জুসেফ খানের পাঁচটি ছড়া ।
জুসেফ খানের পাঁচটি ছড়া ।

ছড়াকার জুসেফ খান

নাম: জুসেফ খান (প্রবাসী ছড়াকার)
পিতা: ছড়াকার কাদের নওয়াজ খান
মাতা: সুলতানা খান
জন্ম ২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৬
ঠিকানা: খান মন্জিল,ভার্থখলা, সিলেট


লেখাপড়া :সিলেটের রাজা জি. সি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করার পর ,মদন মোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন ।

পরবর্তীতে মুরারি চাঁদ কলেজ (সংক্ষেপে: এমসি কলেজ) থেকে বাংলা সাহিত্য নিয়ে অনার্সে পড়ালেখা করেন । ১৯৯৮ সনে তিনি আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে পাড়ি জমান । সেখানে নিউইয়র্ক কুইন্স বরো কলেজ এবং নিউইয়র্ক সিটি ট্যাকনিকাল কলেজে পড়ালেখা করে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন ।

২০১১ থেকে তিন পুত্র এবং এক মেয়ে সহ স্হায়ী ভাবে ইংল্যান্ডের বার্মিংহ্যাম শহরে বসবাস করছেন ।

তিনি আমেরিকা, ইংল্যান্ড থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা এবং বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকা,সাহিত্য কাগজে নিয়মিত লিখছেন।

ই-মেইল : Josephkhan@live.co.uk

Facebook ID : জুসেফ খান ।

প্রকাশিত গ্রন্থ
ছাইপাঁশ(২০১৬),
খড়কুটো(২০১৭),
রকমারি (২০১৮)
সোৎপ্রাস (২০১৯)




বুমেরাং


খাবার খেতে কথোপকথন
স্বামী এবং তার স্ত্রীতে ।
বলেন স্বামী ডাল রেঁধেছো?
হয়নি লবণ !স্বাদ ঘিতে !

বলেছি কতো দেখো না মোবাইল
করবে যখন রান্না !
রান্নায় নেই আজ মসলা কোনও
আসছে খেয়ে কান্না !

স্ত্রী বলেন রেগেমেগে
চোখ কপালে তুলে ।
কি খেতে কি খাচ্ছো দেখো,
নিজেই নিজের ভুলে !

মোবাইল নিয়ে খেতে বসে
ছিলে না অবগত !
ভাতে তুমি দাওনি ডাল !
ঢেলেছো পানি যত !

ডাল না খেয়ে পানি খাবে
মোবাইলই যদি দেখো !
উপদেশটা তাই বলছি তোমায়
নিজের কাছেই রেখো !


ভয়


কেমন যেন অচেনা সবাই
হাত,মুখ,কান ঢেকে !
হাট বাজারেও অল্প মানুষ
এখন আগের থেকে ।

হাত মিলিয়ে খোশ গল্পে
থাকে না কেউ কাছে !
পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলে
একটু তাড়া আছে ।

কোক,ফানটা ঠান্ডা খাবি?
আইসক্রীম চাই সাথে ?
ভাবছি কেন বন্ধুরা রাগে
আমার সব বায়নাতে ?

জানালা,দুয়ার বন্ধ করে
লুকিয়ে সবার থাকা !
সন্ধ্যে হতেই অবাক আমি
রাস্তাগুলোও ফাঁকা !

ভাবছি আমি ভয়টা কিসের
পাইনা ভেবে কিছু !
বলে সবাই কিছুই না ভাই
শীত নিয়েছে পিছু ।


খাঁটি সোনার তল্লাশে


সাধলে গলা হয় না রে গীত
হারমোনিয়াম ধরে,
খেলার মাঠে ঘাম ঝরালেই
খেলতে কি সব পারে !

হিজিবিজি লিখে কি আর
হয়রে সবে কবি,
চিত্রী - সে তো হয় না সবে
আঁকলে শুধুই ছবি !

আলখাল্লা, গামছা পরে
যাওয়া কি হওয়া আলীম,
আসল-গুরু হয় নারে সব
দিক্ না যতোই তালিম ।

খালি কলসী বাজবে বেশি
বাজাও যতো ঠুন ।
খাঁটি সোনা যায়রে চেনা
থাকে যদি গুণ !



উপাধি


ব্যা ব্যা করে ছাগল শুধায়
জাবর কাটা গরুকে,
বলতো ভায়া তোর আমাতে
কে মোটা আর সরু কে ?

গরু বলে স্বাস্থ্য ভালো
তবুও জেনে রাখ্ ,
মানবকুলে আমার অনেক
আছে রে নাম ডাক !

রাগের মাথায় "গরু" ডাকে
যখন, মানুষ একেক জন রে !
গরু জাতির বুকের ছাতি
তখন, ফুলে গর্বে মন রে !

মুচকি হেসে ছাগল বলে
আমিও অনেক ফেমাস ভায়া,
মানুষ তাকে "ছাগল" ডাকে
যার নাই কোনো লজ্জা হায়া !

গরু বলে আমরা ভালো
দিইনা গালি ভুলে !
"মানুষ" নামে গালির রীতি
নাইরে পশুকুলে ।


বদলে যাওয়া কবি


হারিয়ে গেছে শোলক বলা
কজলা দিদি কই ?
বাঁশ বাগানের চাঁদ দেখি না
একলা বসে রই !

রাখাল ছেলে, রাখাল ছেলে
কোথায় গেলে ভাই,
সবুজ শ্যামল ধানের শীষের
ঢেউ খেলা আর নাই !

বোশেখ মাসে হয় না তো আর
এখন হাটু জল,
মামার বাড়ি হয় না যাওয়া
নাই সে কোলাহল !

সূর্যি মামা জাগার আগে
হয়তো উঠি জেগে,
হয়নি সকাল ঘুমুও এখন
কেউ বলে না রেগে ।

চিন্তাধারা বদলে গেছে
বদলে গেছে কবি ।
রং বদলের যুগের হাওয়ায়
পালটে গেছে সবই ।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান