গল্পকার :সৈয়দ মাসুদ রাজা
দুর্ভাগ্য আমাদের, কেন যে জন্মটা এদেশে হলো- তিহানের এই কথাটি শেষ হতে না হতেই তমাল কথাটি ধরে বসল-
কি বললি তুই!
হ্যাঁ, ঠিকই বলেছি, কি আছে এখানে দেখার ?
কি নেই দেখার? অনেক কিছুই আছে। শুধু দেখার মত চোখ দু'টো আমাদের নেই।
রাসান ক্লাবে বসে দু’জনের এই অকাট্য যুক্তিতর্কগুলো যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই আবির এসে হাজির। আবিরের অপেক্ষায়ই বসা তিহান-তমালসহ সংগঠনের সব সদস্যবৃন্দ। এদের মধ্যে আবির ছাড়া সবাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। শুধুমাত্র দু’জন- রকিব ও সামছু একটা এনজিও'তে চাকরি করে। আবির স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করে। দু’দিন পরে ঈদ। এই ঈদের ছুটিতে বন্ধুরা সব একত্রিত হয়েছে এই রাসান ক্লাবে। ক্লাবটির জন্ম এদের হাতেই। তাই তারা নিজেরা স্ব-স্ব কাজে ব্যস্ত থাকলেও বিভিন্ন ঈদ-পার্বনে একত্রিত হওয়ার একটা রেওয়াজ চালু রেখেছে জন্মলগ্ন থেকেই। আর এ ব্যাপারে দক্ষ সংগঠকের ভূমিকা পালন করে আসছে আবির।
এবার ঈদের ছুটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সবার সিদ্ধান্ত- বাইরে ঘুরতে যাবে। ঈদের পরদিন কোথায় বেড়াতে যাওয়া যায়- এ নিয়েই আজ তাদের আলোচনা।
একটু পর এসে যোগ দিল নিনা ও চম্পা। নিনা মেডিকেলে পড়ছে থার্ড ইয়ারে, আর চম্পা অনার্স করছে আনন্দ মোহনে। একুশজনের এ সংগঠনে দু’জন মাত্র নারী সদস্য, যাদের আগ্রহেই এবার অনেকটা দূরে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রাসানের।
সবার সক্রিয় অংশগ্রহণে দীর্ঘ দু’ঘন্টা ধরে চলল মিটিং।
তমাল মনোবিজ্ঞানের ছাত্র, সুতরাং তার প্রস্তাব হলো- সংগঠনের পক্ষ থেকে এবার ঢাকঢোল পিটিয়ে ভ্রমণযাত্রা হওয়া দরকার। মানুষ যেহেতু অত্যন্ত কম সময় নিয়ে এই দুনিয়াতে আসে, কাজেই তার চারপাশটাকে ভালো করে দেখা উচিৎ। দেহের খাদ্যের সাথে মনের খাদ্য খুবই জরুরী। তার ধারনা- মানুষের শরীরে ‘মন’ নামক যে অস্পৃশ্য উপাদানটি আছে, সেটা সতেজ থাকলে মানুষ দীর্ঘায়ু হয়। এ প্রসঙ্গে সে নাতিদীর্ঘ একটি বক্তব্য দিয়ে কর্ণঝোরা পাহাড়ে যাবার প্রস্তাব করলো। তার প্রস্তাবে কেউ অমত করলো না।
স্থান নির্বাচন শেষ হলো, শুরু হলো দায়িত্ব বন্টন। আবির একে একে সবাইকে দায়িত্ব ভাগ করে দিলেন এবং সাথে এবারও ঘোষণা দিলেন, যার মধ্যে যে ট্যালেন্ট আছে তা উপস্থাপন করতে হবে এবং এদের মধ্যে যারটা সবচেয়ে ভাল হবে তার জন্য সে নিজ থেকে পুরস্কৃত করবে। এটা মনিটরের দায়িত্ব পড়ল নিনার উপর। নিনা মেডিকেলের ছাত্রী হওয়ায় মানুষের শরীর পোস্টমর্টেমের মত প্রত্যেকটা বিষয়েরই চুলচেরা বিশ্লেষণ খুব ভালো করেই রপ্ত করেছে। এ বিষয়টা বন্ধুরা সবাই জানে, তাই দায়িত্বটা বরাবর তারই থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হলো না।
ঘুম আসতে আসতে চম্পার রাত ১২টা বাজলো। ছোটবেলা থেকে এ মেয়েটি সাজগোছ খুব পছন্দ করে। মেয়েদের যত পড়াশুনা এগোতে থাকে ততই মেকাপ করার প্রবণতা কমতে থাকে। কিন্তু চম্পা ঠিক তার উল্টো। অনার্স পড়ছে অথচ মেকাপের দিক থেকে অনেকটা স্কুলগামী ছাত্রীদের মত। রাসান ক্লাবে ‘চম্পা-তিহান জুটি’র বিষয়টি বন্ধুরা সবাই জানে। প্রথমে তারা ভালো বন্ধু ছিল। বন্ধুত্ব থেকে কখন যে একে অপরের এত কাছাকাছি চলে এসেছে ওরা নিজেরাও টের পায়নি।
আসলে মানুষের ভালবাসা এমনই হয়। মানুষের মনের দুয়ার সব সময়ই খোলা থাকে। অজান্তেই কখন যে প্রিয় মানুষটি কিভাবে সেখানে প্রবেশ করে কেউ তা বুঝতে পারে না। অথচ সেই প্রিয় মানুষটি সেই ঘর থেকে কোন কারণে যখন বেরিয়ে যায়, তখন পুরো ‘হৃদয় নামক ঘর’টাকে শূন্য করেই চলে যায়।
তিহান-চম্পার জুটিটা হাঁটিহাঁটি পা-পা করে ১০ বছর পূর্ণ হলো। এই দশ বছর পূর্তিতে তাদের নিজেদের মধ্যে একটা প্ল্যান করেছে, যার বাস্তবায়ন হবে আগামীকালের ভ্রমণে। আর তাই কি রংয়ের টিপ পরবে, কোন শাড়িটা পরবে, শাড়ি পরবে না থ্রি-পিছ পরবে ইত্যাদি অনেকগুলো আলোচনা করতে করতেই রাত ১২টা।
ক্লাবের অন্যতম সদস্য রকিবুল আলমের রাতটিও অনেকটা নির্ঘুম কাটে। সাহিত্যিক মানুষ। আজ তার পুরো ডায়রিটা ঘেঁটে ২টি কবিতা বাছাই করেছে আগামীকালের জন্য। আবৃত্তি করে সে সবাইকে মুগ্ধ করবেই- এ ধরনের একটা ছোটখাট প্রতিজ্ঞা সে মনে মনে করে ফেলেছে। আর তাই শোবার আগে গলাটা গরম পানি দিয়ে গারগিলিং করে পরিষ্কার করে অনেকবার আয়নার সামমে দাঁড়িয়ে কবিতা দু'টো আবৃত্তি করে। ১৩তম বার আবৃত্তির সময় মা বিষয়টি লক্ষ্য করে ওকে অনেকটা উৎসাহও দিয়েছে। ভোরবেলা তাকে ডেকে দেয়ার পুনঃপুনঃ অনুরোধ মায়ের কাছে রেখে ঘুমাতে গেল, কিন্তু ঘুম আসছে না। বিভিন্ন রকম ভাবনা ঘুরপাক খায় তার মাথায়। হঠাৎই মনে হলো- নতুন কবিতার প্রেক্ষাপট এবং সাথে সাথে লাইট অন করে লিখতে বসলো সে।
অনেক রাত করে বাড়ি ফিরলো আবির। প্রোগ্রামের প্রধান সমন্বয়ক সে। তাই গাড়ি থেকে শুরু করে খাবার-দাবার, বাবুর্চি এবং কে কে কোথা থেকে উঠবে তার সমস্ত খুটিনাটি ঠিকঠাক করতে করতেই এই বিলম্ব। একজন সফল সংগঠকের যতগুলো গুণাবলী থাকা দরকার তার পুরোটাই আবিরের মাঝে আছে। আর এজন্যই অন্য সব সদস্যদের ভরসার একটা জায়গার নাম ‘আবির’।
আজ ৭ নভেম্বর, সকাল ৭টা। একটা গাড়ি এসে দাঁড়ালো রাসান চত্বরে। উপস্থিত সবার মাঝে যেন ঈদের আমেজ। যার যার মত সবাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। ঠিক ৭:৩০ মিঃ গাড়ি ছাড়লো। পথে নির্দিষ্ট স্থান থেকে আরও দু’জন সদস্য- সামছু ও আজিজ উঠল। মেঘমুক্ত আকাশ, হালকা-হালকা ঝিরঝিরে বাতাস। গাড়ি চলছে দ্রুত গতিতে, গন্তব্য- কর্ণঝোরা পাহাড়। গাড়িতে সবাই আনন্দ-ফূর্ত্তি করছে। একটু পরপর তিহান ‘চুটকি’ বলে সবাইকে মাতিয়ে রাখছে। ঘন্টাখানেক গাড়িটি চলার পর হঠাৎই থেমে যায়। ড্রাইভার বলে- ভাইজানরা, বিরাট জ্যাম। থেমে থাকা আরেকটা গাড়ির হেলপারকে কারণ জিজ্ঞেস করে এ জ্যামের সঠিক কোন উত্তর পায় না। একে একে গাড়ী থেকে প্রায় সবাই নামে। জ্যামটি লম্বায় প্রায় ১ কি.মি. হবে। ঠিক কি কারণে জ্যাম, এটা কেউই বলতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যে সঠিক কারণটি জানবে তারও উপায় নেই।
আবির বসে বসে ভাবে- ডিজিটাল বাংলাদেশে ‘রোড এন্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি’ বলে একটা কর্তৃপক্ষ আছে, যারা এই বিভাগের নিয়ন্ত্রণটা করে থাকে। তাদের সেবার মানটা যদি আরও উন্নত হতো, তাহলে এদেশে লক্ষ লক্ষ শ্রমঘন্টা নষ্ট হতো না। তথ্য পাওয়ার অধিকার ছাড়াই এদেশে তথ্য অধিকার আইন পাশ হয়। মনে মনে নিজের দূর্ভাগ্য ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করতে করতেই জ্যাম একটু একটু করে ছাড়তে লাগলো।
প্রায় দুইঘন্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার পর আবারও যাত্রা শুরু হলো। গাড়ি চলছে দ্রুত গতিতেই, প্রায় ৪ ঘন্টার পথ। ড্রাইভার জ্যামের কারণে নষ্ট হওয়া সময়টা কভার করার জন্য চেষ্টা করছে।
কর্ণঝোরা পাহাড় আর মাত্র আধঘন্টার পথ। সবার মধ্যেই উৎসাহ-উদ্দীপনা তুঙ্গে। গাড়ি যাচ্ছে, রাস্তাটা অনেকটাই ফাঁকা। পাহাড়ি পথ, মাঝে মাঝে পর্যটকদের দু’একটা গাড়ি চোখে পড়ছে। ধুধু রাস্তা, আশেপাশে বাড়িঘর খুব একটা চোখেপড়ছে না। চারপাশে সবুজের সমারোহ। মন ভাল করার জন্য এ জায়গাটার তুলনা হয না। আবির ড্রাইভারের পাশের সিটেই বসা। মুগ্ধ হয়ে প্রকৃতির রূপ লাবণ্য দেখছে। ভাবছে এত সুন্দর পাহাড়ি জায়গায় মানুষরা সমতলের মানুষের তুলনায় এত হিংস্র হয় কিভাবে? প্রকৃতি তো মানুষের সবচেয়ে বড় শিক্ষক। তাদের হৃদয় পাহাড়ের মতই বিশালতায় পরিপূর্ণ হওয়ার কথা।
এটা বোধহয় প্রকৃতিরই খেয়াল । প্রকৃতির এই খেয়ালের কাছে আমরা মানুষরা অনেকটাই অসহায়।
হঠাৎ ড্রাইভার বললো- ভাইজান, ঐযে সামনে দেখেন একটা লোক হাত নেড়ে গাড়ী থামাতে বলছে। কি করবো, থামাবো?
গাড়িতে সবার হই-হুল্লোড় তখন অনেকটাই স্তিমিত। বিভিন্ন জন সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র গোছাচ্ছে। আবির কি যেন ভেবে বলল- দরকার নেই। এই অঞ্চলে ছিনতাইকারীরা অনেক সময এই প্রক্রিয়াটা ব্যবহার করে।
ক্ষণে গাড়িটা প্রায় লোকটার কাছাকাছি। বয়স- ষাটের কোঠায়। পোষাক দেখে মনে হচ্ছে নিু মধ্যবিত্ত গোছের। পাশেই একটা সিএনজি দাঁড়ানো। দেখতে দেখতে লোকটিকে ক্রস করার সময় রকিবুল আলম বললো-
আবির, লোকটি মনে হচ্ছে আসলেই বিপদগ্রস্ত। একটু দেখে গেলে হতো না? আমাদের তো আর অফিস টাইম পার হচ্ছে না। মানুষের বিপদে মানুষই তো সবচেয়ে ভাল উপায়।
আবির সাথে সাথে ড্রাইভারকে গাড়ী থামাতে বললো।
গাড়িটা একটু পিছিয়ে লোকটার কাছে আসতেই সিএনজি’র ভেতর থেকে একটা কাতরানোর শব্দ শোনা যায়। আবির মনে মনে দ্বিধায় পড়ে গেল। আহত অবস্থায় সেখানে কেই নেই তো? ততক্ষণে লোকটা গাড়ির কাছে চলে এসেছে। তার চোখেমুখে প্রানান্ত আকুতি। সিএনজিতে তার একমাত্র মেয়েটা প্রসব বেদনায় অস্থির। কি করবে ঠিক ভেবে পাচ্ছে না। সাথে অন্য কেউ নেই। মেয়ে-জামাই বিদেশে। সিএনজিটা হঠাৎই বিকল হওয়ায় সে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। শত চেষ্টা করেও কোন গাড়িকে দাঁড় করাতে পারেনি, তাই আবির গাড়ি দাঁড় করানোতে সে এত বেশী কৃতজ্ঞ তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছে না-- এরকম একটা অভিব্যক্তি তার পুরো অবয়ব জুড়েই।
আসলে কারো চোখের দিকে তাকালেই তার অনুভূতিগুলো বুঝা যায়।
