বদলে যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রচলিত ধরন
বদলে যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রচলিত ধরন

ডেঙ্গুর প্রকোপ এ বছর বেড়েছে। এডিস মশা বাড়ার কারণেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এডিস মশা বাড়ার কারণ-মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকার কারণে ওইসব জায়গায় মশার উৎপাদন হচ্ছে।

একটি মশা হাজার হাজার ডিম পারে। একটি এডিস মশা যতগুলো ডিম পারে সবগুলো এডিস মশা হয়। আর মশা বাড়ার কারণে ডেঙ্গু বাড়ছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার প্রচলিত ধরন বদলে যাচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ। ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। আগে ডেঙ্গু হলে প্রথমে উচ্চমাত্রার জ্বর, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথা, শরীর ব্যথা, হাড্ডিতে ব্যথা ও গায়ে র‌্যাশ হতো। পরবর্তী সময়ে চার থেকে সাত দিনের মধ্যে ডেঙ্গু হেমোরেজিকের নানা লক্ষণ প্রকাশ পেত। কিন্তু চলতি বছর জ্বর ওঠার এ ধরন পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর ওই রকম ব্যথা অনেকের ক্ষেত্রেই অনুভ‚ত হচ্ছে না। কিন্তু যখন হাসপাতালে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয় তখন দেখা যায় তার শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে।


তিনি বলেন,

স্বল্প সময়ে ‘শক সিনড্রোমে’ আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু রোগীর হার্ট, ভাল্ব, কিডনি, লাংসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাচ্ছে। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তির পরও রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রচলিত ধরন যেন বদলে যাচ্ছে।


এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

জ্বর এলে এখন অনেকেই অবহেলা করছে। ডাক্তারের কাছে না গিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো জ¦রের ওষুধ খাচ্ছে। না কমলে পরে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে, আগে যাচ্ছে না। পরে হাসপাতালে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পায় ডেঙ্গুর জীবাণু ধরা পড়ছে।


তিনি আরও বলেন,

ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে হবে। এ জন্য বাড়িঘর পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে ডেঙ্গু না জন্মাতে পারে। দিনে ঘুমালেও মশারি দিয়ে ঘুমাতে হবে। বাচ্চাদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যাতে বাচ্চাদের মশায় না কামড়াতে পারে। তিনি বলেন, নিজের বাড়ি নিজেকেই পরিষ্কার রাখতে হবে। সিটি করপোরেশনকেও বিষয়টির প্রতি নজর দিতে হবে। মশক নিধন জোরদার করতে হবে।


সরকারের কিছু করণীয় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,

সরকারকে মশক নিধন জোরদার করতে হবে। তবে সরকার তো একা সবকিছু করতে পারবে না। প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন হতে হবে। নিজের ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। ফুলের টবে যাতে পানি জমে এডিস মশা উৎপাদন হতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।

অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ

ডিন, মেডিসিন অনুষদ বিএসএমএমইউ

সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান