আনম রফিকুর রশীদের দুটি কবিতা
আনম রফিকুর রশীদের দুটি কবিতা
শ্রেষ্ঠ জননী

 

এপারের ভালোবাসা ওপারে, ওপারের ভালোবাসা এপারে,

দুকূলবাসীর চোখে এক নদী জল।

দাতাদের কানাকানি, বিশ্বব্যাংকের চোখ রাঙানি, চরণ তলে পিষে হাত বাড়ালেন মা।

মাথার উপর গজিয়ে ওঠে পদ্মা সেতুর খুঁটি।

মমতাময়ীর আদর পেয়ে দুকূল জুড়ে কোলাহল; সন্তানের উল্লাস দেখে মায়ের চোখে আনন্দের ঢল।

যেখানে কেউ নেই, সেখানে উনি;

শ্রেষ্ঠ বাঙালির শ্রেষ্ঠ কন্যা শ্রেষ্ঠ জননী।

 

আকাশ ছোঁয়া পাহাড়, সবুজ আলপনায় শকুনের নিঃশ্বাস। পাহাড়িবাঙালি ভেদাভেদ, রক্তের হোলি খেলা ভাইয়ে ভাইয়ে।

বিচলিত মা পেতে দেন শান্তির আঁচল।

সবুজ আস্তরণে  লালমাটি ঢেকে যায়, বেআইনি অস্ত্রের পুষ্পবৃষ্টি বর্ষণে।

 

মগের মুলুকের নির্যাতিত রোহিঙ্গা সাগরজলে ভাসে,

ধর্ষিত নারীর চিৎকার, ক্ষুধাতুর শিশুর আর্তনাদ, শোনার কেউ নেই, -  নিশ্চুপ ধরণি!

চোখ বুজে সইতে পারলেন না বিশ্বজননি।

 

মুখপোড়া বানরেরা মায়ের নাম ধরে ভেংচায়, দিবসের কাজটা কেনো মধ্যরাতে সারে!

অবুঝ শিশুরা শয়তানের ধোঁকায় যদি মাসির কোল পায়!

বিদুষী মা অন্ধকারে তাই পার হয়ে যায় বৈতরণী।

শ্রেষ্ঠ বাঙালির শ্রেষ্ঠ কন্যা শ্রেষ্ঠ জননী।

খুনিদাস


 

যে পেছন থেকে মারতে এসেছিল, তাকে উল্টো ফেরে দেখি সে এক ভাড়াটে গোলাম - কিছু বাড়তি পেলে কেটে পড়ে।

আমার চলার পথে যে মুখোশধারী উৎপেতে থাকে সুযোগের অপেক্ষায়,

সে- মোটা অঙ্কে কেনা গুপ্তঘাতক,

তাকে আমি বাল্যকাল থেকেই জানি, এক মস্তবড় ঈমানদার খুনি,

টাকা পেলে মনিবের সাথে করে না বেইমানি।

 

মুজিব পরিবার, জাতীয় চারনেতার, স্বঘোষিত খুনিরা গোলাম ছিল,

কক্সবাজারের অহংকার শহিদ আবদুল হামিদের খুনি পাকহানাদারও গোলাম ছিল।

 

গোলামদের কোনো নির্দিষ্ট ভূখন্ড নেই, সমগ্র দুনিয়া জুড়েই তাদের গোলামী,

ভারতের তিনগান্ধী মহাত্মা ইন্দ্রা রাজিব,

পাকিস্তানের রাজকন্যা বেনজীর, সবার প্রাণ যায় ঘৃণিত গোলামদের হাতে।

 

কালো বান্ধব মহান শাসক লিংকন

থিয়েটার কক্ষে লাল বক্ষে আলপনা আঁকে

শাদা গোলামের নির্মম বুলেটে।

 

সিমার ছিল সবচে নিকৃষ্ট গোলাম,

মনিবের পুরষ্কারের লোভে তাণ্ডব চালায় কারবালায়,

এখনও ফোরাতের জলে ঢেউর মাতম -- হায় হোসেন! হায় হোসেন!

 

পৃথিবীর চোখে নির্ঘুম ব্যস্ততা; গোলামদের চৌদ্দগুষ্টির তথ্য উদ্ধারে-- মনিব রয়ে যায় আঁধারে মিশে।

আমি আমাকে খুনের  হুকুমদাতার কুষ্ঠি কিনেছি, বাবার কাফনের বিনিময়ে, --- তারা বংশ পরম্পরায় ক্রীতদাস।

 

খুনিদাস যখন মারণাস্ত্র হাতে সমুখে এসে দাঁড়ায়,

তখন জুলকারনাইন, আমাকে অদম্য সাহস যোগায়।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান