সময়ের জনপ্রিয় তরুণ কথাসাহিত্যিকদের অন্যতম একজন রণজিৎ সরকার। আজ তার জন্মদিন। রণজিৎ সরকার ১৯৮৪ সালে ১২ মে, (২৯ শে বৈশাখ) মঙ্গলবারে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার খোকশাহাট গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃভূমি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সরাইদহ গ্রামে।
বাবা নারায়ণ সরকার ও মা শোভা সরকারের তিন সন্তানের মধ্যে তিনি একমাত্র পুত্র সন্তান। রণজিৎ সরকার হিসাববিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করলেও লেখালেখির নেশা থেকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন সাংবাদিকতা। দৈনিক গণকণ্ঠ, বিডিওয়েব, রাইজিংবিডি ডটকমে কাজ করেছেন নিষ্ঠার সাথে। বর্তমানে তিনি ‘দৈনিক আমাদের সময়’ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে পাঁচ বছর ধরে কর্মরত আছেন।
বাংলা একাডেমির তরুণ লেখক প্রশিক্ষণ কোর্স ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে প্রুফ সংশোধন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্স করার সুযোগে খ্যাতিমান সাহিত্যিকদের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি। রণজিৎ সরকার সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিয়মিত লিখছেন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, ছোটকাগজ ও অনলাইনে। প্রথম গল্পের বই ‘স্কুল ছুটির পর’ ২০১২ সালের বইমেলায় প্রকাশ হলে ব্যাপক সাড়া পায়। প্রথম বই হিসেবে যতটুকু সাফল্য পাওয়া দরকার, সাফল্য পেয়েছিলেন তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি। নবীন লেখকের বই হিসেবে মেলাতেই বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ প্রকাশ হয়েছিল।
সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের একুশে বইমেলায় তার গল্প-উপন্যাস মিলিয়ে বইয়ের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। উল্লেখ্যযোগ্য বইগুলো হলো- স্কুল ছুটির পর, স্কুল ছুটির দিনগুলি, মায়ের সাথে স্কুলে, শিশুতোষ মুক্তিযুদ্ধের গল্প, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ব, শিশুতোষ একুশের গল্প, ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের অজানা গল্প, প্রেমহীন ক্যাম্পাস, ভাষাশহীদদের গল্প, বীরশ্রেষ্ঠদের গল্প, নায়িকার প্রেমে পড়েছি, পথে পাওয়া, গল্পে গল্পে জাতীয় চার নেতা, পরির সাথে দেশ ঘুরি, সূর্যশিকারি, ক্যাম্পাসের প্রিয়তমা, ভাষাশহিদ ও বীরশ্রেষ্ঠদের গল্প, গল্পে গল্পে বর্ণমালা, শিশুকিশোরদের বঙ্গবন্ধু, প্রেম জ¦লে ডুবে যাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে সুমনা, প্রেমভূমির নিমন্ত্রণলিপি ।
ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত রণজিৎ সরকারের প্রিয় লেখকের তালিকায় আছেন অনেকেই। তার বড় গুণ প্রতিদিন নিয়ম করে লেখার টেবিলে বসে লেখেন। তিনি জানান, তার পছন্দের রং লাল। ফুলের মধ্যে বেশি ভালো লাগে গোলাপ। খেতে পছন্দ করেন মায়ের হাতের যেকোনো রান্না। আর বিশেষ করে নিজের হাতে বানানো আলু ভর্তা দিয়ে ভাত। অবসর সময়ে লেখক বন্ধুদের সঙ্গে সৃজনশীল আড্ডা দিতে পছন্দ করেন। সবসময় হাসিখুশি থাকতে বেশি পছন্দ করেন তিনি। তার হাসির মাঝে সহজ-সরলতার প্রকাশ ঘটে। শিশুদের আদার করতে তিনি ভীষণ ভালোবাসেন। তবে একা থাকতে ভালো কিছু ভাবতে আরো বেশি পছন্দ করেন এই কথাসাহিত্যিক।
জন্মদিন পালন উপলক্ষে রণজিৎ সরকার বলেন, লেখক সন্মানীর টাকা দিয়ে গত কয়েক বছর হলো পথশিশুদের মাঝে জন্মদিনটা কাটিয়ে দিই। তাদের ইচ্ছাপূরণ করার চেষ্টা করি। এই দিনে কোনো বন্ধুর সাথে দেখা করি না। জন্মদিনের কোনো কেক কাটা হয় না। করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দুমাস ঘরবন্দি থেকে অফিসের কাজ করছি। তবে আজ জন্মদিনে বের হয়ে পথশিশু, দুঃস্থ ও ভিক্ষুকদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটানোর চেষ্টা করব। তাদের মাঝেই করোনা কালের জন্মদিন স্মরণীয় করে রাখতে চাই। নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে ভালোবাসতে চাই। মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই।
তরুণ এই লেখকের জন্মদিনে সাহিত্যবার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে রইল অনেক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা।