রে থাকে পশ্চিমা শক্তিধর দেশÑ বিশেষতঃ যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো প্রভাবশালী দেশ সমুহ। এই অলিখিত বিধানটি তখন থেকেই প্রতিষ্ঠিত য়ে এখনও বিদ্যমানÑযার জ্বলজ্যান্ত প্রমান মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাÑযিনি তার দেশের কোন ক্ষেত্রেই কোন বিশেষ অবদান না রাখার পরেও শুধুমাত্র সে দেশের রাস্ট্রপতি নির্বাচনে রাস্ট্রপতি পদের একজন প্রার্থী হিসেবে- ‘ পরিবর্তন’- শ্লোগানটি ধারন করবার সুবাদে অনায়াসেই পূরস্কারটি পেয়ে যান সম্ভবতঃ এই বিবেচনায় যে, তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট যার পিতা ছিলেন একজন আফ্রিকান মুসলিম  ¬¬কৃষ্ণাঙ্গ। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সংগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বহুবিধ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট এবং বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক। ওবামাকে পূরস্কারটি দিলে একাধারে আফ্রিকান দেশগুলির সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের সুত্র রে সে সব দেশের সম্পদের ওপর কিছুটা হলেও অন্ততঃ আধিপত্য বিস্তার সম্ভব হবে এবং যেহেতু আফ্রিকান অধিকাংশ দেশই মুসলিম প্রধান সেইহেতু বারাক ওবামাকে দিয়ে তাদের ওপর সবল মার্কিন প্রভাব সৃষ্টিও একেবারে অসম্ভব হবে না। তদানিন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন বর্তমানের রাশিয়া,গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ক্ষেত্রেও বিধানটি প্রযোজ্য। ঐসব দেশের তাদেরকেই পূরষ্কারটি প্রদান করা হয়েছে যারা পরোক্ষভাবে হলেও পশ্চিমা শক্তিধর রাস্ট্রগুলির স্বার্থ সংরক্ষনের ক্ষেত্রে তাদের কর্মে বিশেষ অবদান রেখেছেন। সোজা কথায় অরাজনৈতিক একটি মহৎ পূরষ্কারের ওপর স্বার্থ সিদ্ধির মোক্ষম উপায় হিসেবে একটি রাজনৈতিক মাত্রা আরোপ করা হয়েছে।  আর রকম একটি পূরষ্কারকেই এদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে খুব বড় মাপের অবদান রাখার জন্যে দুভাগে ভাগ রে একভাগ বাংলাদেশের গ্রামীন ব্যাংক আর একভাগ ব্যাংকটির তৎকালীন ব্যাবস্থাপনা পচিালক .মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রদান করা হয়েছে। শন্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গ্রামীন ব্যাংক কতটুকু অবদান রেখছে তা এই নিবন্ধের প্রথম দিকেই উলে­ করা হয়েছে। যর পরে বোধ করি ব্যাংকটিকে নিয়ে আর বলার কিছু থাকে না। . ইউনুসকে গ্রামীন ব্যাংকে  ব্যাবস্থাপনা পচিালকের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান সংক্রান্ত .ইউনুস কর্তৃক দায়েরকৃত একটি মামলা দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বিগত ১৯.০৩.২০১১ তারিখ এদেশে আগত দক্ষিন মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী রবার্ট ব্লেক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সংগে আলোচনা শেষে তার নিজ দেশে ফিরে যাবার পূর্বে ২২.০৩.২০১১ তারিখ রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত আমেরিকান রিক্রিয়েশন সেন্টারে মার্কিন দুতাবাস কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লেছেন- ’.ইউনুস এবং সরকারের মধ্যে .ইউনুসের অব্যাহতি বিষয়ে একটি সন্তোষজনক আপোষ না লে আগামীতে এদেশে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাঙ্খিত সফর অনিশ্চিত য়ে পড়বে সেই সাথে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে তার মতে-গ্রামীন ব্যাংকের স্বকীয়তা, স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্যেই গ্রামীন ব্যাংক পরিচালনায় . ইউনুসের আবশ্যিক প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে তো রে নিতে হয় বর্তমানে . ইউনুস গ্রামীন ব্যাংকের এমডি পদে না থাকলে ব্যাংকটির ম্বকীয়তা,স্বাধীনতা সবছিু লোপ পাবে এবং তার মৃত্যুর পর ব্যাংকটির অস্তিত্বই থাকবে না। আসলে তার সরকারের স্বকপোলকল্পিত এসব কথার মধ্যে দিয়ে তিনি যে একটি স্বাধীন,সার্বভৌম, গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারকে প্রত্যক্ষভাবে হুমকি প্রদান রে গেলেনÑসেটি বুঝতে ন্যুনতম কোন গবেষনার প্রয়োজন আছে কি? না। অবশ্যই নেই।একজন সাধারন মানুষও তার হুমকিটি অনায়াসে বুঝে যায়। সে প্রেক্ষিতে আপনা আপনি কয়েকটি প্রশ্ন এসে পড়ে।                                                                                      

প্রশ্নঃÑ      

০১. বিদেশের একজন সরকারী প্রতিনিধি অন্য একটি স্বাধীন দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে সে দেশের  সরকার তথা জনগনকে ধরনের কোন হুমকি প্রদানের অধিকার রাখেন কি না?

০২. কোন স্বাধীন দেশের কোন্ সংস্থায় অথবা কোন্ প্রতিষ্ঠানে কোন লোকের প্রয়োজন আছে কি নেই সে সম্পর্কে কোন ব্যাবস্থাপত্র ভিন দেশের কোন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি প্রদান করতে পারেন কি না?

০৩. যদি না পারেন তাহলে এটি কি আন্তর্জাতিক কোন ভয়াবহ-‘অশনি পূর্বাভাষ?

সরকারকে কাল বিলম্ব না রে প্রশ্ন গুলির মর্ম অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে উদ্ধার রে দৃশ্যমান সমাধান নিশ্চিত করতে হবে। না লে গোটা জাতির মনে যে আতঙ্কের সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে তা ক্রমেই ঘনিভূত য়ে সরকারের বিরুদ্ধেই প্রচন্ডভাবে বিষ্ফোরিত হবে। লজ্জা আর ঘৃণায় জাতির মর্যাদা,সম্ভ্রম সব ধুলোয় মিশে যাবেÑযার দায় অন্তিমে সরকারকেই বহন করতে হবে এবং কখনই দায় থেকে সরকারকে মুক্তি দেবে না বা ক্ষমাও করবে না। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের, আমাদের  স্বাধীনতার ঘোরতরভাবে প্রত্যক্ষ বিরোধীতা করেছিল। দেশটি ১৯৭৫ সালে দেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছিল লে অনেকেই মনে রে থাকেন। সেই যুক্তরাষ্ট্রের কোন সরকারী প্রতিনিধি দেশে এসে যখন কোন হুমকি প্রদান করেন তখন জাতির সামনে একমাত্র আতঙ্কিত হওয়া ছাড়া বিকল্প কিছুই ভববার অবকাশ থাকে না। সরকারের কছে জাতি অবশ্যই আতঙ্কের তাৎক্ষনিক সমাধান প্রত্যাশা করে। ১৯৭২ সালেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির ভিত বঙ্গবন্ধু রচনা রে দিয়ে গেছেনÑযার মূল কথাটিই ছিল ÔFreindship to all Malice to none..’-কারও সাথেই আমরা শত্রতা চাই না, সকলের সঙ্গেই বন্ধুত্ব চাই কিন্তু তা তে হবে অবশ্যই পারস্পরিক সম মর্যাদার ভিত্তিতে। কোনভাবেই তা নিজেদের আত্মসম্মানবোধ বিক্রয়ের মাধ্যমে নয়।  

 

 গ্রামীন ব্যাংক এদেশেরই একটি বিশেষায়িত ব্যাংক। মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের কোন ব্যাংক নয়। সে ব্যাংকের তৎকালীন এমডি .ইউনুসকে মার্কিন সরকার কি পূরষ্কার দিয়েছে না দিয়েছে সেটি আমাদের কাছে মোটেই বিবেচ্য বিষয় নয়। বিবেচ্য বিষয় যেটি, সেটি হলোÑতিনি শান্তির পক্ষে কোন কাজ না রেও আন্ত-র্জাতিক নোবেল পূরষ্কারের অর্দ্ধেকটি লাভ রে গর্বের সর্বোচ্চ চুড়ায় আরোহন রে জাতিকেও উদ্ধার করেছেন লে কল্পনা করতে ভলবাসেন এবং পূলক বোধ করেন। কিন্তু যে পূরষ্কারটি প্রাপ্তির নেপথ্যে তার  চাতুর্য এবং প্রতারনাপূর্ণ কর্মকান্ড লুকিয়ে থাকে এবং তা কোন এক সময় জাতির সম্মুখে উন্মোচিত য়ে যায় তখন তিনি নিজে গর্ব বোধ করলে করতেও পারেন অথবা তার গর্বের স্বপক্ষে সাফাইও গাইতে পারেন কিন্তু যেহেতু তিনি বাঙ্গালী জাতির জাতক সেইহেতু দূর্ভাগা বাঙ্গালী জাতিটিকে অসম্মান আর অপমানে আত্মহত্যার পথ খুঁজে নিতে হয়। নিশ্চয়ই জাতিকে এমন অপমান করবার অধিকার বাঙ্গালী জাতি কখনই .ইউনুসকে প্রদান করে নি। ধিক .ইউনুস! শত ধিক তার প্রাপ্ত নোবেল পূরষ্কারকে!! যে পূরষ্কার তার নিজ মর্যাদা বহু পূর্বেই বিসর্জন দিয়েছে সে পূরষ্কার বাঙ্গালী জাতির প্রয়োজন নেই।          

                                                                                                  

 

 

 

 

 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান