বিবেক বদলাবে কবে
আধুনিক রাষ্ট্রের একজন নাগরিক,
বিশ্ব বিবেকের একজন সাধারণ মানুষ,
পৃথিবীর একই ছাদের তলে,
দ্যাখ্ছেÑ বিবেক বদলাবে কবে,
রাষ্ট্রের কোন্ খেলায়, কোন্ গুপ্তধন
গণতন্ত্রে প্যারাডাইস এনে দেয় কাউকে হেনে
কী শেখালে রাষ্ট্রÑ ডির্ভোস নবদম্পতিতে
ঝুলন্ত লোহার খাঁচায় মা-বাবা,
বিবেকের কাঠগড়ায় আসছে-না বিবেক
অবিদ্যা, তোতা কাহিনীতে বিশ্বকবি রবি ঠাকুর
খোলা বাক্যে সীমানা রেখাপথ, আছে সীমানা।
বলতে না দেওয়ার ইউনিভার্সিটি শেখাবে গণতন্ত্র...
আধুনিক রাষ্ট্রের একজন নাগরিক,
বিশ্ব বিবেকের একজন সাধারণ শিক্ষার্থী,
পৃথিবীর একই ছাদের তলে,
দ্যাখ্ছেÑ বিবেক বদলাবে কবে...
জীবনকাব্যের পদাবলি
নিয়মিত শেষরাত্রি পাড়ি দিয়ে নবুদ্ভূত বুদবুদ রক্তে এখোন,
ত্রিমাত্রা কবিতার পঙ্ক্তিতে পৃথিবীকে খোঁজা ত্রিনয়ন ব্যস্ত
অন্ধকারগুলো শাদা রঙের দিকে ছুটছে এক অক্ষে,কাল-পরশু
অপেক্ষমাণ; রক্তে মধুমেহ নিজেকে বিকাশলাভে গভীর মত্ত
বইপড়–য়া চশমাচোখে এক ঝাঁক কিশোরী এগুচ্ছে আগামী দিগন্তে
উদ্দামতায় খোলা মাঠে আঁকবে পায়ের চিহ্ন সংকেতবহ অক্ষরে
বসন্তের রাত্রে মো ইয়ানের উপন্যাসে ঝরে বৃষ্টি কবিতার ছন্দে
চরিত্রগুলোই পাঠক এক নেটওয়ার্কে; হরিজনরা ব্যস্ত কেনাকাটায়
শারদীয়ায়Ñ ব্যস্ততা কাটবে মধ্যরাত অবধি কিন্তু এরপরই আবার
শেষরাত্রিÑ এখানকার লিপিকার চোখ রাখছে শাদা রঙে অজানাক্ষরে
উঠোনে আলতা নেই
এখোন ঋতুগুলো চলে আধুনিক স্টাইলে
শীতের মেঘ কুয়াশাচ্ছন্ন, মেঘের আড়ালে মেঘ
হঠাৎ বৃষ্টি
হঠাৎ-হঠাৎই বৃষ্টি ওই উঠোনে এই শীতে
উঠোন ভরা সব, পরম্পরায় বয় সুখের নদী
ঢাকিদের তাল, ঘুঙুরের নাচ
রাতের গভীরে রাতে সুউঁচ্চে সংলাপ, লোকালয়
আপ্যায়নÑ সুখ্যাতি, ঋতুর আবর্তে সংস্কৃতি
ঘূর্ণায়মান...
নবান্ন, পূজা-পার্বণ-পিঠাপুলি সব, রস-ব্যঞ্জনায়
উঠোন,
প্রবাহ সুখ নদীতে স্নান করে ঋতুরা
পা চলে আল্তো পায় ভিজে মাটি, পা ভিজে
জল রঙে-জল তরঙ্গে তরঙ্গে ছুঁয়ে যায় সারাটা উঠোন
ছন্দে নেই ছন্দ, নূপুর ছিন্নÑ
আল্তা মাখা পা অন্য ঘরে, পৃথিবী শূন্য।
বয়স
মাথার চুলগুলো বড়োই হচ্ছে দিন দিন
বয়স বাড়ার সঙ্গে চুলের সম্পর্কে অপূর্ব অনুরাগ
আঠারো কম বয়সী মেয়েকে বলে কিশোরী
আমি বলিÑ প্রস্ফুটিত বাগানের পরিচারিকা
ষোলতে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত সদা
নিয়ম ভাঙ্গার অনিয়মেই গোপন প্রণয় মেহেদিরাঙা দু'হাতে
পরিচর্ষা এ যেন নদীর মতই বহমান
ঘুমজাগা ভোরকাব্যে স্বপ্নগুলো ফুরফুরে শাদা
বলাকা উড়ছে
দেখছি মাছ ধরা বিলে ছোটবেলায়
উড়ছে এখনোও... দেখছি ছোটবেলার মতই
এলোকেশী মেঘকন্যা, মেঘের আড়ালে রামধনুর উঁকি
মুক্ত প্রজাপতির ডানায় খেলা করে রঙ
সজীবতায় পূর্ণ মেহেদীরাঙা ফুলগুলো...
লাল জলরঙ
ঘরবাধা ঘরে ঘর বেধে কাগজের ফুলে
লাল জলরঙ পাপড়িগুলোতে কেমিক্যাল সুঘ্রাণ
ছিটায়-ছড়ায়, কৃত্রিমে ভরপুর মন মাতাল।
বিভোর ইন্দ্রিয়সব সময় কাটায় সূর্যের পৃথিবীতে
আকাশ বলে যেখানে কিছু নেই
সে-আকাশে, ছবি আঁকে প্রতিচ্ছবি দিয়ে
লাল জলরঙে বৃষ্টি ঝরার দেশে।
শুকনো পাতার মচমচে আওয়াজে
ঘর ভেঙ্গে
ঘরের ভেতর ঘর প্রতিঘর
সূর্য ডুবার আগে কিংবা পরে,
শরীর বেয়ে লাল জলরঙ আচমকা মাটিতে।
নাগরদোলা
সেই সব দিন হেঁটে যাচ্ছে এখন,
আমার আঙ্গিনার পাশ দিয়ে।
জন্মের পর জেনেছি মুক্তিযুদ্ধ
যুদ্ধ কী?
একবার দ্যাখে যাকে পুষে রাখা মনে
একটা ফড়িং-এর লেজে সুতো বেঁধে দৌঁড়ানো
সামনে বা পিছনে
ট্রেনের শব্দে কান পেতে লাইনে খবর টানা বৃটেনের
সবুজ ঘাসের মাঠে বর-কনে খেলা-খেলায়
কনের ফিরে না-আসা ঘর
হাতের মুঠোয় পেতে ডাংগুটি
সত্য-মিথ্যেয় কানামাছির ভৌঁ-দৌঁড়ে
মার বকুনিতে পুরো এক গ্লাস দুধ
গাদাগাদা পুঁথির লাইনে মগজের ক্লান্ত
পাঁয়তারা...
হাঁটুকাদা ভেঙ্গে ভেঙ্গে মাছধরা চৈত্রে
বাড়ি ফেরা সন্ধ্যায় ধুরু ধুরু বুক
কাদুনে চোখ পড়ার টেবিলে ঘুম কাতুর,
অনশন...
হেঁটে যাওয়া জীবনে ভেসে ওঠা যে-মুখখানা
অক্ষর জ্ঞান দানে হেঁটেছেন মাইলের পর মাইল
রোদ-শীতে, ভেজা দেহ বৃষ্টিতে বা ভাদ্রের গরমেও
অমলিন
পৃৃথিবীকে আলোকিত করে করে নিভে গেলেন সরস্বতী নদীর মতো।
যুদ্ধ কী?
না-দেখে যে-পথ ধওে চলেছি হেঁটে হেঁটে
শাদা পাতায় আঁক্ টেনে টেনে খেলো পাতায়
সেই সব দিন হেঁটে যাচ্ছে এখন নাগরদোলার মত।
কোথাও নেই হল্দে পাখিটা
আয়নাটি ভেঙ্গেছে কয়েক খণ্ডে সেই কবেÑ
ধুলিকণার অস্পষ্ট প্রতিফলনে অবয়ব পুরাতন
অষ্টমী তিথির ষোলকলা চাঁদে মুখখানা খণ্ডখণ্ড
হল্দে পাখির সম্পর্কটা সাক্ষ্য দেয় আজো বুড়ো সজনের ডাল,
গেলো বছর বোশেখে বসেছিল একবার কালোমুখি
চৈত্র-সংক্রান্তি গড়িয়ে সন্ধ্যায়, দেখা হয়নি আর পাখিটার
সময় তো খণ্ডখণ্ড মুখখানায় বারো মাস
নতুন জলের ধারায় স্রোত হয়ে পাড় ভাঙ্গে দুকূল
কে যেনো একবার বলেছেÑ কাল নববর্ষ। খুঁজেছিÑ
খুঁজছি... প্রতিদিন ভোরে সূর্য ওঠার কাজ ঠিক আমার মতোই
সজনে ডালে চোখ রাখি সকাল হওয়ার পরপরই
সে-নববর্ষটা পেলে সহস্র শতাব্দীর অপেক্ষার বাঁধ ভাঙ্গতো
জোড়া শালিকের উড়ন্ত পাখার ক্লান্তি কাট্তো কোনো কার্নিশে
ঝড়ো-ঝাপটায় ভেজা শরীর মৃদু উষ্ণতায় পেতো আশ্রয়
সবকথা কুচিকুচি করে কেটে অপরিচিত বর্ণে বাকরুদ্ধÑ
ধরা দেয় বারবার হাতের নাগালে আয়নায় খণ্ডখণ্ড মুখখানা
কবি
কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একজন কবির নাম
গ্রামের খোলা আকাশÑ আকাশের বুকে
চাঁদমুখ,
উঠোনেÑ
জল হয়ে
জল,
ভূমিষ্ঠ জল
মেঘের কণার,
খসে যাওয়া মেঘের একটুকরো শক্তি গ্রামের উঠোনে।
ঘুম ভেঙ্গে স্বপ্ন দেখা
এক প্লাটফর্ম।
সকল প্লাটফর্মের ক্রিয়াকর্ম নাকি একইÑ
জীবন সচল রাখা।
যান্ত্রিক জীবনের গুরুত্বও কর্মে;
দোষমুক্ত পরিচালক যান্ত্রিকে, প্লাটফর্মে
রাত জেগে জেগে ঘুমিয়েও জেগেছি
অনেক রাত,
ঘুমে ঘুমেÑ
রাতকে পাড়ি দিয়েও দেখেছি অনেক রাত
ঘুম ভাঙ্গা স্বপ্নে
মহাসাগরের ঢেউ ছুট্ছে ক্রমশ
নেচে নেচে জলরাশির ঝংকারে
সাগরে
খেলছে তরঙ্গে তরঙ্গে
শ্যেন চাওনিতে ছুট্ছেÑ বালুকারাশির কূলে।
গেরুয়া জমির শালবনে অজগরের অদম্য পাঁয়তারা
আগ্রাসী লোভে
মেতে ওঠা ব্যভিচার
উলঙ্গ,
কবির বিশ্বনয়নে
বিলুপ্ত পরিসংখ্যানে
কবিতা রচনায় সিদ্ধÑ
পাহাড়িজমি শালবন আর অজগররা।
হাওড়-বাওড়ে জলাভূমিতে খেলা করে
নগ্নতা
হাঁটি-হাঁটি পা-পা শিশুর মতো,
সিক্ত ঘাসডগায়
পা টিপে টিপে কবি
ঘুম ভাঙ্গায়
স্বপ্নভঙ্গ চোখে কবিতা জেগে ওঠে
ঘাসফড়িং প্রজাপতির দলিত ঘাসফুলে।
কবির নিশাচর
জ্যোৎস্নায় মদের গন্ধ
ঘনকালো অন্ধকারে নারীর গন্ধ-
কবির চোখে পৃথিবী শূন্য
শূন্যে- পরম্পরা যোগী
কবি, কবি এবং কবি।
ঘুম ভাঙ্গা স্বপ্নে স্বাপ্নিক এক দুপুর
ঘুম ভাঙ্গা স্বপ্নে স্বাপ্নিক এক মধ্যরাত
একাকার।
পাঁজর এ যেনো
বালুকারাশির কূলে মহাকালের আঁছড়ে পড়া মহাসমুদ্র।
গোলাপীর জন্য ক'টি পঙত্তি
হৃদপিন্ডের ফুসফুসীয় ধমনির কাছে একটা মুহূর্তে
ভুল ধরা পড়েছে যখন বাইরে আকাশের জানালা খোলা
সবআলো নেভানো চাঁদদুয়ারীর ঘরে দৃষ্টি আঁধার, ধুক্ধুক্
ফিকেলাল হৃদপিন্ড তানপুরাসুরে বেহালার আকুতিধ্বনি
শব্দ হয়ে বাজে যখন বাইরে আকাশের জানালা খোলা
দেহাভ্যন্তরে আমি আমাতে ছায়া-ঘিরে রেখেছে আমাকে
মিথ্যা না বলা এক মিথ্যা অঙ্গীকার রোদ্দুরে জীবন, দ্যাখেÑ
সকালের রোদ্ ছুঁয়ে যায় রোজ ভালবাসার টিপ কপালে
ঋতুন শেষে পায় প্রতিবার যাজকের আর্শীবচন গোলাপী
অথচ খোলা জানালার একপাশে কার নূপুর পায়ে আগমন
অবেলায়, শুকনো পাতা বিছানো বারান্দায় বা শিশিরভেজা অন্ধকার ঘরে
আর কানামাছির মতো দেহের ভেতর খুঁজে বেড়ায় নতুন স্বপ্ন ...