অসিত কর্মকারের গুচ্ছকবিতা
অসিত কর্মকারের গুচ্ছকবিতা

বিস্ময়কর পাঠক

মঙ্গল বা অমঙ্গলে
যেদিকেই চোখ ফেরাও না ক্যানো,
ওদের কাছে
অন্তঃসারশূন্য নির্যাসহীন মুক্তগদ্যই যেন অনুপম;
যেন কবিতার শব্দবিন্যাসেও প্রীত তারা,
পরতে পরতে-ও মন্ত্রমুগ্ধ
তৈছন-ই পাঠকেরা।

এদিকে চোখ ফেরাও,
নিজ চোখে দ্যাখো সূর্যের মত সত্য 'বালিকা আশ্রম'
ঢং ঢং করে আজও বাজে 'পাগলা ঘণ্টি'
আজও হ্রেষাধ্বনিতে চলে 'উলঙ্গ রাজা'
এখনও স্বপ্ন দেখায় 'বনলতা সেন'
যদিও নিজের ডানা খুলে দিচ্ছে 'ভবিষ্য'
হাতে পায়নি অনেকেই কিশোরের 'ছাড়পত্র' -
তরুণেরা এখনও চায় '- কৈফিয়ত'।

অথচ এদিকে নজরই নেই!

লক্ষ্মীমন্ত অঞ্জন

মোদ্দা কথাটা কি জানো অঞ্জন,
তোমার ঐ চৈতফাটা লক্ষ্মীমন্ত হাত দুটো
মসৃণ করবো বলেই কিন্তু তেল ডলাচ্ছি
তাই বলে আবার সেলফোনে নালিশ কোরোনা,
যে- দিনরাত গায়ে গতরে খাটাচ্ছি।

তখন তো আবার না বুঝেই
তোমার চৌকিদার-কণ্ঠধারী নির্বিবাদী বাবা-মা,
সারা-গুষ্ঠিসমেত তেড়েফুঁড়ে এসেই তো;
নির্যাতন মামলার হুমকি দিবে,
কি গো ফোন-টোনের মতলব আছে নাকি?

এখন তো আবার
উপকারের কোন বাড়ি ধরে আন ইয়ে মারি,
এমনই অবস্থা চলছে দিকে দিকে!

আয় তোরা আয়

এই করোনাকালে শুধু একবার শুধু একবার
হাতকাটা টিশার্টের বুকে-পিঠে করোনা পজেটিভ লিখে
শিশ্নধারীদের হাঁক ছেড়ে ডাক বোন-
আয় তোরা আয় কে কোথায়,
আয় যত কামাতুর পুরুষ,দেখা তো পৌরুষ,
জীর্ণবিদীর্ণ কর এ দেহ,
শুধু হাতকাটা গেঞ্জির বুকে-পিঠে
করোনা পজেটিভ লিখে একবার হাঁক ছেড়ে বল বোন
পজেটিভ শরীরেই ধর্ষিতা হতে চাই
আয় তোরা কে কোথায় আয়।

এবার নত হও

নিখিল বিশ্বজুড়ে জোড়া বিশ আজ
সৌরমুকুটসঞ্জাত বিষে বিষে পয়মাল,যৌবন তো গত,
তবু কামনা করি বিষমুক্ত থাক সব লাল।

যদি বেঁচেবর্তে থাকো ঘৃণা-বেসো তারে;
যারা মানুষে মানুষে বিভাজন করে ধর্মের অজুহাতে,
এবারে বেশি বেশি বেসো-ভালো সর্বপ্রাণেরে।

নদীবুকে মেলে ধরো দেহ; মা-জ্ঞানে
জেনো বৃক্ষ-আদিপ্রাণ,নত হবে প্রকৃতির কাছে,নাহলে
এবার বিপর্যস্ত হবে প্রকৃতিসঞ্জাত রোষে।

সুখজ্বালা

এক জীবনেই অনেক জ্বালা
এর ভিতরেও আছে অনেক জ্বালাময়ী সুখ
তবু সেসব কথা যায় না মুখে বলা।

বাবার শৌর্য মায়ের জঠরবাস
মায়ের জঠর নিখিল-ভুবন নিরাপদ আবাস
সেই ভুবনে বেড়ে ওঠে নতুন সব প্রাণ।

ভূমিষ্ঠজন সামান্য কয় প্রাণ;
ভুবন জুড়েই বাবা-মায়ের বাড়ায় যে সম্মান
সুখজ্বালা মুখে বলে সাঙ্গ করা যায়?

শ্বাপদসংকুল


সে এক অদ্ভুত সকাল
যতদূর মনে পড়ে আলোআঁধারের খেলা ছিল বেশ,
বৈদ্যবাড়ির বিপরীতে সাধুর,মাঝে সরু রাস্তা,
ওখানেই দেখি হন্তদন্ত হিতাহিতজ্ঞান নেই-
তবু কি যেন কি খুঁজছিল কেউ।

জানার ব্যগ্রতায় নিজেকে আড়াল করে দেখি
শরীর কাঁপছিল,কি যেন কি হারাবার ভয়ও ছিল তার
তখন বুঝে গেছি সে ছিল মে' !

পরনে আঁটাসাঁটা জিন্স ছিল,
সাধুকে কি যেন কি সুধা'লো,আড়ালে দাঁড়িয়ে যা বুঝি,
শ্বাপদসংকুলে আশ্রয়-ই চাইছিল সে।

অথচ সেখানে হরদম
ভায়াগ্রা-তোড়ে কুমারীত্ব নাশের খেলা চলে,
আখড়ার সবটা বৈদ্য তো জানেই!


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান