প্রেমিক
তুমি আমাকে
মেঘ ডাকবার
যে বইটা
দিয়েছিলে একদিন
আজ খুলতেই
দেখি তার
মধ্যে এক
কোমর জল।
পরের পাতায়
গিয়ে সে
এক নদীর
অংশ হয়ে
দূরে বেঁকে
গেছে।
আমাকে তুমি
উদ্ভিদ ভরা
যে বইটা
দিয়েছিলে
আজ সেখানে
এক পা-ও এগোনো
যাচ্ছে না,
এত জঙ্গল।
গাছগুলো এত
বড় হয়েছে
যে মাটিতে
আলো আসতে
দিচ্ছে না।
তুমি আমাকে
ঝর্ণা শেখবার
যে বইটা
দিয়েছিলে
আজ সেখানে
মস্ত এক
জলপ্রপাত লাফিয়ে
পড়ছে
সারাদিন।
এমনকি তোমার
দেওয়া পেজ-মার্কের সাদা
পালকটাও
যে বইতে
রেখেছিলাম, সেখানে আজ
কত সব
পাখি উড়ছে,
বসছে, সাঁতার
কাটছে।
তোমার দেওয়া
সব বই
এখন মরুভূমি
আর পর্বতমালা,
সব বই
আজ সূর্য,
সব বই
দিগন্ত …
অথচ আজকেই
যে আমার
লাইব্রেরি দেখতে আসছে বন্ধুরা
আমার পড়াশোনা
আছে কিনা
জানার জন্য!
তাদের আমি
কী দেখাবো?
তাদের সামনে
কোন মুখে
দাঁড়াবো আমি!
১০ নভেম্বর
যে-লেখা
পড়ে তোমাদের
শুকনো চোখে
জল আসবে
সেই লেখা
আমার হাত
থেকে বেরিয়ে
উড়ে ওই
ডালে গিয়ে
বসল।
এখন থেকে
তাকে পড়তে
শুরু করবে
পাখিরা।
শুনে-শুনে
মুখস্থ হয়ে
যাবে গাছেদেরও।
কিন্তু গাছেরা
তো কথা
বলতে পারে
না! কী
হবে?
কী আবার
হবে!
আমি আর
বকুন, দিনে
রাতে, কত
গাছের গুঁড়িতে
কান রেখে
শুনেছি
গাছ, মনে-মনে কবিতা
বলছে…
ঝাউ গাছের পাতা
মিত্রা দিদি, তোমাকে নিয়ে কাব্য
লেখেনি কোন
পুরুষ কোন
দিন।
গলির মোড়ে
বাজেনি সম্মিলিত
শীৎকার, বখাটে
ছেলেদের।
তোমাকে দেখতে
আসেনি পাত্রপক্ষ,
এসেছিল শুধু
মেপে নিতে,
তোমার বুক,
চুল, নিতম্ব
যাবতীয় সব
শারিরিক।
কত বার
গেছ তুমি
কামরূপ-কামাক্ষা ?
কত বার
ছুঁয়েছ তুমি
কাম পীঠে
সিঁদুর ?
কত বার
পাল্টেছ জ্যোতিষি
তুমি ?
কত বার
করিয়েছ জাদুটোনা ?
কত যুগ
উপবাসী তুমি
ঢেলেছ দুগ্ধ,
সুগঠিত শিবলিঙ্গে ?
সে খবর
জানে শুধু,
একলা রাতের
পাশ বালিশ।
পাখিটি আমাকে ডেকে
পাখিটি আমাকে ডেকে বলল তার
ডানার জখম
বলল যে
কীভাবে তার
পালকে সংসার
পোড়া ছ্যাঁকা
কীভাবে পায়ের
মধ্যে ফুটো
করে ঢুকে
এল চেন
ঠোঁট দিয়ে
খাঁচার শিক
কাটতে গিয়ে
ঠোঁটের জখম
দ্যাখালো, বাইরে থেকে আমি নিজ
ওষ্ঠ থেকে
ওম
দিলাম, খাঁচার
দরজা খুলে
তাকে “বাঁচবিযদি
আয়’,
বলে বার
করে এনে
রাখলাম আর
একটা খাঁচায়
সেখানে দুজনে
বন্দি পরস্পর
দোষারোপ করি,
দোষারোপ করতে
করতে বৃষ্টি
আসে, সন্ধে
হয়ে যায় …