বিচরণ
চন্দ্র
সূর্য দুটোই পৃথিবীমুখী হলেও
পালা
বদলে আসে,পালা বদলে যায়,
শুধু তুমিই যেন যখন-তখন আবির্ভাব হও
আসা-যাওয়া করো মুক্ত হাওয়ার মতো
আর আমি তোমার অবাধ বিচরণে
স্বপ্নডিঙায় দোলতে থাকি;
ঢেউয়ে ঢেউয়ে বইতে থাকি,
তোমাকে সঙ্গী করে পারি দিই সাতসমুদ্র
বসতি গড়ি লোকালয় ছেড়ে নির্জনদ্বীপে।
আবেশের
শাদা-মেঘ নিমিষে কেটে যায়
কেটে
যায় স্বপ্নঘোর,
আমি
আকুলচিত্তে তোমায় খুঁজি
কোথাও
তোমার সাড়া নেই
কিছুতেই
তোমার বার্তা নেই
দাঁড়িয়ে
আছো পরের মতো
দূর
থেকেও বহুদূর!
বসন্ত-বর্ষা
দুটোই ঋতুচক্রে ঘুরলেও
বছর
ঘিরে আসে
বছর
ঘুরেই ফিরে যায়
শুধু
তুমিই যেন যখন-তখন বিস্ফোরিত হও
ভিসুভিয়াসের
আগ্নেয়গিরির মতো
ফের
সময়ের মতো সর্বদাই বিরাজমান!
উদাস
মনে দূরদিগন্তে তাকাই
তোমার
প্রতিচ্ছবিই দেখি আকাশের গায়,
শূন্যে
ওড়া সোনালী চিল
আড়নয়নে
চেয়েচেয়ে দেখে যায়
তোমার
বিরহ নিয়ে বসে আছি বৃক্ষছায়ায়!
দর্পণ
প্রেম-প্রণয়ে
প্রবাহিত নদী
অনড়
পাহাড়
উত্তাল রত্নাকর,
ইন্দু প্রত্যাগমন করে
দিয়ে যায় ফিরে আসার সাক্ষর।
বোধ-ভরসায়
চলমান ধরিত্রী
অটুট
সম্পর্ক
অপরূপ
অভয়ারণ্য,
অরুণের
আগমনে প্রসন্ন দিনমান
ক্রমশ
বৃদ্ধি পায় রূপলাবণ্য।
বিয়োগ-নিয়োগে
বিশ্বচরাচর
নিয়ত
চড়াই-উতরাই
অভিনবে
অভিযাত্রা,
কালের
আবর্তে কালাতিপাত
আনতচোখে
খুঁজি ভিন্নমাত্রা।
আশা-আকাঙ্ক্ষায়
জীবন
অমল
আত্মা
আবেগপূর্ণ
মন,
নিমগ্নতায়
নিরুক্তির পথ
জীবনানন্দে
আজীবন রণ।
অনির্ণীত যোজন
বিস্মিত
আঁখি
ভারাক্রান্ত
মন
রাগ-বিরাগে জট পাকে
মেঘাচ্ছন্ন গগন।
কার
খেয়ালে
হাল
বেহালে
দিক-বেদিক
অভিযাত্রা
চিত্তাকর্ষণ
আড়ালে।
সুদূরপ্রসারী
দৃষ্টি
অনির্ণীত
যোজন
যোগবিয়োগে
পথের বাঁকে
হারায়
কত সুজন।
কার
আরাধনায়
ডুবাই
যমুনায়
কিনারে
এসে রত্ন খুঁজি
মুঠোভরতি
ধুলিকণায়।
পরিমিত
চাহিদা
অপূরণীয়
সাধ
সুন্দরের
পথে হেঁটে চলি
দুনিয়া
সাধে বাধ!
একপশলা বর্ষণ
বন্ধ
দুয়ারে হঠাৎ কট্ কট্ শব্দ,
কার
আত্মচেড়া ডাক যেন এ-হৃদয়ে কাঁপন তুলে
কে যেন ডাকে মিহি সুরে___
যার অপেক্ষায় কতকাল ঘুমঘোরে ঘূর্ণায়মান!
এলে কি সেই তুমি?
আমার ভাঙা হৃদয়ে হৃদয় লাগাতে
নাকি এলে খেলার চলে মন নিয়ে খেলতে!
আমি তো শ'খণ্ডে
খণ্ডিত পারদ ওঠা এক আয়না,
আমাকে জুড়াবার প্রয়াসে প্রকৃতিও হার মেনেছে
তবে কেন এই অসময়-অবেলায় কড়া নাড়ছো?
নাড়িয়ে যাচ্ছো আমার ভাবনার ভিত!
আমি জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক যোদ্ধা
যার নেই কোন মনোবল
নেই চেতনার সুতীক্ষ্ণ বল্লম,
এই তোমাকে কি দেবো বলো!
সময়ের দূর্বিপাকে সবকিছুই যে বিলীন!
যখন সমস্ত লেনাদেনা চুকিয়ে দিয়ে
অন্তঃকক্ষ বন্ধ করে দিয়েছি___
সিলগালা করেছি সময়ের সংকীর্ণতায়,
তখন তুমি এলে!
বড্ড দেরি করেই যেন এলে!
তোমার এই আচমকা উপস্থিতি আমাকে আন্দোলিত
করলেও,
ভাবিয়ে তুলেছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সাতটি বিস্ময়ের মতো!
অথচ একদিন তোমার খুঁজেই ফেরারি ছিলাম___
ছিলাম তোমার ধ্যানে ধ্যানমগ্ন
আর তুমি ছিলে কারো মনকুঞ্জে মনোহরিণী,
হুকুমের তাঁবেদার___
যখন রাবণপুরীর শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন পেছনে ফেলেনতুন করে
নবরূপে বাঁচতে এলে,
আমার নিষ্প্রাণ দেহে প্রাণ এলো!
বয়ে গেলো একপশলা বর্ষণ,
হেসে উঠলো গুমোটে পৃথিবী
খেয়ালের পশরা ধুলোয় লুটে,
মনে বাজে বিউগলের সুর!