একগুচ্ছ কবিতা । শামীম আহমদ
একগুচ্ছ কবিতা । শামীম আহমদ
পাথর শিশু

 

এক পাথর শিশু

 

রাত্রির চরে, থাকে পড়ে ,সে অন্ধকারে একা

সে আমার কান্নার স্মৃতি ...

 

শতাব্দী ধরে ,তপস্যা করে

জমে  জমে হয়েছে আজ প্রাগৈতিহাসিক ফসিল

 

সোনায় মোড়ানো ব্যথা,তুমি কি তার মুল্য জানো ?

 

১২,১২,২৪

লন্ডন

 

 বিশেষ  দ্রষ্টব্য ...

                   

জলজ  জীবন

মৃত্তিকার ঠোঁটে বিদ্যুৎ কাঁপে

স্বর্গীয় উত্তাপে ,

   প্রকৃতির  সুদীর্ঘ সঙ্গম শেষে

জন্মমুখে হেসে ওঠে রক্তমল্লিকা

 

সাধুর হাতধরে

যারা নিয়েছিলো সন্যাস-বাস

এখন তারাও দেখি

স্নান করে পুষ্পিত  রতিকাঞ্চন সাগরে

 

 ভাসানে ভেসে যায় কেউ

কেউ কেউ তীরে উঠে উল্লাস করে

ছায়ার সমুদ্র বিজয়ে !

আমি নখের নখরে দেখি রক্তাক্ত সরুপথে

বীর্যের নীরবতা ভেঙে

বিস্ময়ে ফেটে পড়ে শব্দের সাঁকো

তারপর -ফোঁটা অশ্রু -

কিংবা একগঙ্গা হাসিই জীবনের বিশেষ   দ্রষ্টব্যে ...

 

১০,১০,২২

লন্ডন

 

 

রক্তবীজ 

 

সুদীপ্ত  বিভাস রাত্রি

রক্তবীজে ওম দেয় মূর্তিমান মানুষ

মানুষ আর  ঈশ্বর !

প্যারালাল জীবনের আগে প্যারানরমাল স্মৃতি

 

পরস্পর পরম্পরার গাণিতিক হিসেব কে বুঝে

স্মৃতিতে আমার অনেক জখম

                         ঈশ্বর বলিদানের পক্ষে বলে !

সত্যের কুটিল পথে শুধু বানিজ্যই হয়

                       অন্তর রয়ে যায় ধুধু মরুময় ...

 

ঈশানে অগ্নিশিখা জ্বলে

নৈরিতে মেঘের ডামাডোলে

ফেটে পড়া দৃষ্টির আগুনে আমি রোজ পুড়ে ভস্ম হই

 

 

 

সফেদ হাঙ্গর


 

মানুষ নিরেট  স্বার্থপর হলে

           দানবেরা পেয়ে যায়  বর !

 

রক্তের ঘ্রা শুঁকে শুঁকে ওরা পৌঁছে যায়

হৃদপিণ্ডের কাছাকাছি ,আরো একটু এগোলেই

                                     জীবনশিরায়  দেবে টান

 

আমার ডানে বামে অসংখ্য সর্পিল চোরাস্রোত

স্রাতের গতির সাথে সমতালে চলে সফেদ হাঙ্গর 

আজন্ম জলজ ,ক্যামোফ্লাজ  ,ওরা দুর্দান্ত ট্রান্সপারেন্স !

 

রূপকের এই দেশে আমি বড্ড সন্দিহান -

প্রতিকি আলখাল্লায় , দূর্যোধনের তীরের মতো

চিকচিক করে দৃষ্টির ফলা

কখনযে আঁচড়ে পড়ে মৃত্যুর সওদা নিয়ে কে জানে

 

,১২,২৪

লন্ডন।

 

 

 

 

নৈষ্ঠিক ঋষি ———


জমে যাওয়া বরফের মতো

পলকহীন চেয়ে থাকে রাতজাগা তারার দল ;

 

এখানে হীমেলে বাতাস এসে কেটে দেয়

অলিভ বৃক্ষের পাতা ,

ছায়ার মাছ , সমস্তরাত সাঁতার কাটে

দুধসাদা জ্যোৎস্নার জলে ,ধীরে ধীরে

তারাগুলো পড়ে গলে গলে ,পৃথিবীর দীর্ঘশ্বাসে !

তারপর সব যেনো মিশে হয় দিনের কোলাহল

মাছগুলো ঝরাপাতা ,চোখগুলো জমে থাকা জল !

 

সব যেনো নথি করে পাঁচশত ছিয়াত্তর ম্যাগাপিক্সেল 

টাইম ল্যাপসের ফিতায় ...

 

হে বন্ধু আমার ,তুমি কি দেখো নৈসর্গিক বিলাস ?

আমি সব দেখে চোখ বুজি

নৈষ্ঠিক ঋষির মতো

বুকে গভীরে পুঁতে রাখি আরাধনার বীজ

 

২৫,১২,২০

লন্ডন


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান