(দুই)
হাব-ভাবে বুঝলাম, পারু আরও কিছুক্ষণ থাকার ইচ্ছে ছিল | উত্তরের জানালা দিয়ে শফীর নৌকা ঘাটে ভিড়তে দেখল | সাথে আরও লোকজন | ওমনি পারু চলে গেল | এক মুহূর্ত দাড়িয়ে ছিল আমার দিকে তাকিয়ে | একটা কোমল হাগ দিলাম ওকে | ঠিক পূর্ণিমার মতই হাসল । উভয়ের ধমনীতে রক্তের উষ্ণতা বাড়ল, গতি সঞ্চালন দ্রুত হল | লোকে বলে, তা স্বাস্থ্যকর |
শফি ইচ্ছে করেই অন্ধকার নামার পর এসেছে | গোপনীয়তার জন্য , নিরাপত্তার জন্য | ডানে - বামের বাড়ি দুটি 'বাকশালে'র লোকদের | একটা রিলিফ চোর, অন্যটা যুবলীগের ক্যাডার | পুলিশের স্পেসিয়াল ব্রাঞ্চ কিংবা রক্ষীবাহিনীর ভয় তো আছেই |
পূর্ণিমা রাত নিয়ে আমার এক কবিতা শফি পড়েছিল| দৈনিক গণকন্ঠে | সে জানে আমি আকাশের নিচে দূর্বা ঘাসের উপর বসে বসে পূর্ণিমা চাঁদ দেখতে ভালবাসি | পূর্ণিমায় চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসে। তাই জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
শফী বলল, খাবার নিয়ে বিলে চলে যাব | দু' টো নৌকায়, ওখানে বসে খাব |
-" খাবার কী ? " একজন প্রশ্ন করল |
- " কলমি শাক, সাথে শুকনা লঙ্কা মরিচ ভাজা, আর ছোট মাছের ঝোল "|
গেরস্থ ঘরে এমনিতে বুক অব্ধি রাতের খাবারের প্রচলন । সারা দিন বাইরে কাজ করে তো (?), তাই।
-" হারিকেন নেয়া যাবে না | শুধু চাদের মিটিমিটি আলোয়ও খাওয়া যাবে না | ছোট মাছে কাঁটা - | " একজন বলল |
-" ঝামেলা এখানেই শেষ করে যেতে হবে |" - বললাম | সবাই রাজি |
শফীর ছোট ভাই, পাঠশালায় পড়ে, সে আজ আশে - পাশের জলা হতে মাছ ধরেছে | একেবারে তাজা মাছ |
শফিদের বাড়ির সামনে জলে ভাসা কলমি শাক | আমার প্রিয় | হলের ডাইনিং রুমে এ রুচির খাবার সচরাচর পাওয়া যায় না |
১৭ই মার্চের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বাসভবনের সামনের বিক্ষোভ ঘটনার পর তেজকুনিপাড়া মামার বাসা আমাকে ভয়ে ছাড়তে হয়। এর পর এ জাতীয় খাবারের দেখা সহজে পাই না | গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বিভিন্ন হলে বন্ধুদের রুমে থাকতে হয় | রুম উদল-বদল করে ।
যাক, সবাই এক সাথে পাটি বিছানো খাটে আর পাশের বেঞ্চির উপর বসে পরলাম | খাওয়ার সময় আমাকে কাঁচা মরিচ এনে দিতে বললাম | শাকে ভাতে আমার পোড়া মরিচ খুব একটা চলে না | শফী এনে দিল কাঁচা মরিচ | একেবারে তাজা | দারুন | খড়ের ছাওয়া দু' চালা রান্না ঘরের সামনে দাঁড়ান গাছ থেকে | তার মা' র লাগানো গাছ | অরে-বাব্বা ! প্রথম কামড়েই টের পেলাম | যেমন ঝাল, তেমন স্মেল | ওটার গ্লেমারই আলাদা | জাত ভাল | দেখা-দেখি আরও দু' এক জনে নিলো | কেহই পুরাটা খেতে পারল না | সিলেটের নাগা মরিচের মত, গজবি ঝাল | সবার কপালে মিহি ঘাম নাকে শ্লাস বের হল | আমারও | পাতলা মসলার পাঁচ-মিশেল ছোট মাছের ঝোল অনেক দিন হয় খাই নি | আঙ্গুল চেটেই তৃপ্তি করে খেলাম | অর্ধেক ভুরি, বুকের নিচ তক | অনেক তৃপ্তি করে | তারপর নিজেদের কাজে যাবার পালা ।
আমাকে নিয়ে বার জন | ছ' জন ছ' জন করে দু’ নৌকায় | আমি নৌকা বাইতে পারি না | শফি ও আলম বৈঠা হাতে নিলো | রুপালি রেশমি জ্যোৎস্নার নীচে তর তর করে নৌকা চলল | মিনিট দশেকের মাঝেই বিলে পৌঁছলাম | বর্ষায় পানিতে তই-তই | গভীরতা তেমন নেই | হেমন্তে ছেলেরা ফুটবল খেলে এক পাশে | রাখাল গরু চড়ায় | বিলটা বেশি বড় নয় | কেউ কেউ রাতের বিলকে ভয় করে | ওখানে নাকি ভূত আর পরীরা কদাচিৎ আগুন দিয়ে খেলা করে | এর এক কোনে বিশাল কদম গাছ দাড়িয়ে আছে | চারপাশে নিচে কিছু হিজল গাছ | এর সবুজ ডাল- পালা জল ছুঁই ছুঁই | জ্যোৎস্নার বন্যায়ও একটু অন্ধকার এই কদম তলায় | ওখানেই নৌকা নোঙ্গর করলাম| চারদিকে সাদা লাল শাপলায় ঠাসা | বাতাসে আদিমতার এক ধরনের সোঁদা ঘ্রাণ; যা শহরে কখনও পাওয়া যায় না। এক অপূর্ব আবহ | মনে হল ফ্রান্সের ক্লদ মনেট চিত্রের কথা | মনে হল এমন রাতে কোন মুনি ঋষি বাউল ঈশ্বরের সন্ধানে এমন জায়গাতেই একাকী আসেন।
সাথীদের বললাম ওখানে সিগারেট না জ্বালাতে | বাতাসে ভাসমান কদম্ব ফুলের ঘ্রাণ নষ্ট না করতে | রাতে এ ফুলের ঘ্রাণ নাকি সেই খিলক্ষেতেও পাওয়া যায় | দু' টিই ধানের নৌকা | ছাউনি নেই | পাশাপাশি দাড় করালাম |
চারিদিক নিস্তব্ধ | আমি নিচু গলায় আলোচনা শুরু করলাম | এর মাঝে মগডালে পাখির ডানার ঝাপটানোর শব্দ হল | আচমকা | মিনিটের মত | শফি বলল, হয়ত শকুনগুলা বক বা শালিকদের আক্রমণ করেছে |
আগামী মাসে পার্টি লাইন নিয়ে আলোচনা | এই অঞ্চলের রাজনৈতিক কমিশারদের নিয়ে | কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন | বিরাজিত অবস্থায় বিপ্লব কী ভাবে এগিয়ে নেয়া যায় | সেখানে আমাদের ফোরাম-এর বক্তব্য কি হবে - তা ঠিক করার জন্য |
সরকার জরুরি অবস্থা দিয়েছে | বিরোধী কর্মীদের গ্রেফতার করছে | চারদিকে জনগণ হতাশ, অতিষ্ঠ ও বিক্ষুব্ধ |
তেজগাঁএর শ্রমিক নেতা আজম ভাই বললেন , " শ্রমিকরা মুক্তি চায় | কিন্ত তারা শেখ মুজিবের পরিবর্তে আর কাউকে সহজে বিশ্বাস করতে চায় না | তাই সেনা আর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লড়াই করতে হবে | অভ্যুত্থান ঘটাতে হবে, সরকারকে উৎখাত করতে" |
মশার উৎপাত যৎসামান্য টের পেলাম | প্রবল বাতাসের কারণে আক্রমণটা তেমন নেই | আমি পা দু'টো পাশে ঝুলিয়ে জলে ডুবিয়ে বসেছিলাম কিছুক্ষন | অন্য রকম আরাম লাগে | কিছুক্ষণ পর টের পেলাম , শিশু মাছগুলো পায়ে ঠুকর দিচ্ছে | পুলক লাগছে। ভাল লাগার জন্মগত অনুভূতি মানুষ ও মাছের প্রাগৈতিহাসিক সম্পর্কেই প্রগাঢ় করে দিচ্ছিল।
ও-মা, একটু পর মাংসল শরীরের শীতল কোমল স্পর্শ পেলাম, পায়ের পাতায় | ভাবলাম হয়ত শিং বা পাবদা মাছের নরম শরীর | তাকালাম চাদের আলোয় স্বচ্ছে জলে- ওটা কি (?) | দেখে বুক কেপে গেল | সাপটা এই যে একে-বেকে তর - তর করে চলে গেল | আঘাত করে নি | হয়ত আহারের জন্য মাছ শিকারে এসেছিল |
ভাবলাম ডাঙ্গায় হলে নিশ্চয় মানুষের হাতে ওটা মারা পরত। সাপকে মানুষ সনাতন অভ্যাসে মনে করে, সাপ হল মানুষের শত্রু, ক্ষতিকর।
ঃ ' নিম্ন মধ্যবিত্ত গন-মানুষের অংশগ্রহণ ও আদর্শবান পার্টি ছাড়া বিপ্লব হবে না | ষড়যন্ত্র করে তা হয় না |', বলল কামাল | সে শহীদ তিতুমির কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র।
ঃ ' এবং পার্টি গন-মানুষের আস্থা অর্জন এবং সঠিক রাজনৈতিক পরিকল্পনা থাকতে হবে, বললাম | সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে চে’ গুয়েভারা বা চারু মজুমদারের পথে বিপ্লব সফল হবে না | চোখের সামনেই ইন্দিরা গান্ধী পুলিশ দিয়ে সহজেই সেই নকশালবাড়ি - খয়েরবাড়ি সশস্ত্র কৃষক বিদ্রোহ নির্মূল করল | গন-মানুষ এগিয়ে আসেনি বিপ্লব রক্ষার জন্য। ওখানে গন-কৃষক সম্পৃক্ত ছিল না | সি. পি. আই. (এম-এল)-এর ভুল লাইন ছিল | '
ঃ “ প্রধানমন্ত্রী ও তার চার-পাঁচ সহযোগীকে বন্দী করলেই সর্বহারাদের ক্ষমতা দখল সফল হবে | পরে আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যাবে | এ অবস্থায় ঊনসত্তরের মত বা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মত জনগন সম্পৃক্ত করে সশস্ত্র বিপ্লব কাল্পনিক বিষয় |' আযম বলল |
ঃ 'রাশিয়ায় বিপ্লবের চেষ্টা বার বার হয়েছে। ১৮২৫-এর ২৬ ডিসেম্বর জারের সৈন্যবাহিনীর একটা অংশ বিদ্রোহ করেছিল নতুন জার নিকোলাসের বিরুদ্ধে, সে বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়। তারপর যে ব্যর্থ বিপ্লব হল ১৯০৫-এ, তার আগেই লেনিনের বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক শ্রমিক দল ভাবাদর্শের দিক থেকে দু ভাগ হয়ে গিয়েছিল। প্রথম মহাযুদ্ধের শেষপাদে লেনিন মনে করলেন ওই হল বিপ্লবের অমোঘ মুহূর্ত, এখন না হলে কখনওই নয়। ১৯১৭-র গোঁড়ায় যুদ্ধ-ফেরত ক্লান্ত সৈন্যরা ফিরে এল, কৃষকেরা আর শ্রমিকেরা খেপে উঠল, জারকে তারা সিংহাসন ছাড়তে বাধ্য করল | নানা শহরে তারা সোভিয়েত বা শ্রমিক আর সৈন্যদের সমিতি গঠন করল | কিন্তু ক্ষমতা তাদের হাতে এল না। কেরেন্স্কির নেতৃত্বে মেনশেভিকরা ক্ষমতা দখল করল। পরে নভেম্বরে লেনিনের বলশেভিক বা সংখ্যাগরিষ্ঠদের দল তাদের উৎখাত করে রুশ-দেশের নিয়ন্তা হয়ে বসল। ’ - আমি বললাম |
অনেক কথা বলা হল | ভোর প্রায় দু' টা | এর মাঝে চা-মুড়ি একবার হয়েছে | আমি চাঁদের স্তন ঝরা জ্যোৎস্না মন ভরে খেলাম | পারুর কথা বার বারই মনে পরছিল |
কয়েকজন পার্টির নেতৃত্বের উপর খাপ্পা | অভিযোগ, কর্মীদের মতামত হাই-কমান্ডে দাম নেই | কিন্তু সমালোচনা করার অধিকার থাকলেও পরিবেশ নেই। কর্মীরা ভয় করে। পার্টির হাইকমান্ড চায় তাড়াতাড়ি ক্ষমতা দখল করতে | সর্ট-কাট ওয়েতে | হাইকমান্ড মনে করে, এখন এই পরিস্থিতিতে উনসত্তরের মত গন-উভ্যুথান সম্ভব নয় | তাই সশস্ত্র ঝটিকা অভ্যুথানই সঠিক পথ |
ঃ' শেখ মুজিবের জন্ম দিন - ১৭ই মার্চ এ জাতীয় একটা ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিল পার্টি | হাই কমান্ড জানত না তিনি তখন লন্ডন থাকবেন | গনভবনের বদলে অগত্যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনসুর আলীর বাড়ি ঘেরাও করতে গেল | মিছিল থেকেই গুপ্ত গুলি হল | পরে পুলিশ রক্ষীবাহিনীর প্রত্যাঘাত আর পার্টি মোকাবেলা করতে পারি নি | দু’টা তাজা প্রান চলে গেল।আহত হল অনেক। এটা এক প্রছন্ন হঠকারিতা ছিল| এজাতীয় কিছু করা ঠিক ছিল না ।' – বললাম |
ঃ “ এ জাতীয় কোন সমালোচনা আগামী মাসে কেন্দ্রীয় বড় নেতাদের সামনে বলা যাবে না। সমস্যা হবে’। নাদের বলল।
ঃ' মাসেক যাবতই শুনা যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে একটা কিছু হতে যাছে | যদি এমন কিছুই হয়, তা হলে পার্টির অবস্থান কী হবে?' – কামালের প্রশ্ন |
ঃ ‘ ও ভাবে পেছনের দরোজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করা যাবে হয়ত। পরে সরকারী প্রশাসন চালানোর জনবল পার্টির নেই। বাধ্য হয়ে সে আবার পুরান আমলাদের দ্বারস্থ হতে হবে। এতে সর্বহারা শ্রেনীর কোন লাভ হবে না।দেশে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হবে। ‘ –বললাম।
কিছু দিন যাবতই, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও আমলাদের মাঝে এ নিয়ে চুপি-চুপি কানা-ঘুষা চলছিল, একান্ত বিশ্বাসী বন্ধুদের মাঝে। সেনারা বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দিবে, সিরাজ সিকদার আর জাসদ তাদের হেল্প করবে। ওটা আমরা একান্ত গুঁজবই মনে করেছিলাম ।
ঃ' আগামী মিটিঙে আলোচনার জন্য এই বিষয়টি তুলব | বিদ্রোহী সামরিক বাহিনীকে বা অন্য অপশক্তিকে সমর্থন করতে পারি না | তাতে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে |' -বললাম |
ঃ' মুজিবকে বন্দী করলে সেনাবাহিনী তথা জাতি খুশি হবে | তখন আমরা বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারব |' শ্রমিক নেতা আজম ভাই উত্তেজিত গলায় বলল |
ঃ' সরকার গঠন ও তা চালানর সক্ষমতা নেই জাসদের | বিপ্লবের অপমৃত্যু হবে | দেশের ক্ষতি হবে |" -বললাম |
বিভিন্ন মার্ক্সবাদী দল ক্ষমতা দখলে বিভোর ছিল ১৯৭১ থাকেই | সাম্যবাদী চেতনায় গন সমর্থন এদের তেমনটা ছিল না |
ভোর হতে বেশই দূরে নেই | তাঁরার দেখা পেলামই না রাতে | হিজলের বনে জোনাকিরা উড়ছিল | এক দল কালো বাদুর মাথার উপর দিয়ে ফিরছিল | হিস-হিস আওয়াজ শুনছিলাম | ঘণ্টা কয়েক বাকি ফজরের | একটু ক্লান্তি পাচ্ছিল |
আমাকে শফি তার বাড়িতে নামিয়ে চলে গেল | তারা গ্রামের শেষ মাথায় এক বড় বাড়িতে রাতের বাকি সময়টুকু বিশ্রাম করবে | সকালে যার যার গন্তব্যে চলে যাবে | সরকারের ভয়ে অনেকেই আমাদের আশ্রয় দিতে চায় না ; বিভিন্ন অজুহাতে |
বাকি রাতে ঘুম হল না | একা ঘরে | নানা কল্পনায় নানা চিন্তায় | বিপ্লব নিয়ে নয় | পারুকে নিয়ে | ভোরে আকাশ ফরসা হবার পর একটু তন্দ্রা পেয়ে ছিল | তখনই নিদ্রায় রাত্রি-স্খলন হল | লুঙ্গি নষ্ট হল | মহা সমস্যা | এ অবস্থায় বাসে ঢাকায় ফিরব কী করে ? গায়ে বিশ্রী গন্ধ |
চালাকি করে শফিকে বললাম , ' একটা লুঙ্গি আর গামছা দাও | অনেক দিন হয় বর্ষার জলে স্নান করি না | আজ করব | '
দাপা-দাপি করে সাঁতরালাম | দু' জনই | ওদের এক পাল হাস প্যক -প্যক করে কিনারে খাচ্ছে | ওরা আমাদের কোন ভয় করছিল না | কোনটা এখানে ডুব দিচ্ছে আর ওখানে ভেসে উঠছে | কয়েকজন অর্ধ নগ্ন ছেলে দূরে ত্রিকোণ জাল নিয়ে মাছ ধরছিল। কেউ কচুরি পানা কেটে ছোট ডিঙ্গি করে বাড়ি ফিরছিল; মনে গরুকে খাওয়াবে। আমি কিছু শাপলা তুললাম | হলে নিয়ে যাব | ক্যান্টিনের বয়কে বলব ছোট মাছ এনে রান্না করে দিতে |কিছু বকসিস দিয়ে দেব | হলের যা খাবার- দাবার না- !
গামছা দিয়ে যখন গা মুছছিলাম পারু দেখছিল আড়াল হতে | ও গরুর গোয়াল ঘরে কি যেন করছিল | শফির লুঙ্গী পরতে দেখে পারু ব্যাপারটা বুঝতে পারল | উঠানের ঐ মাথা থেকে মুচকি হাসল,