বি ব্রেইভ বি বিউটিফুল ...
লাশবাহী এম্বোল্যান্সের মতো
দিন রাত্রির কোলাহল থামেনা ।
জীবনের কোলাহল থেমে যায় একটি দীর্ঘশ্বাসের-
প্রান্ত ছুঁয়ে !দীর্ঘশ্বাস কতো লম্বা হয় কে জানে
হয়তো আকাশের সীমানা পেরিয়ে আরশে আজিম পর্যন্ত ।
মৃত্যু সৃষ্টির কঠিনতম স্নিগ্ধ ও সুন্দর ।
কিন্তু যদি আততায়ীর ধারালো খঞ্জরে
কিংবা বুলেটের অগ্নি বিষ্ফোরণে হয় তবে নির্ঘাত অপমৃত্যু ।
ভাবতে ভাবতে ক্রমেই
আমার মস্তিষ্কে জমাট বাঁধে রক্তের স্রোতধারা
দৃষ্টি ঝাপসা হতে হতে ছায়ার মতো গাঢ় অন্ধকারে হয় নিরুদ্দেশ ।
প্রতিহিংসায় পুড়ে পুড়ে
নিঃশ্বাস কালো হয়ে যাচ্ছে ,
বরফের মতো সাদা সাদা মেঘ আজ রক্তাক্ত দলিল !
অবুঝ শিশুর মতো অঝোরে ঝরছে আকাশ
কে জানে কোথায় মমত্ববোধের ঠিকানা ।
ভালবাসায় পৃথিবী বদলে যায় জানি
শুনেছি একটি শিশুর মরণব্যধি ক্যানসার হয়েছিল
ক্যামোর বিষাক্ততায় সব চুল ঝরে পড়ে বৃন্ত ছিড়ে,
দীর্ঘ সময়ের প্রার্থণায় সে কিঞ্চিত সুস্থ হলে
ইস্কুলে যায়,তারপর ইতিহাস সময়েকে বদলে দেয় দ্রুত
একে একে তাঁর সকল সহপাঠী মাথা ন্যাড়া করে
সমস্বরে বলে ওঠে বি ব্রেইভ বি বিউটিফুল ।
আমরা কেনো এমন হতে পারিনা শিশুর মতো সুন্দর ?
জলজ জীবন ।
মৃত্তিকার ঠোঁটে বিদ্যুৎ কাঁপে
প্রকৃতির সুদীর্ঘ সঙ্গম শেষে
জন্মমুখে হেসে ওঠে রক্তমল্লিকা ।
সাধুর হাতধরে
যারা নিয়েছিলো সন্যাস-বাস
এখন তারাও দেখি
স্নান করে পুষ্পিত রতিকাঞ্চন সাগরে ।
ভাসানে ভেসে যায় কেউ
কেউ কেউ তীরে উঠে উল্লাস করে
ছায়ার সমুদ্র বিজয়ে !
আমি নখের নখরে দেখি রক্তাক্ত সরুপথে
বীর্যের নীরবতা ভেঙে
বিস্ময়ে ফেটে পড়ে শব্দের সাঁকো ।
তারপর ক-ফোঁটা অশ্রু -
কিংবা একগঙ্গা হাসিই জীবনের বিশেষ দ্রষ্টব্যে ...
এই মর্ত্যলোক ।শান্তির নীড়।
এখানে কর্পোরেট সময় হাঁটে নির্বিক
শুষ্ক বৃষ্টিতে -
তৃষ্ণার্ত ফুসফুসের তৃষ্ণা বেড়ে যায় আরো
মানুষ গুলো যেনো
বেলুনের মতো উড়ন্ত শকটে হাওয়ায় উড়ে
বায়ুমণ্ডলের ললাটে এঁকে কার্বন ফুট-প্রিন্ট ।
বিধ্বস্ত মানুষের বিমূর্ত হাসি যখন -
শৈল্পিক হয়ে ওঠে আয়নাবাজিতে
আমি তখন কেঁদে উঠি ঘুমোঘোরে বারংবার ,
আমার চোখের পাশ দিয়ে
বয়েযায় অমাবস্যার নদী!
সপ্তঋষি মণ্ডলের বিষন্ন বিরাগে
উল্কাপাত হলে
শূন্যে বাতাস গর্ভবতী হয় ,বিপুলা ভ্রুণ ফেটে
জন্ম নেয় ভয়াল টর্নেডো ...
ছায়ার বেড়িবাঁধে বসে আছি স্থির
পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে নদীর মতো পাহাড়ের সারি
গাড়ির হেডলাইটের হাইভীম আলোর স্রোতে!
সবাই ছুটছে মূহুর্মূহু
চারপাশের বৃক্ষ ,
ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদের মতো সরু পাতিহাড় -
নিয়ে শীর্ণ গরুর পাল,পাথর ভাঙা সুর তুলে
রাখালের বাঁশি আর যা আছে দৃশ্য ও অদৃশ্যমান ।
প্রতিটি নিঃশ্বাসে নৃত্য করে ছায়া
নিজেকে জড়িয়ে ধরে আবারও স্থির হয়ে বসি
পাল্টে যায় দৃষ্টির পরিমণ্ডল
মনে হয় যেনো আত্মলোভি বানিয়ার দেশে
হাপড়ের অগ্নি বীজে ওম দিচ্ছে প্রান্তিক সময় !
ধীরে ধীরে পায়ের তলার ছায়া সরে যায়
আমি একটু একটু করে নেমে আসি বিস্তীর্ণ সমতলে
যেখানে ভাতৃত্বের তৃণভূমে দাউদাউ ছুটছে আগুনের ফুলকি ...