কবি : নাহিদা আশরাফী
ও পারমিতা বসন্ত আসছে...
কোথাও ডিসকাউন্ট আছে? না না তোমাদের তথাকথিত মল, রেস্তোরাঁ বা স্পা হাউজে নয়। ফকিরাপুল অথবা আজিমপুরের মাছ বাজারে। মা ক'দিন ধরেই মাছের কথা বলছিলো। নিদেনপক্ষে কাঁচাবাজারে কোন অফার?
ও পারমিত ফাগুন নেমেছে...
বাবার অসুস্থতাটা বেড়েছে খুব। অসুধের দোকানে আর যে বাকি দেবে না। অন্তত হাপানির স্প্রেটাতে এই উপলক্ষে কোন ছাড় কি পাওয়া যাবে?
ও পারমিতা বসন্ত যে রাঙিয়ে দিলো সব...
দর্জিগিরি করা আমার বড়দাদা চৌধুরী বাড়ির মেয়ের ফ্রকের কাপড় খানিকটা বাঁচিয়ে আমার ছেড়া জামার ঝালর করে দিয়েছিলেন। এই অপরাধে পয়লা ফাল্গুনের বিকেলে দাদাকে ওরা এতটাই মেরেছিলো যে সারা শরীর রক্তে রাঙা হয়ে ছিলো। আমি তো সেদিন থেকেই জানি ; বসন্ত কতটা রাঙাতে পারে...
পারমিতা, বাতাসে মহুয়ার নেশা, ঘোর লেগেছে মনে।
তোমাদের অভিজাত মহুয়া বাতাস কেবল প্রাডো বা এলিয়েনের জানালার ধার ঘেঁষে বসে থাকা সুকেশিনীর কপোলই স্পর্শ করে। তিরিশ ওয়াটের বালব জ্বলা আট বাই দশ ঘরে তার পদচিহ্ন পড়ে না কখনই। আর মন? সে তো কবেই নিজেকে তুলেছে নিয়তির নিলামে।
পারমিতা, দ্যাখো ; ফাগুনের আগুন লেগেছে বনে।
অভাবের আগুন যার হৃদয় পুড়িয়ে দিয়েছে তার চোখে আর সব রঙের তো কোন রকমফের নেই। রজনীতে রক্তেরও কোন রঙ থাকে না।
পারমিতা, তবুও তো ফুল ফোটে। তবুও তো বসন্ত আসে ...
জানো না বুঝি,
জল থাকুক বা নাই থাকুক, তৃষ্ণায় জীবন ভাসবেই।
পারমিতারা থাকুক বা নাই থাকুক, প্রেম নীরবে আসবেই।