সবজেনে আবির সবাইকে গাড়ি থেকে নামতে বললেন। নিনাকে বিষয়টি বলার সাথে সাথে নিনা গিয়ে যা দেখে, তাতে মেয়েটার অবস্থা খুব শোচনীয়। গাড়িটাকে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে যার কাছে যে যে কাপড় আছে তা বের করে পরষ্পর গিট দিয়ে পুরো গাড়িটাকে বৃত্তাকারে ঘিরে ফেললো, বৃত্তের বাহিরমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে খুঁটি হিসেবে কাজ করলো সহযাত্রীদের কয়েকজন। মেয়েটিকে ধরাধরি করে গাড়িতে শোয়ালো।
হরেক রকমের কাপড়ের বেষ্ঠনীতে একটি নিষ্পাপ শিশুকে পৃথিবীতে আনার প্রানান্ত চেষ্টায় রত হলো নিনা ও চম্পা।
সবাই রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছে। ঐদিকে মেয়েটির বাবা আহত পাখির মত ছটফট করছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে- প্রসব বেদনায় কাতর মেয়েটির প্রত্যেকটি চিৎকার যেন তার বুকে এসে বিধছে।
প্রায় আধাঘন্টা পর এই মোবাইল ক্লিনিক থেকে একটি ছোট চিৎকার চারপাশটাকে মুহুর্তেই আনন্দে ভরে দিল। রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষার অবসান হলো। রকিবুল আলম নিজের লেখা কবিতা ভুলে গিয়ে সুকান্তের একটা কবিতা চিৎকার করে বললেন-
‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান,
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ মৃত আর ধ্বংসস্কুপ পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের
চলে যাবো, তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপনে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল
এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ঘর্মাক্ত অবস্থায় ঘাম মুছতে মুছতে নিনা বেরিয়ে এসে বলল- স্থানীয় হাসপাতাল কতদূর?
বৃদ্ধটি বললো- প্রায় আধা ঘন্টার পথ।
নিনা বললো- আপনার মেয়েটিকে এখনই হাসপাতালে নিতে হবে। নইলে মা-বাচ্চা দু’জনেরই সমস্যা হতে পারে।
যে কোন আকষ্মিক বিপদে মানুষ সবসময় ঐক্যবদ্ধ হয়। সমাজে বসবাস করে মানুষের অজান্তেই এই শিক্ষাটা সমাজ তাকে মগজে ঢুকিয়ে দেয়। উপস্থিত সবাই একবাক্যে উৎফুল্লচিত্তে রওয়ানা হলো।
আসলে কাউকে আনন্দ দানে যে আনন্দ পাওয়া যায় তার তুলনা হয় না।
হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সেবা গ্রহণ শেষ হওয়ার পর আবির সবাইকে ডেকে বারান্দার এক কোণায় জড় করে বললেন-
বন্ধুরা ---
আজ আমরা আনন্দ করার উদ্দেশ্যেই বাসা থেকে বের হয়েছি। মানুষের আনন্দ বিভিন্নভাবেই হতে পারে। আজ আমাদের এই আনন্দঘন দিনে হঠাৎ করে হলেও সবার সহযোগীতায় একটি নিষ্পাপ শিশুকে সুস্থ্যভাবে এই পৃথিবীতে আনতে সক্ষম হয়েছি। এটা আমাদের জন্যে কি অনেক আনন্দের হতে পারে না?
উপস্থিত সবার চোখেমুখে যেন যুদ্ধ জয়ের আনন্দ। সবাই একই সুরে বললো-
অবশ্যই, অবশ্যই আনন্দের।
তাহলে সবাই চলো, সব শেষ কাজটি করি।
এই শিশুটাকে সুস্থ্যভাবে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার আনন্দটুকু নিয়ে আমরা বাড়ি ফিরে যাই। এই পাহাড়-পর্বত সবই তো আমাদের। এটা না হয় আর একদিন দেখতে আসবো।
অদূরে দাঁড়ানো বৃদ্ধটি ওদের কথা শুনে খুশিতে অঝোরে কাঁদছে। যেন হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষাটুকুও সে হারিয়ে ফেলেছে।