একদিন ঠিক ঠিক শান্তি নামে তারপর
পড়ন্ত বিকেলে তুমি কেঁদেছিলে।
অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যৎ তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিলো তোমার মনে।
জীবন আর মৃত্যুর মধ্যে কোনো তফাতই খুঁজে পাচ্ছিলে না তুমি।
কিন্তু তোমার বেঁচে থাকা দরকার।
না, নিজের জন্য নয়।
বিকেলটা সেই থেকে একটা জগদ্দল পাথর হয়ে বুকে চেপে আছে।
তোমার ড্রয়িংরুমে তুমি যখন ভোরে চা নিয়ে বসো
পুবের জানালা দিয়ে সকালবেলার রোদ
তোমার পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে।
তুমি স্নান করো; তোমার সৌরভের লোভে
স্বর্গ থেকে নেমে আসে কিন্নর-কিন্নরী।
তুমি শাড়ি পরো; অপ্সরীরা বৃত্ত রচনা করে
নৃত্য করতে করতে তোমাকে দেখে।
না, তোমার পায়ে সোনার নূপুর নেই
তবু তুমি যখন নামতে থাকো, সিঁড়িগুলো
নিক্কনে শিহরিত হয়
আর তুমি যখন মাটিতে পা রাখো
তোমার বারোমেসে শিউলিগাছটা
নিত্যদিনের অভিনব বিস্ময় নিয়ে
তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে।
একটা মহাযান তোমাকে তুলে নিয়ে যায়
গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছে। সেখানে প্রণয় আছে, রক্তপাতও আছে।
তুমি হাসো, তুমি গাও। আর লড়াই করো-- যেন পরীর ফিনফিনে ডানা
বসন্তের দখিনা বাতাসে যৎসামান্য স্পন্দিত হলো।
অশ্বমেধযজ্ঞ শেষে ঘরে ফেরো। তখন ঘরই গন্তব্য।
তখন শরীরে ক্লান্তি, মর্মে ধুলো।
তখন তুলোর পুতুল চালচুলোয় মেতে ওঠে।
আর তখন সংসার সীমান্তে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে।
রণ হুঙ্কারে মাতালের মতো টলে ওঠে সমস্ত রঙিন দেয়াল।
তোমার নিজস্ব আলোকিত দ্বীপ
এক ফুঁৎকারে নিভে যায়।
না, আলো অত সহজে মরে না।
পড়ন্ত বিকেলের সেই চোখের জল বজ্রবিদ্যুৎ হয়ে ফিরে আসে
তারপর শান্তি নামে, একদিন ঠিক ঠিক শান্তি নামে তারপর
দিকে দিকে আলোর পুষ্প হয়ে ফুটে ওঠে তোমার সন্ততি