কবি : নাসরীন জেবা
১.
দুঃখী কবির শব্দগুলো দামী।
কষ্ট পুড়ে উঠছে জমে ধোঁয়ার কুন্ডলি!
শব্দ তোমার জ্যান্ত হয়ে ওঠে,
সন্ধ্যা হলেই হাজার তারা জোনাকপোকার সাথে।
আহা! তোমার জন্য আমার বড্ড গাঢ় মায়া।
কষ্ট তোমার চাঁদের গায়ের লেপা কালিমা।
নদীর জলে আমার ছায়া তোমার মতোই কাঁদে;
দুঃখী কবির শব্দ কেবল বাঁধে তোমায় আমায়।
দিগন্তের ঐ সূর্য ডোবা গোধুলী সন্ধ্যাবেলায়
উদাস এক রাখাল তোমার কষ্ট বাঁশি বাজায়।
তোমার আকাশ জুড়ে কেবল মেঘের ঘনঘটা ;
কষ্ট জমে ধুসর রঙের আনাগোনা বাড়ে।
বুকের ভেতর ঝড় উঠেছে, অশ্রু বরিষণ ;
শব্দগুলো বিকিয়ে না হয় সুখের বাড়ি চলো!
ঢের হয়েছে এবার থামো, কাঁদ মনের সুখে;
দুঃখী কবি তোমায় দিলাম মেখে প্রাণের আবীর।
২.
বিকেল হলেই খুব আয়োজন করে তোমার জন্য অপেক্ষা করতাম।
ভালো করেই জানতাম তুমি আসবেনা, তবুও!
তোমাকে মনে করে আমার কাটতো অপেক্ষার প্রহর।
কল্পনায় তোমার ঠোঁটে চুমু আঁকতে আঁকতে দেখতাম
আচমকাই তুমি আমার বাড়ির সামনের ইটগাঁথা পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছ।
ছুটে গিয়ে খুব জানতে ইচ্ছে করতো,
শুনছ! তুমি কি আমাকেই খুঁজছ?
স্তব্ধ হয়ে দেখেছিলাম শুধু তোমার স্মিত হাসি
আর উজ্জ্বল চোখ দুটো!
অজান্তেই বাড়িয়ে দিয়েছিলাম দুটো হাত, আর তোমার জন্য জমিয়েছিলাম অপ্রকাশিত শব্দমালা।
আমার মৌনতা চিৎকার করে জানিয়েছে বারবার, এ বুকের খবর।
তোমার চুলে ভোরের আলো খেলে যেত আর ভাবতাম ;
সন্ধ্যা হলে জোনাকপোকায় তোমার ঘর ভরাবো।
লুকিয়ে দেখবো তোমার বিস্মিত মুখ। আমার অনুভূতির সাতরঙ, প্রজাপতি হয়ে উড়তে থাকবে উড়তেই থাকবে।
শুকনো পাতার শব্দ চমকে দিয়েছে সেদিনও।
এই বুঝি তুমি হেটে যাচ্ছ, কি জানি তুমি হয়তো আমাকেই খুঁজছ!