এ কে এম আব্দুল্লাহ'র তিনটি কবিতা
এ কে এম আব্দুল্লাহ'র তিনটি কবিতা

কবি : এ কে এম আব্দুল্লাহ


ব্যরিকেড ভেঙ্গে নামে যে বীজ


খেতের গলি দিয়ে চলে গেলে সূর্যদানা—জমিনের শরীর ঘষে নেমে আসে সন্ধ্যা। পৃথিবীর তলপেট নড়ে ওঠে। আর আমরা ভুলে যাই কান্নার স্বাদ এবং পবিত্রতা ঘুমিয়ে গেলে মৃত বালিশে। তুমি আমার বুকে মাথা রেখে হও স্বপ্নীল। 

এরপর,তোমার নাভির পাশে কান পাতি। শুনি— শিশুর নিরাপদ হাসির ধ্বনি। আমি পুর্বপুরুষের পথে জমা ধুলো সরিয়ে তোমার চোখের দিকে তাকাই। দেখি— পৃথিবীর গলি ঘুঁজি আলোকিত করে আসছে আমাদের সন্তান। আর কমলাপুর রেলস্টেশন ছেয়ে যাচ্ছে কালিজিরা ঘ্রাণ। 

এখন প্রতিটি রুপালী রাতে টের পাই— নিজেদের ভেতর জ্বলে ওঠছে নিজস্ব আগুন। 


একটি ঘোরগ্রস্থ সময়ের ফটোকপি


আজকাল মধ্যমাসেই পকেট থেকে নেমে যায় পথের গন্তব্য। আর মাছবাজার পানিতে ডুবে যায়। আমাদের কিচিনের ছাদ থেকে টিপ টিপ করে, ঝরে পেরেশানি। আমাদের উনুনে পুড়ে লোক দেখানো সভ্যতার চামড়া। আর আমরা লোডশেডিং এর মতো,হাতে হাত ধরে ধরে সাঁতার কাটি রাতের জলে। 

আমরা ডাইনিং টেবিলে ধারহীন নাইফ দিয়ে সার্প করে দিই বাচ্চাদের কাঠপেন্সিল ; ভিতর থেকে অঙ্কিত করলে হৃদয়ের স্ক্যাচ ; পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে কেউ উল্টো করে ধরে ক্যানভাস। আমাদের মাথায় ভুমিকম্প হয়। আর আমাদের মুখ দিয়ে বের হতে থাকে সময়ের ফটোকপি। 

অতপর রাত গভীর হলে অনেকেই আমাদের ঘিরে ধরে। শকুনের মত ঠোঁটে ফিস ফিস করে আমাদের চরিত্র বিক্রির পরামর্শ দেয়। আর আমরা পুনরায় আত্মহত্যা করি। 


সাদা কাপড়ে মোড়া নগ্ন পাঁজর 


করোটি থেকে নেমে যাচ্ছে আলো। আর অন্ধকার তুলে রেখে চোখে ; সংসারের সিঁড়ি ভেঙ্গে, হেঁটে হেঁটে যায় বুকের পাটাতন। 

এরপর,বাজারের ব্যাগ থেকে পড়ে গেলে বাবার পকেট ; মায়ের চোখে জ্বলে ওঠে উনুন। মধ্যাহ্নের শ্লোগানগুলো সেদ্ধ করে রাতের জীর্ণ হাত। পেটের ক্ষুধা তুলে রেখে কথার গোলায় ; আমরা হাকিয়ে যাই- ভোরের পঙ্খিরাজ।  

আমাদের চোখে জল,বুকে জল,ঘরে জল। তবুও এই জল ছুঁতে পারেনা আমার পঙ্খিরাজের খুর। 

চৈত্রের ফাটা জমিনে,শামুকের শুকনো খোলসের মতো আটকে যাচ্ছে আয়ুর নাও। আর মায়ার গুন টানতে টানতে ক্লান্ত দেহ। এখন নিশ্বাসগুলো ক্যেমেরা ফ্লাসে চমকায়, স্যেত- স্যেতে বৈঠা কাঠের মতো। 


চোখের পুষ্টিহীন দৃষ্টিতে বৃদ্ধ সংসারগুলো,আজও ভোরের কুলো থেকে কুড়োয় সময়ের কঙ্কর।  



সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান