ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত-র কবিতাগুচ্ছ
/কত নম্বর বাড়ি/
বললে না তুমি কোন রাস্তায় থাকো, কত নম্বর বাড়ি!
কেবল বললে টানেলের পরে নেমে পড়তে,
তারপরে একটা নদী।
শহরের নাম বললে না, গ্রামের নাম বললে না
বললে না কেন যাবো, যেতে কেন হবেই;
কেন এত তাড়া!
তোমার কথাগুলো তবু দিলো নাড়া,
হারা উদ্দেশ্যে তাই সকাল থেকেই।
আমাকে নামিয়ে চলে গেল ট্রেন,
আমাকে নামিয়ে চলে গেলো বাস;
আমার ঝোলার ভেতরে প্রাচীন টেলিগ্রাম,
কাম শার্প!
কালভার্টের তলাতেই খনন অবাধ উপত্যকার বালি!
ধসে পড়বে সেতু, তোমার বাড়ি কি ওপারে?
আমাকে কি সেতু পেরোতে হবে?
কখন আসবে তুমি, আমি বসে আছি
বললে না কোন রাস্তায় থাকো, কত নম্বর বাড়ি।
/জলের গভীরে/
জলের গভীরে দুঃখ জমে আছে, জলকে সম্পৃক্ত করে;
সূর্যের অন্ধকারে চাঁদ ডোবে ঝড়ে, আকাশ ভেঙে
গুঁড়ো গুঁড়ো কালো!
কোথায় যাবে তুমি, যাবে কোনখানে?
দুঃখ গায়ে মেখে তাই নিরুদ্দিষ্ট ঝাঁপালে জলে।
স্কুবা ডাইভে লাল নীল কোরাল নেই;
কেবল সীমাহীন অতল, শব্দের অভাবে
অশ্রু কাঁদতে পারে না;
হৃদয় ছেড়ে ভালবাসা কোথায় যায়
যায় কোন দিশায়!
কান্নার মোড়কে হাসি জড়িয়ে, নিজেকে ঠকিয়ে
আটকে যাচ্ছ অনির্দিষ্ট ল্যাবিরিন্থে;
সত্যিকে আসতেই হবে,
আসতেই হবে, আসতেই হবে;
ভণ্ডামি ছিঁড়ে নকলের নাগাল পেরিয়ে।
/আবার সোমবার/
তাতানো অ্যাসফল্টে পা রেখে রোদের কণা মাখো
অফিস পাড়ার চত্বরে; কাজটা আজও হলো না।
আমাদের সবার সব কাজগুলো হয় না
প্রত্যেকটা কাজের পেছনে একটা অফিস থাকে
তিনতলাতে, কখনো লিফট থাকে, কখনো সিঁড়ি;
সিঁড়ি থাকে কলকাতার পুরনো বাড়িতে।
পুরনো বাড়ির এই সিঁড়িগুলো কাঠের,
সামনে একটা ওয়াটার কুলার থাকে কিন্তু গ্লাস থাকে না,
উদাসীন পিওন টুলের ওপর রুমাল ঘুরিয়ে হাওয়া খায়;
পাখাটা খারাপ থাকে,
তারাই দেখিয়ে দেয় এক সদা সর্বদা বিরক্ত বড়বাবুকে।
বড়বাবুর বিরক্তির কারণ বোঝা ভার,
যেন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি হাতাবার ধান্দায়;
তিনি দেখিয়ে দেন কোন স্বপন বা মণ্ডলবাবুকে,
যাঁরা প্রত্যেক অফিসেই থাকেন কিন্তু চেয়ারে থাকেন না;
তাতানো অ্যাসফল্ট পথ আবার সাদরে ডাকে,
আয়, ফিরে আয়।
তুমি আরও একটা সোমবারের অপেক্ষা কর
যে সোমবার কোনদিন আসে না
/কী এমন কাজ /
রোজ ভাবি তুমি আসবে, আসো না। কী এমন কাজ?
বিকেলের ট্রেন ছেড়ে চলে যায়,
তোমার অপেক্ষায় দেখি অন্যের যাতায়াত।
মালগাড়ির পরিত্যক্ত কামরা জড়িয়ে
উঠেছে আগাছা লতা,
পেরিয়ে যাই যোজন পথ,
কারাকোরাম পর্বতমালা পেরিয়ে পৌঁছে যাই
ষ্টেশনের বেঞ্চিতে।
একা বসি কিছুক্ষণ।
কিছুতেই আসো না কেন তুমি, কী এমন কাজ?
/যদি বলো/
যদি বলো, তবে তাই, যাবো কাছে;
যদি না চাও, তাও বল মুখ ফুটে;
কষ্ট হবে তবু দ্ব্যর্থে রেখো না, জানি সবাইকে কাছে টানা যায় না,
কষ্ট হবে তবু ব্যর্থে রেখো না, জানি সবাইকে কাছে টানা যায় না।
এই সব ভালোবাসা খাতিরদারি ক্লান্তিকর,
কাঁহাতক ভালো লাগে পরস্পরের একই কথা দৈনন্দিন!
আমরা বড় তাড়াতাড়ি অভ্যাস করি একে অন্যকে,
চমকগুলো হারিয়ে ফেলে, ভোঁতা ছেঁদো কথা
অনুরণন পুনরাবৃত্তি শেষে আবার একা থাকা।
যদি বলো কাছে যাবো, নয়ত নয়;
খুঁজে নেব নিজস্ব কিছু একান্ত সময়।
নির্জন বাতিঘর ঝাউবন বালিয়াড়ি
অথবা সুন্দরী গাছের নিচে ছোট ছোট ঢেউ জল
ছোঁব একা একা।
/কত নম্বর বাড়ি/
বললে না তুমি কোন রাস্তায় থাকো, কত নম্বর বাড়ি!
কেবল বললে টানেলের পরে নেমে পড়তে,
তারপরে একটা নদী।
শহরের নাম বললে না, গ্রামের নাম বললে না
বললে না কেন যাবো, যেতে কেন হবেই;
কেন এত তাড়া!
তোমার কথাগুলো তবু দিলো নাড়া,
হারা উদ্দেশ্যে তাই সকাল থেকেই।
আমাকে নামিয়ে চলে গেল ট্রেন,
আমাকে নামিয়ে চলে গেলো বাস;
আমার ঝোলার ভেতরে প্রাচীন টেলিগ্রাম,
কাম শার্প!
কালভার্টের তলাতেই খনন অবাধ উপত্যকার বালি!
ধসে পড়বে সেতু, তোমার বাড়ি কি ওপারে?
আমাকে কি সেতু পেরোতে হবে?
কখন আসবে তুমি, আমি বসে আছি
বললে না কোন রাস্তায় থাকো, কত নম্বর বাড়ি।
/জলের গভীরে/
জলের গভীরে দুঃখ জমে আছে, জলকে সম্পৃক্ত করে;
সূর্যের অন্ধকারে চাঁদ ডোবে ঝড়ে, আকাশ ভেঙে
গুঁড়ো গুঁড়ো কালো!
কোথায় যাবে তুমি, যাবে কোনখানে?
দুঃখ গায়ে মেখে তাই নিরুদ্দিষ্ট ঝাঁপালে জলে।
স্কুবা ডাইভে লাল নীল কোরাল নেই;
কেবল সীমাহীন অতল, শব্দের অভাবে
অশ্রু কাঁদতে পারে না;
হৃদয় ছেড়ে ভালবাসা কোথায় যায়
যায় কোন দিশায়!
কান্নার মোড়কে হাসি জড়িয়ে, নিজেকে ঠকিয়ে
আটকে যাচ্ছ অনির্দিষ্ট ল্যাবিরিন্থে;
সত্যিকে আসতেই হবে,
আসতেই হবে, আসতেই হবে;
ভণ্ডামি ছিঁড়ে নকলের নাগাল পেরিয়ে।
/আবার সোমবার/
তাতানো অ্যাসফল্টে পা রেখে রোদের কণা মাখো
অফিস পাড়ার চত্বরে; কাজটা আজও হলো না।
আমাদের সবার সব কাজগুলো হয় না
প্রত্যেকটা কাজের পেছনে একটা অফিস থাকে
তিনতলাতে, কখনো লিফট থাকে, কখনো সিঁড়ি;
সিঁড়ি থাকে কলকাতার পুরনো বাড়িতে।
পুরনো বাড়ির এই সিঁড়িগুলো কাঠের,
সামনে একটা ওয়াটার কুলার থাকে কিন্তু গ্লাস থাকে না,
উদাসীন পিওন টুলের ওপর রুমাল ঘুরিয়ে হাওয়া খায়;
পাখাটা খারাপ থাকে,
তারাই দেখিয়ে দেয় এক সদা সর্বদা বিরক্ত বড়বাবুকে।
বড়বাবুর বিরক্তির কারণ বোঝা ভার,
যেন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি হাতাবার ধান্দায়;
তিনি দেখিয়ে দেন কোন স্বপন বা মণ্ডলবাবুকে,
যাঁরা প্রত্যেক অফিসেই থাকেন কিন্তু চেয়ারে থাকেন না;
তাতানো অ্যাসফল্ট পথ আবার সাদরে ডাকে,
আয়, ফিরে আয়।
তুমি আরও একটা সোমবারের অপেক্ষা কর
যে সোমবার কোনদিন আসে না
/কী এমন কাজ /
রোজ ভাবি তুমি আসবে, আসো না। কী এমন কাজ?
বিকেলের ট্রেন ছেড়ে চলে যায়,
তোমার অপেক্ষায় দেখি অন্যের যাতায়াত।
মালগাড়ির পরিত্যক্ত কামরা জড়িয়ে
উঠেছে আগাছা লতা,
পেরিয়ে যাই যোজন পথ,
কারাকোরাম পর্বতমালা পেরিয়ে পৌঁছে যাই
ষ্টেশনের বেঞ্চিতে।
একা বসি কিছুক্ষণ।
কিছুতেই আসো না কেন তুমি, কী এমন কাজ?
/যদি বলো/
যদি বলো, তবে তাই, যাবো কাছে;
যদি না চাও, তাও বল মুখ ফুটে;
কষ্ট হবে তবু দ্ব্যর্থে রেখো না, জানি সবাইকে কাছে টানা যায় না,
কষ্ট হবে তবু ব্যর্থে রেখো না, জানি সবাইকে কাছে টানা যায় না।
এই সব ভালোবাসা খাতিরদারি ক্লান্তিকর,
কাঁহাতক ভালো লাগে পরস্পরের একই কথা দৈনন্দিন!
আমরা বড় তাড়াতাড়ি অভ্যাস করি একে অন্যকে,
চমকগুলো হারিয়ে ফেলে, ভোঁতা ছেঁদো কথা
অনুরণন পুনরাবৃত্তি শেষে আবার একা থাকা।
যদি বলো কাছে যাবো, নয়ত নয়;
খুঁজে নেব নিজস্ব কিছু একান্ত সময়।
নির্জন বাতিঘর ঝাউবন বালিয়াড়ি
অথবা সুন্দরী গাছের নিচে ছোট ছোট ঢেউ জল
ছোঁব একা একা।