অরূপ কিষানের কবিতাগুচ্ছ
অরূপ কিষানের কবিতাগুচ্ছ
উড়ো-প্রেম

 

দুটো ইগলের উড়ে-উড়ে প্রেম দেখে

মনে পড়ে তোমাদের বিছানার কথা--

বহুদিন হয়, চাদর তুলে দেখো না

তোষকের 'পরে প্রেমের কার্বনকপি!

অথচ মুখে বলো,  রাতের ডিশগুলো

ডুবা-ডুবা তোমাদের ঝোলের রোমাঞ্চে

 

 

 

শিকল

 

কানদুল, নাকফুলের জিঞ্জির ছোটবেলায় পরানো হয়

সুন্দর যদি অনুগত হয় পেয়ে যায় শিরোপা।

লম্বা চুল পছন্দসই, বিশেষত কটি ছাড়িয়ে

এটা যেন সনদ- নম্রতার!

অথচ বেণীর গাঁথুনি শিকলের কথাই মনে করায়!

 

শিকল পুরুষেরও আছে- সেটা পরে নিজে নিজে!

 

 

 

লাল বাক্স

 

একটি লাল বাক্স আপন মনে হয়

আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে, কফি খেতেও

ছানি-পড়া চোখ দেখে: খবরের খোঁজে

এখনো অনেক ছুটে চলছে মানুষ।

দেহ থাকলেও, বুকের ভেতর খালি

পাশ কেটে যায় তিন ইচ্ছের বর!

অচল পয়সা মুখের ভেতর ফেলি

 

 

 

ধুন্দল

 

তালশাঁসের মতো পড়ে থাকে গোপন

ভ্রুক্ষেপের বাইরে। তাকে খুঁজে পেয়ে

কুঠার পেছনে হেলতেই বন্ধক দিয়ে দিই!

মাথা তুলে দেখো ঝুলে আছে ধুন্দল,

বন্ধকি-বস্তু জালিবিন্যাসে!

উপেক্ষার নাগাল এনে দেয় তাকে ব্যাপক সুনাম।

 

সময় গিয়ে যৌবনের

ছুরির ধার পরখ হয় না হেঁশেলে ঢুকে

অসময়ের সাধনে ঠাঁই হয় স্নানঘরে

বুক-কেটে তুলে আনি ভেলভেট-বিরল...

 

 

 

ভনভন

 

এই দেশে শীত এলে শতশত পতঙ্গ উড়ে আসে। অলিতে গলিতে, মাঠে ময়দানে ছড়িয়ে পড়ে - প্রকাশ্যে

মগজ খেয়ে ফেলার মিশন নিয়ে। জননীর চেয়ে ধর্মের মা এদের কাছে অধিক পূজনীয়। ফাঁপা মাথার হাজার পতঙ্গ মাথা বামে কাত করে, ডানেও... পৌনঃপুনিক ঢঙে রূপকথার নির্যাস করে তোলে মূর্ত! দিনরাত কাবার করে মতলবে ভনভন করে...

 

-দ্বীপে সব মৌসুমে কিছু পতঙ্গ দেখা যায়। যার যার মাথার চিলেকোঠায় তারা ধ্যানে মগ্ন হয়। রূপকথা তাদের কাছে মূল গাছের শাখা-প্রশাখা। অহমবোধের হুল ফুটিয়ে দিলে তারা - বুঝা হয় ভুল! তাদের আরতি নিজের সামনে - তাতে যদি জীবন হয়ে ওঠে ধুপ তবে তাই হোক। দিনরাত কাবার করে নির্মাণে ভনভন করে...

 

মৌমাছির হুলের শক্তি নয় এদের অজানা। একবার হুল ফোটাতেই গুমাছি সংখ্যার জোর দেখায়, মৌমাছিকে ঠেসে ধরে কোণে...


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান