সমকালের দু'জনসহ ছয় গণমাধ্যমকর্মী ও দুটি টেলিভিশন প্রামাণ্য অনুষ্ঠান এ বছর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে মাইডাস সেন্টারের মেঘমালা কনফারেন্স রুমে এক অনুষ্ঠানে 'অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮' শীর্ষক এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রিন্ট মিডিয়া জাতীয় ক্যাটাগরিতে দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি রাজীব নূর ও সহসম্পাদক জাহিদুর রহমান এবং দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার আনোয়ার হোসেন, প্রিন্ট মিডিয়া আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে খুলনার দৈনিক প্রবাহর সিনিয়র রিপোর্টার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান পুরস্কার জিতেছেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়া প্রতিবেদন ক্যাটাগরিতে একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মুফতি পারভেজ নাদির রেজা এবং মাছরাঙা টেলিভিশনের পাবনা ব্যুরোর সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল মির্জা পুরস্কার পেয়েছেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়া প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ক্যাটাগরিতে যমুনা টেলিভিশনের '৩৬০ ডিগ্রি' ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের 'তালাশ' পুরস্কার জিতেছে। বিজয়ী সাংবাদিকদের প্রত্যেককে সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট ও এক লাখ ২৫ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর নিয়ে 'দখল হয়ে যাচ্ছে নতুন বাংলাদেশ', 'উজাড় হয়েছে বন, অরক্ষিত উপকূল' এবং 'ডাঙায় ক্ষুধা, জলে দস্যু' শিরোনামে তিনটি প্রতিবেদনের জন্য সমকালের রাজীব নূর ও জাহিদুর রহমান পুরস্কার জেতেন।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।
অনুষ্ঠানে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা ডিজিটাল আইনের তীব্র সমালোচনা করেন। তারা বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রধান বাধা এখন ডিজিটাল আইন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গওহর রিজভী নির্বাচনের পর ডিজিটাল আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় আইন প্রয়োগে ত্রুটি ধরা পড়ায় পার্বত্য ভূমি আইনে পাঁচবার সংশোধনী আনা হয়েছে। নির্বাচনের পর গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের সঙ্গে আরও কথা বলে ডিজিটাল আইনেরও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে।
গওহর রিজভী বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হলো সভ্যতার ভিত্তি। মতপ্রকাশ ছাড়া সভ্য সমাজ তৈরি হতে পারে না। মতপ্রকাশকে কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণও করা যাবে না। মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে একটি বাধা তৈরি হলে গোটা ব্যবস্থাটাই ধ্বংস হয়ে যাবে। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, প্রকৃত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা আসলে আইন দিয়ে ঠেকানো যায় না। যেখানে দুর্নীতি থাকে, সেখানেই দারিদ্র্য থাকে। দুর্নীতিমুক্ত না করে কোনো দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা যায় না।
সুলতানা কামাল বলেন, ডিজিটাল আইন তৈরি করে একটি ভীতির পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে এ আইনের কারণে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ডিজিটাল আইন পরিবর্তনের দাবি জানান।
এর আগে বক্তব্য দেন প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, দৈনিক প্রথম আলোর ফিচার সম্পাদক সুমনা শারমিন, ডিবিসি চ্যানেলের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু ও সংবাদ সংস্থা ইউএনবির নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ। তারা 'অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮ '-এর বিচারক ছিলেন।
সুত্র: দৈনিক সমকাল ।