কাজী আতীকের কবিতাগুচ্ছ
কাজী আতীকের কবিতাগুচ্ছ
প্রান্তিক বোধ

যদিও এক নির্বোধ বিপণন বাসনায়
সময়ের সাথে পাল্লা দেয় বিভ্রম কুহক,
জাগায় লিপ্সা অভিলাষ, যদিও জানে সবাই-
জলের গভীরেও থাকে নিযুত মুক্তোহীন ঝিনুক,

তারপরও- খোঁজে নেয় পথ অনুষঙ্গ বিভ্রাট,
কেনোনা- খুব কাঁচে থেকেও যদি দেখো,
দেখতে পাবে তার বহিরঙ্গের মুগ্ধ কারুকাজ,

যদিও অগোছালো পথেও ভীষণ
পরিপাটি পা ফেলে পরিপূরক বোধেরা হাঁটে,
হয়তো তুমি ঠিক বোঝতে পারো না,

যেমন অপলক চোখ জানালার গ্রিল গলে
নিভাঁজ খোলা এক নীল প্রেমপত্র যেনো,
প্রজাপতি ডানার কারুকাজে অনুরাগ এঁকে
দিগন্ত আড়াল থেকে উদয়ের সূর্য-

শুধু খোলা চোখ অপলক পেতে পারো তুমিও
উৎস আলোর উদ্ভাস- প্রাণ সঞ্চারের স্পর্শ।

কখনোতো ছেড়ে যেতে হয়

কখনো না কখনোতো ছেড়ে যেতে হয়,
ছেড়ে যায় সবই, স্থিরীকৃত সময়ান্ত,
যেমন উন্মাতাল বাতাসের চৈত্র শেষে
ছেড়ে যায় বসন্ত,

কিছুর আবার ফিরেও আসতে হয়
ফিরে আসে কাল, ফিরে আসে আজ,
যেমন হিমেল বাতাসের মাঘ শেষে
ফিরে ফিরে আসে ঋতুরাজ,

যদিও ফিরে না কখনো স্রোত উৎসে নদীর,
তবে শুনেছি নদীরা নাকি সময়ে
ফিরে আসে আবার মুল প্রবাহে তার,

কিছু যদিও ফিরে, কিছু ফিরেনা কখনো,
ফিরা- নাফিরাটা হয়তো
কেবল এক আপেক্ষিক আবর্ত,
তবে যাওয়াটা নিবদ্ধ অমোঘ তাই-
ছেড়ে তো যেতে হয় সবারই।

কেউতো ওদের রাশ টেনে ধরুক

যদি সংকোচ এবং ভয় অনুভব সম্পৃক্ত নয়,
স্বপ্ন বিভাজনের মতো বিভ্রান্ত অভিব্যক্তি কেবল
অপরিবাহী তড়িৎ মাধ্যমে ভুল সংযোগ যেমন,
আত্মার আর্তিকেই যেনো দেখায় উপেক্ষা প্রবল।

হয়তো বিভ্রম পোষে রাখা সব বিবশ অন্তর,
নির্মম হিংস্র লোলুপ বিনাশ জেনেছে কেবল
যখোন সংকোচ এবং ভয় অনুভব সম্পৃক্ত নয়,
ওরা তাই লজ্জাহীন নির্দ্বিধায় বল্গাহীন উশৃংখল।

পৃথিবী হতবাক দেখে সব ঔধ্যত্বের বাগাড়ম্বর
হয়তো ভাবে, কেউতো ওদের রাশ টেনে ধরুক।

প্রজ্ঞাবান

মেঘ আকাশে উড়িয়ে ফানুশ সখের ঘুড়ি
রোদ বৃষ্টি সাজিয়েছিলে ডানার কারুকাজে
স্বপ্ন কুহক হৃদয় ছোঁয়ে দমকা বাতাস বয়ে
ঝড়ের নদী হামলে পড়ে তীব্র ক্ষিপ্র স্রোতে,

সবাই তখোন বিহ্বল বিমূঢ় তটস্থ ভয়ে,
পাল ছেড়া হাল ধরতে চাওয়া হাতটির মতো
শঙ্কিত সব শঙ্কাও যেনো হতবুদ্ধি মননে,

তুমি বৈতরণী বুঝিয়ে দিলে ঢেউয়ের বিপরীতে।

সাম্প্রতিক বিশ্ব

নিশিতের আলখাল্লা খুলে রেখে দেঁতো হাসে সূর্য
যেনো শুরু হলো আবারো সেই কানামাছি ভোঁ
যথারীতি এক অনিশ্চিত দৌড়, গোল্লাছুট বিকল্প,

কারো ইচ্ছে সোজাসুজি, কেউ হয়তো আড়াআড়ি
কেউ যদি চক্রাকারে কেউ আঁকাবাঁকা পথ ধরে,
সবাই যে যার মতো করে থাকতে চায় এগিয়ে।

উদ্দেশ্য হয়তো এক অথচ লক্ষ্য কিছু স্থির নয়,
গুলটা বাধে এখানেই, দুরভিসন্ধি রূপায়ন হয়।

যেনো এক শুভঙ্করের ফাঁকি এই সাম্প্রতিক বিশ্ব,
কেউ বিশ্বায়নের ফায়দা লুটে, কেউ হয়তো নিঃস্ব।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান