দুটি কবিতা ।। নীহার লিখন
দুটি কবিতা ।। নীহার লিখন

বৃষ্টি হলেই

বৃষ্টি হলেই কালো কামার শালার ঝাপিঘর মনে আসে আমার,পুড়া লোহার শরীরে লকলকে লাল এক কোমলতার আভাস ভেঁসে উঠে চোখে

মনে হয়,এইতো সামান্যই কোনো দূরান্তে তোমার ঘর,যার উঠানেও ছড়িয়ে গ্যাছে এই বৃষ্টির পা, রূপালী ঝুমুর,নিষ্ফলা মিহিন ঝোপে বুলাচ্ছে আঙুলের টপ

বৃষ্টি নামলেই দেখি সহসাই আরও যেন কালো হয়ে যাওয়া কোনো পিচ রাস্তায়,গড়িয়ে নামতে চায় পুরোটা শহর,আমার চোখের দুই অবাধ্য মনি

থেমে গেলে মনে হয়, থেমে গেলো সব; শাদা জলে নিভে গেলো সমস্ত সোনালী আগুন,সব কথা,সব পাখি,সব কলোরব

শুধু বিষণ্ণতা,ভেঁজা এক গাছের শরীর, থেকে গেলো

মালি


অগাস্ট স্পীজ, আমার চোখে সবচেয়ে সার্থক মালি

স্পীজ,নিঃশব্দ মালিটি এক;জল ঢেলে গ্যাছেন বিস্তীর্ণ ভূমিতে,বাগানের চৌদলে সুশোভন গাছের ছায়ায়,অন্তত একটু একটু পাখির ডাক আজ আসছে, পাতায় মর্মরিত হচ্ছে অনেকের ফিরে আসা অস্ফুট ব্যাথাভরা গান।

এক সময় রক্ত আর পেশীতন্ত্র নিয়ে পাখির ঘুম ভাঙার আগেই যারা চলে যেতো; অনন্ত সে ভোর ছিলো তাদের মস্তিষ্কে কিছু মাছ এ্যকুরিয়ামের ঘেরে; সামনে চকচকে কাঁচ,পিছনে চকচকে কাঁচ,চারপাশে নন্দনবিভোর মানুষের সুখী সুখী রেটিনার উল্লাসে ঝারবাতির সুখ।

স্পীজ , নীরব একটি বীজকে ছুঁড়ে দিয়ে গেলেন
তা থেকে জন্ম নিলো বল্লমের মতো অজস্র হাতের পাপড়ি, হাতুরের নীরেট লোহার মতো বোটা , টেলিস্কোপের মতো চোখের অগুনতি ঝুড়ি।

তারপর তারা শিখে ফেললো, নিঃশব্দে যে গাছ বড় হয়ে যায় তার ফল ঘুমন্ত বারুদ,তারপর তারা জেনে ফেললো পথে নেমে আসলে পথ গন্ত্যব্যকে ছোট করে দেয়,তারপর তারা বুঝে ফেললো, মাছ কোনো কাঁচের ঘরে থেকে সমুদ্র পাবে না,তারপর তারা দেখে ফেললো, অনেক দূরেও প্রস্তুত হয়ে আছে মোটা জিঞ্জির।

এমন অনেক কিছুই তাদের সংবেদে লেগে গেলে পরে ;
পৃথিবী জেনে গেলো একটি তথ্য; তার বুকে জন্ম নেয়া শ্রেষ্ঠ মালিটি স্পীজ, আর

মাটিতে সবচেয়ে উজ্জ্বল ফুলটি এখন মে মাসের প্রথম প্রহরেই ফোটে, যার গন্ধে শক্ত পাথর সব মানুষ হয়ে যায়


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান