জাকিয়া এস আরা এর বোশেখের পদাবলী
সামিনা এবং বোশেখ
না, এভাবে কাঁদেনা সামিনা
এভাবে কাঁদলে নেভেনা মনের আগুন।
দেখো দেখো ধ্রুপদী কমলা রোদ এসে
আলিঙ্গন করে যাচ্ছে তোমাকে ।
এসে গেছে বুঝি তাপস বোশেখ, উদ্দামে
উল্লাসে, ওঠনা, সামিনা অশ্রু ফেলো মুছে
শপথ নাও নতুন করে কিশলয়ের সাথে ।
উবে যাক সব নিরাশার বাণী,আশা জাগুক
হতাশ মনে, পদ্ম ফুটুক তাপিত জলে,বাজুক
শ্যামের বাঁশি বিরহী মনের বনে
অঙ্গার হোক বেদনাগুলো দাবদাহনে !
সামিনা, বাঁচো আবার এই বোশেখে রাধিকা হয়ে!
একটি বোশেখ দুপুরে
একটি বোশেখ দুপুরে,আমি আধো ঘুমে,
আধো জাগরণে,ক্ষীণ স্বরে শুনি বিরহী
ঘুঘুর ডাক,কাঁচা আমের ঘ্রাণে চারদিক
মৌতাত,মাথায় ঘুরছে রবিবাবুর গানের
লাইন, " চক্ষে আমার তৃষ্ণা ওগো তৃষ্ণা
আমার বক্ষ জুড়ে",স্মৃতির এলব্যাম
হাসছে বত্রিশ পাটি দেখিয়ে ।
এদিকে আমার মেয়েবেলার নিষিদ্ধ
খেরোখাতা, পুড়ছে ধীরে ধীরে, তাপদহনে,
হয়ত বা একটি নতুন খাতায় লেখা হবে
অবশেষ জীবনগাথা, এই মাতাল উদ্দাম
বোশেখে আবার নতুন করে।
কবি : জাকিয়া এস আরা
দহন
এক বোশেখ দুপুরে পাথর স্বভাব ডোরবেল
বেজে ওঠে, টুং টাং, টুং টাং---- - - ----
নির্জন দুপুরে চোখে তখন রাজ্যের ঘুম!
জানালার পাশের কাঠচাঁপার সুবাস আসছে
ভেসে,রাক্ষসী রোদ হা করে দেখছে আসমান
জমিন! আমি চোখে জল দিয়ে খুললাম সদর
দরজা,সে এসেছে,ঘর্মাক্ত শরীরে, একরাশ ক্লান্তি
চোখে, আমি জিগ্যেস করি, কেন এসেছো,
এমনধারা নীরস দুপুরে? "সে বললে, কাঁচা আমের শরবত খাওয়াবে,বহুদিন খাইনি, জানো
কেউ তোমার মতো বানাতে পারেনা! আচ্ছা সেই
রাতের কথা মনে আছে? " আমি বললাম," মনে
থাকলে ই বা কী লাভ! অতীত মনের শোকেসে
সাজানো থাকুক, এই তো আছি বেশ! বেঁচে তো
আছি, যতই রোদনভরা অতীত থাক ""!