তৃষ্ণা বসাকের পাঁচটি কবিতা
গেরিমাটির পথ চলে গিয়েছে, সে পথে তুমি একা চলো,
জলরঙে আঁকা শিশু আর শাল, মাঝে মাঝেই পলাশ,
তুমি সাইকেল চালিয়ে চলে যাও চুপচাপ,
ঝরা পাতার স্তূপের মধ্যে কী নিঃসীম শান্তি,
সেই শান্তির মধ্যে শুয়ে থাকো, একা একা
তুমি আর কোনদিন জঙ্গল থেকে বেরতে পারবে না- এ কথা যারা বলেছিল,
তারাও একে একে এই পথে হারিয়ে গেছে,
তুমি জীবনে কিছু জমাতে পারো নি,
তুমি শুধু আনন্দ র পেছন পেছন ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলে,
এখন সেই ঘরেও ঝরা পাতা জমতে শুরু করছে,
পৃথিবীর সব বাড়ির হাতায় একটা জঙ্গল শুরু হয়,
সবাই সে জঙ্গল খুঁজে পায় না বলে
ঘর ছেড়ে বেরতে পারে না।
এই জীবন, তার নিচে আর একটা, আরও অসংখ্য জীবন লুকিয়ে রাখে,
মৃত্যুঞ্জয় সুইটসের অমৃত কুম্ভের মতো এত আঞ্চলিকতা তোমার জানবার কথা নয়,
জানবার কথা নয় এত ভালবাসার আগুন, তোমাদের বাড়ির পেছনের গোপন পার্কে
কাঠ কুটো ঝরা পাতা আর ছেঁড়া কাগজ হ্লুদ হ্যান্ড বিলের মতো জমা হয়েছে
পুরসভার মশার তেল ঢালা লোকটা থমকে আছে,
তেল ঢালবার মতো নর্দমা উধাও হয়ে গেছে
সেখানে যা হয়েছে তা একটা মনোবিকলন হওয়া কম্পিউটারের চিকিৎসাকেন্দ্র,
সেখানে একসময় আমি খুব যেতাম,
এখন একদম সেরে গেছি বলে যাই না,
কিন্তু উল্টফুটে বসে দেখি
সাদা কমলা টিউনিক পরা দুই বিনুনি
এক ঝাঁক কম্পিউটার সন্ধের ব্যাচ থেকে বেরিয়ে আসছে,
আমি একদম সেরে গেছি বলে,
ওরা আমাকে না চেনার ভান করে,
আমার হাত নাড়াকে উপেক্ষা করে ওরা
তাড়াতাড়ি কালো ভ্যানে উঠে পড়ে,
আমি একদম সেরে গেছি বলে গোপন পার্কের
সাদা সাদা ঘাসের ওপর গড়াগড়ি খাই,
আসলে এই জীবন, তার নিচে আর একটা,
আরও অসংখ্য জীবন লুকিয়ে রাখে।
খুব হাসবো, হেসে একেবারে গড়িয়ে পড়বো,
বোবা কালাদের স্কুলে গিয়ে বলবো আমি অনেক ভাষা জানি,
এমনকি পাখিরও, এই বলে কু কু করে ডাকব, থামব না,
অন্ধদের বাগানে গিয়ে নাচ দেখাবো এমন কি বলবো এই মুখোশ আমি নিজে বানিয়েছি,
জিজ্ঞেস করবো রংটা কেমন দেখাচ্ছে!
যে গ্রামে কেউ বেঁচে নেই,
সেই গ্রামে গিয়ে এক ডেকচি মোমো বানিয়ে বলবো
কে কত খেতে পারবি খা!
গির্জায় গিয়ে নামাজ পড়বো,
মন্দিরে আয়াত আর মসজিদে গিয়ে বলব শরণম গচ্ছামি শরণং গচ্ছামি,
মোট কথা খুব হাসবো, হেসে একেবারে গড়িয়ে পড়বো
আর বলবো ভালো চাস তো আমার সঙ্গে হাস, হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়,
গড়িয়ে পড়তে পড়তে গুঁড়ো হয়ে যা…
সময়সীমা কতক্ষণ? জিজ্ঞাসে বালক,
এই তো যতক্ষণ শ্বাস
যতক্ষণ আকাশ চিদাকাশ,
যতক্ষণ এই পথ,
পাকদণ্ডি, ফুলের পর্বত,
মেঘের সোলো ট্রিপ, ঢেউয়ের প্লেনাম-
ততক্ষণ তোরে আমি ভালবাসিলাম!
আজ আমি নিরুদ্দেশে যাব,
যাব যেখানে চাকা চাকা ফুল
আর জলজ গুল্ম,
যাব যেখানে জলরঙ্গে আঁকা হরিণীর চোখ আর
রাক্ষুসে কাঠবেড়ালির বার্গেন্ডি রঙ,
যেখানে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লে পথ নেই,
শুধু গোপনে গোপনে বয়ে
চলা অষ্টক নদীর কলস্বর,
আমি আজ নিরুদ্দেশে যাব,
আমার অনারণ্যক আমিকে পেছনে ফেলে
একেলাই যাব, এই সুসময়ে।
বাড়ির হাতায় জঙ্গল
গেরিমাটির পথ চলে গিয়েছে, সে পথে তুমি একা চলো,
জলরঙে আঁকা শিশু আর শাল, মাঝে মাঝেই পলাশ,
তুমি সাইকেল চালিয়ে চলে যাও চুপচাপ,
ঝরা পাতার স্তূপের মধ্যে কী নিঃসীম শান্তি,
সেই শান্তির মধ্যে শুয়ে থাকো, একা একা
তুমি আর কোনদিন জঙ্গল থেকে বেরতে পারবে না- এ কথা যারা বলেছিল,
তারাও একে একে এই পথে হারিয়ে গেছে,
তুমি জীবনে কিছু জমাতে পারো নি,
তুমি শুধু আনন্দ র পেছন পেছন ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলে,
এখন সেই ঘরেও ঝরা পাতা জমতে শুরু করছে,
পৃথিবীর সব বাড়ির হাতায় একটা জঙ্গল শুরু হয়,
সবাই সে জঙ্গল খুঁজে পায় না বলে
ঘর ছেড়ে বেরতে পারে না।
গোপন জীবন
এই জীবন, তার নিচে আর একটা, আরও অসংখ্য জীবন লুকিয়ে রাখে,
মৃত্যুঞ্জয় সুইটসের অমৃত কুম্ভের মতো এত আঞ্চলিকতা তোমার জানবার কথা নয়,
জানবার কথা নয় এত ভালবাসার আগুন, তোমাদের বাড়ির পেছনের গোপন পার্কে
কাঠ কুটো ঝরা পাতা আর ছেঁড়া কাগজ হ্লুদ হ্যান্ড বিলের মতো জমা হয়েছে
পুরসভার মশার তেল ঢালা লোকটা থমকে আছে,
তেল ঢালবার মতো নর্দমা উধাও হয়ে গেছে
সেখানে যা হয়েছে তা একটা মনোবিকলন হওয়া কম্পিউটারের চিকিৎসাকেন্দ্র,
সেখানে একসময় আমি খুব যেতাম,
এখন একদম সেরে গেছি বলে যাই না,
কিন্তু উল্টফুটে বসে দেখি
সাদা কমলা টিউনিক পরা দুই বিনুনি
এক ঝাঁক কম্পিউটার সন্ধের ব্যাচ থেকে বেরিয়ে আসছে,
আমি একদম সেরে গেছি বলে,
ওরা আমাকে না চেনার ভান করে,
আমার হাত নাড়াকে উপেক্ষা করে ওরা
তাড়াতাড়ি কালো ভ্যানে উঠে পড়ে,
আমি একদম সেরে গেছি বলে গোপন পার্কের
সাদা সাদা ঘাসের ওপর গড়াগড়ি খাই,
আসলে এই জীবন, তার নিচে আর একটা,
আরও অসংখ্য জীবন লুকিয়ে রাখে।
যেন কিচ্ছুই হয়নি
খুব হাসবো, হেসে একেবারে গড়িয়ে পড়বো,
বোবা কালাদের স্কুলে গিয়ে বলবো আমি অনেক ভাষা জানি,
এমনকি পাখিরও, এই বলে কু কু করে ডাকব, থামব না,
অন্ধদের বাগানে গিয়ে নাচ দেখাবো এমন কি বলবো এই মুখোশ আমি নিজে বানিয়েছি,
জিজ্ঞেস করবো রংটা কেমন দেখাচ্ছে!
যে গ্রামে কেউ বেঁচে নেই,
সেই গ্রামে গিয়ে এক ডেকচি মোমো বানিয়ে বলবো
কে কত খেতে পারবি খা!
গির্জায় গিয়ে নামাজ পড়বো,
মন্দিরে আয়াত আর মসজিদে গিয়ে বলব শরণম গচ্ছামি শরণং গচ্ছামি,
মোট কথা খুব হাসবো, হেসে একেবারে গড়িয়ে পড়বো
আর বলবো ভালো চাস তো আমার সঙ্গে হাস, হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়,
গড়িয়ে পড়তে পড়তে গুঁড়ো হয়ে যা…
ভালবাসিলাম
সময়সীমা কতক্ষণ? জিজ্ঞাসে বালক,
এই তো যতক্ষণ শ্বাস
যতক্ষণ আকাশ চিদাকাশ,
যতক্ষণ এই পথ,
পাকদণ্ডি, ফুলের পর্বত,
মেঘের সোলো ট্রিপ, ঢেউয়ের প্লেনাম-
ততক্ষণ তোরে আমি ভালবাসিলাম!
নিরুদ্দেশে
আজ আমি নিরুদ্দেশে যাব,
যাব যেখানে চাকা চাকা ফুল
আর জলজ গুল্ম,
যাব যেখানে জলরঙ্গে আঁকা হরিণীর চোখ আর
রাক্ষুসে কাঠবেড়ালির বার্গেন্ডি রঙ,
যেখানে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লে পথ নেই,
শুধু গোপনে গোপনে বয়ে
চলা অষ্টক নদীর কলস্বর,
আমি আজ নিরুদ্দেশে যাব,
আমার অনারণ্যক আমিকে পেছনে ফেলে
একেলাই যাব, এই সুসময়ে।