সময় বয়ে যাচ্ছে। খুব দ্রুত গতিতে বয়ে যাচ্ছে। জীবনও তার খোঁড়া পা নিয়ে বহু কষ্টে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যাচ্ছে। আর আমিও দিন দিন এগুচ্ছি তোমার দিকে শুধু আমার খোঁড়া পা নয়, আমার সমস্ত প্রতিবন্ধকতা নিয়ে

না, আমার এসব জড়তা নিয়ে আমার কোনও মানসিক জড়তা নেই। কারণ তুমি নিজেই পরিপূর্ণ, আমার অপূর্ণতায় তোমার ক্ষতির পরিমান হিসেবের গণ্ডি পেরোয় না। আর তাছাড়া তুমি খুব ভালভাবেই জানো যে পূর্ণতা অপূর্ণতার হিসেব আমার জীবনে কতটা ভয়াবহ!!

পৃথিবীর প্রতিটা সৃষ্টি জন্মলগ্ন থেকে সম্পূর্ণ বা অসম্পূর্ণ যাই হোক না কেন প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে সে পূর্ণতার দিকেই এগোয়। কিন্তু কখনো এমন হতে শুনেছ সব রকম সম্পূর্ণতা নিয়েও কেউ সময়ের সাথে সাথে অপূর্ণতার দিকে এগিয়ে চলে!!!

না শোন নি; তবে দেখেছো! খুব কাছ থেকে দেখেছো!! এখানেই তোমার সব চেয়ে বেশি দুর্ভাগ্য! সমস্ত কিছু নিজের জানার পর যখন কেউ হঠাৎ জানতে পারে যে কিছুই তার নয় তখন সে এমন কাউকে খোঁজে যে তার জানাটা মিথ্যে করে দিতে  পারে। কারণ এই অদ্ভুত জানাটা তার সহ্য হতে চায় না! আর এ কারণেই আমাকে তোমার সব ফিরিয়ে দিতে হবে তোমার পুরোটা দিয়ে!

আমার প্রতিটা হারিয়ে যাওয়ায় আমি তোমাকে খুঁজেছি! হ্যাঁ তাই!! আমি তোমাকে খুঁজেছি ঠিক যেভাবে কোনও মাতৃহীন সন্তান তার মাকে খুঁজে বেড়ায়, কখনো তার চেয়েও বেশি! কেননা কোনও মাতৃহীন সন্তান যেভাবে তার বাবাকে পায় আমি সেভাবে পাই নি। আমি মাতৃহীন হলেও আমার বাবা বিপত্নীক ছিল না; তাকে সংসারের সব হিসেব মিটিয়ে আমার কাছে আসতে হত। একজন ব্যস্ত বাবার সন্তানের মত আমি দরজায় দাঁড়িয়ে রাত জেগে অপেক্ষা করেছি, বাবার জন্য নয়! তোমার জন্য...

মানুষ যা অর্জন করতে পারে না তা নিয়তি বলে মেনে নেয়। কিন্তু আমি আমার জন্মসূত্রে প্রাপ্য পাওয়া গুলো কে অপ্রাপ্য বলে নিয়তি মেনেছিলাম। শুধু তোমাকে না পাওয়ায় আমি নিয়তিকে ভাগ বসাতে দি নি। ওটুকু শুধুই আমার একান্ত! তাই আমার পৃথিবীর কারো ওপর কোনও অভিযোগ না থাকলেও তোমার ওপর আছে। সেই ছোটো থেকে যখন মাকে ছেড়ে রাতে একা ঘুমুতে ভয় পেতাম তখন থেকে আমি তোমায় খুঁজেছি! এ কোনও প্রেমিকার চাওয়া নয়! এ শুধু বেঁচে থাকার আকুতি যা তুমি অন্ধত্বের ভারে কখনো তাকিয়ে দেখনি!

আর দেখতে হবে না তোমার!! তুমি চোখ বুজে বসে থাক। আমি আসছি এক পা দুপা করে। এ জীবনে তুমি আমাকে ফাঁকি দিয়েছো। কিন্তু...