কবি : পল্লব সেনগুপ্ত
বাকীটা শুরু হবে এই গ্রাম থেকে
পথ কাঁটা জোছনায় কেউ হেঁটে যাচ্ছে
দুদিকেই অন্ধকার,
হাতে মিটমিট তারা বাতিটি জ্বলে তাতেও শরীরের ছায়া পড়ে,
বেখায়ালে লক্ষ্য করি না তাকে,
অদ্ভুত কিছু পড়শী লুকিয়ে থাকে নিজের ভিতর
তারা প্রয়োজনে সাহায্যের হাত বাড়ায়, আমার শরিরী বিদ্যার সবটা সাইন্স প্রকৃতি
যুক্তি ছাড়া কিছু ঘটে না এখানে,
প্রযুক্তির খেলা খেলে সভ্যতা এগোয়,
বলি না, নিয়মকে খুঁজে খুঁজে শিখেছি আধুনিক পথ চলা,
কেন নির্বাসিত করতে চাও, বলতো, আমার গ্রাম থেকে আমাকে?
জানি তুমি জোছনা বানাতে পারো
নিজস্ব নিয়মে শিখে গেছো আঁধার তাড়াতে
এটাই করে দেখাও না এখানে, এই গ্রামে,
বাকীটা শুরু হবে এই গ্রাম থেকে।
ডাকলেও কেউ আসবে না
ডাকলেও কেউ আসবে না
যার যেখানে যাবার সেখানেই যাবে সে
আকাঙ্ক্ষারও নির্বাসন হয়
স্থায়ি কোন দ্বীপে দ্বীপান্তরিত হয় হৃদয়
একবার সাঁতার কাটতে জানলে আর ভয় নাই
দিব্যি সখ্যতা বাড়িয়ে নেয়া যায়
জলের সাথে, মাছের আর ঝিনুকের সাথে লাল কাঁকড়া আর সিগালের সাথে
জলের উচ্চতা দেখে টের পাওয়া যায় নাভীর স্পন্দিতা,
পঁচলা গন্ধটা অভ্যাস হয়ে আসে,
কবে ফুল ফুটেছিল
গন্ধে মেতেছিল মন, ভেবে ভেবে রাতটা পারি দিয়ে ভোর ছুটবে সমুদ্রের দিকে
আর সমুদ্র তখন লবনের পরিমাপ ভয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখবে মৃত ঝিনুকের খোলে,
কবে পাখি এসে কোন জোছনায় অভিমান ভাঙাবে তার?
ভালবাসা দল বেঁধে আসে না
ভালবাসা দল বেঁধে আসে না, একাকী ভিতরেই দরজা খোলে,
আবছা একটা ছবি আর ছায়া পাশাপাশি হাঁটতে থাকে
যুদ্ধ বাঁধে বোধে আর কল্পনায়
শেষ তক জয়ী হয় মুগ্ধতা, তখন
কেউ আর একাকী হাঁটে না,
যুগল হাঁটাচলায় স্বপ্ন বাঁধে, বোধের কিনারে
জল বাড়ে
ঢেউ এসে লাগে, একটা নতুন চমক, নড়েচড়ে উঠে পুরোনো সব কিছুকে পিছে ফেলে,
জন্মেরো আগে তার জন্ম হয় বোধে।
এখানে এসে রঙ পাল্টায় ভালবাসা
আগের চেয়ে সংহত হয়, হাঁটি হাঁটি পা পা করে
সে যেখানে পৌঁছায় সেখান থেকে আর পিছাতে পারে না,
ভালবাসা তখন আর একা থাকে না,
ভালবাসা আশা হয়ে পাশাপাশি বাড়তে থাকে, তখন আর বিশ্বকে মনেই হয় না বড়,
আমার ভালবাসার কাছে সে তখন নিতান্ত শিশু, তাকে যত্নে আগলে রাখতে হয় বুকে।
একা আমিই পারি
মাঝেমাঝে হৃদয় প্রেমিক হয়ে উঠলে এদিক ওদিক খুঁজে দেখি
কেউ দেখে ফেললো কিনা, চোখ বন্ধ করে নিজেকে আড়াল করি, সুন্দরের অন্ধকার দিকটা হলো টেনে নিয়ে দোষী করে দেয়,
গোলাপকে বলা যায় সুন্দর
পাখি ও মাছকেও,
শুধু তোমাকে বললেই চোখ থেকে সরে গিয়ে চাঁদ বেরিয়ে আসে আগুন,
কি বোঝাতে চাও তুমি প্রকৃতির বাইরে কোন কিছু,
পোড়াতে পারবে আমি বললেই যত দোষ
আগুন শব্দ থেকে শব্দার্থ টীকা তুলে নাও, আমাকে দেখতে দাও নিজের মতো
মুগ্ধতার স্তবে যদি জয় করা যায় হৃদয়, দেবী না হও প্রেমিকা তো হতে পার
জল যুবতীর উপচে পরা জলে একবার যদি ভিজাও
আমি স্নান সেরে তোমার পায়ে বসবো অঞ্জলি দিতে
হৃদয় জ্বেলে সুগন্ধি ছড়াবো, এই যে দেখছো ফুল সাধারণ নয় দৃষ্টিতে ফোটা,
মন্ত্রে তার কথা বলতে দাও, ভালবাসি,
একা যত সুন্দরই হও জয় করতে পারবে না কিছু, না জীবন না সময়
একা আমিই পারি তোমায় জয়ী করে দিতে।
এর নাম আপোষ তো নয়
যে জায়গাটায় ছিলে সে জায়গাটায় নেই
একটু সরে গিয়ে জায়গা করে নিয়েছো নিজের মতো করে,
এই যে ভেঙে চুড়ে নিজেকে বুঝতে শেখা, এর জন্যও সাহস লাগে,
নদী তীরে বসবাস সবাই পারে না,
গ্রামে গিয়ে সখে একদিন কাটানোটা দারুন
থেকে যেতে হলে দেখতে, এর আঁধার কতটা গাঢ়,
তার সাথে যুদ্ধ প্রতিদিন,
প্রতিদিন সলতে জ্বালো
একটা অদ্ভুত বেদ নিজের মধ্যে জায়গা করে নেয়নি এও কি কম সৌভাগ্য
নিলে অহংকারে থেমে যেতে তুমি,
ভাঙা হারমোনিয়ামের সুরটাও মধুর হয় যদি তুমি গাইতে পার
যে বিনির্মাণ জানে, সে ঘরকে স্বর্গ করে তোলে
তুমি অন্ধকারকে গ্রাস করেছো সৌন্দর্যে,
মানুষকে কখনো কখনো মিটিয়ে নিতে হয় নিজেকেই,
এর নাম আপোষ তো নয়।