নজির আহমেদ এর গুচ্ছকবিতা
নজির আহমেদ এর গুচ্ছকবিতা
ন্যায়-অন্যায়

অন্যায় বলল ন্যায়কে,খবরদার 
সত্য কথা বললে কিন্তু তোর খবর আছে! 

ন্যায় ভীষণ সংকোচে 
লুকিয়ে আছে আমার পায়ের কাছে;
শরীর কাঁপছে ত্রাসে।

ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমিও স্বাক্ষী হয়ে বিপদে আছি। 
ছাপোষা মানুষ ভাবছি,
কী করবো এখন,আমি'ই বা লুকোবো কার কাছে?


শূন্যতা 


লাউপাতা হৃদয়ের টান আর রজনীগ্ধার ঘ্রাণ 
খুঁজতে গিয়ে দেখি 
ভাঙামুখ ঝুলন্ত বুক একতারা লাউ
যেমন বীজের ভিতর গাছ,গাছের ভিতর বীজ। 

কুমড়ো ফুল ও সর্ষে ক্ষেতে প্রজাপতি উড়ছে 
পাতাঝরা সজনে ডাঁটা 
চাল কুমড়ো আর কচুরিপানায় কাগজের ফুল
পাড়াময় ঘুরে ঘুরে হাতড়াই

এতটুকু ঘ্রাণ নেই,স্বাদ নেই,ছায়া নেই,আছে শুধু 
একটার পর একটা ভুল। 
বারবার মানবিক কারণে আপনক্ষতে নুন ছিটাই
                 নিরবতার গোপনে চিল্লাই
শূন্যতাকেই করে যাই কবুল কবুল কবুল.........।


তোমাকে 


ঘরের ভিতর ঘর,
প্রেমের ডাকে নিচ্ছি কদর।
দয়ালুর দয়া কই,
কেবল ধরতে বলছো সবর।

সময় কই আর,
কালবেলাতে মৃত্যুর খবর।
প্রতিশ্রুতি চাইনা,
তোমাকে চাই দয়ার ভিতর।


যার যার তার তার


প্রত্যেক মানুষ গোপনে গোপনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে
প্রকাশ্যে হাস্যমুখ নজর কাড়ে।
প্রত্যেক মানুষ আপন ভূবনে স্বাধীন,তারা ইচ্ছেমত 
ঘুরে ফিরে নিজ আকাশে উড়ে।

প্রত্যেক মানুষ কিভাবে নিজের মধ্যে বারবার মরে
কিভাবে চেষ্টা করে বাঁচার।
কিভাবে ভাসতে ভাসতে ডুবে যায়,ডুবতে ডুবতে ভাসে 
এ খবর যার যার তার তার।


প্রস্হান


অভিমান করে দূরে এসে দেখলাম, 
কতটুকু ছিলাম। 
দ্রুততার সঙ্গে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়,
ভুলে যায় সকলে। 

তাই দেখে ভাবলাম মিছে সংসারে 
ক্ষণিকের জন্য, 
আর ফিরে যাবার কী এমন দরকার আছে;
বরং থেকেই যাই।

ভাবনানুযায়ী থেকে গেলাম এইখানে, 
তোমাদের পরপার।
যাকে বলা হয়ে থাকে অনন্ত অসীম জিন্দেগী;
কর্মফলের পুরস্কার! 


মর্মযাতনা


শিকায় তুলে রেখেছি মাটির হাঁড়ি 
মর্মযাতনা মিউমিউ ডাকে,বাবুই ঘুড়ি ও ছড়ুই ভাসে 
শিল্পিত হাওয়ার দুপুরে। 

অদ্ভুত সব চিন্তা ও চেতনার সবুজাভ পথ ভ্রমণশেষে
গাঙকূলে ফিরে আসি। 
রক্তের বানে বাঘ,মাংশের টানে শকুন গুটিগুটি পায়ে
বিড়ালের কন্ঠে উড়ায় নিশান।

ঈগল উড়ছে,পানকৌড়ি ডুবছে,মাছরাঙা অস্হির 
ধ্যানমগ্ন বক,সাপ ও নেউলের সহাবস্থান 
কিন্তু ঘরের শত্রু বিভীষণ! 
সময় বিলায় মর্মযাতনা টোপ খাওয়া মাছের মতন। 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান