'মা' শব্দটির আভিধানিক অর্থ আমাদের
মাকে জিজ্ঞাসা করলাম,
কোথা থেকে এসেছি, মাগো…
বুকেতে জড়িয়ে ধরেন, এক অনবদ্য স্বর্গ -
মা হেসে কুটিকুটি- পাগল ছেলে আমার,
এসেছিস এখান থেকে কোলজুড়ে আমার
তুই আমার সর্বকালের সেরা উপহার।
মাকে জিজ্ঞাসা করলাম,
যা দিয়েছ ধরায়, কী দিয়েছে ধরা
বোবা চাউনিতে আজীবন, মর্মাহত ভরা
জীবনের প্রতিটি আখ্যানে সাদাসিধে বিপ্লব
সাজানো বাগানে ঝরে পড়া এক পল্লব
জিজ্ঞাসু সময়ে তটস্থ, নিরীহ নিপট।
মাকে জিজ্ঞাসা করলাম,
খেয়েছ তিন বেলা, সঙ্গে ইচ্ছে মতো…
হা-নিঃশ্বাস- ডানাবাঁধা ফড়িং-এর মতো,
তবুও ভরপেট, সন্তানের হাতে সুখ যতো।
শাড়ি, গহনা- ঢের আছে বেশ
তাহলে? তুই আছিস্, রয়েছি বেশ।
আমার জিজ্ঞাসায় আমি,
তেরোশত নদী, সাত সমুদ্দুর
প্রবাহিত, প্রকৃতি শরীরী মা আমার,
বেড়ে ওঠা দুরন্তপনায়, দুরন্ত আমার ভেতর
অবহেলিত, তবুও মাঝি- এক মায়া-সংসার
খুঁজে পাই হৃদয়খানিতে ক্ষমার অতল সাগর।
জয়মাল্য
উৎসর্গ: সারা গিলবার্ট, এলিশা গ্রান্টো এবং
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জলরাশি
জলরাশি আবর্তিত মেঘের দুঃশাসনে
মেঘ
মেঘ আকাশ ঘিরে ছায়া-আবরণে
সূর্য
সূর্য প্রতাপশালী হয়েও অসাড় রূক্ষ (রুক্ষ)
দুড়্ দাড়ৃ
দুড়দাড় ভূলোক, দ্যুলোক এবং অন্তরীক্ষ
প্রাণীকুল
প্রাণীকুল ভয়ে জড়োসড়ো মুহুর্মুহু আহ্বান
ইন্দ্র
ইন্দ্র দধীচির আত্মত্যাগে বলীয়ান্
বৃত্রাসুর
বৃত্রাসুর ঘন মেঘের ভয়ঙ্কর মূর্তি
বজ্রাস্র
বজ্রাস্রে উজ্জীবিত, শ্রেষ্ঠত্বে একনাম সংস্কৃতি
প্রকৃতি
প্রকৃতি বারিধারায় পূর্ণতায় মাতৃরূপিনী
যুগ
যুগ-যুগান্তরে এনেছে জয়মাল্য মা-জননী
এসো হে বর্ষবরণে
অনাড়ম্বরে ঘন মেঘের ডামাডোলে আগমন তোমার
অনাড়ম্বর ঝড়ো হাওয়ায় তাল কাটায় আগমন তোমার
অনাড়ম্বর প্রকৃতিস্থ আত্মস্বরূপে আগমন তোমার
অনাড়ম্বরে হেঁটে যাওয়া নগ্ন শিশুটায়- আগমন তোমার
অনাড়ম্বরে বাঁচা-লড়াই যুদ্ধে বাংলায় আগমন তোমার
অনাড়ম্বর বিশ্বে মৃত্যুর হাতছানিতে আগমন তোমার
অনাড়ম্বর যাপিত জীবন আমার... আগমন তোমার
অনাড়ম্বরে হোক এ হৃদয় আঁচলে আগমন তোমার
এসো হে এসো দুঃসময়ের কালিমা ঘুচে আপনালয়ে
এসো হে বর্ষবরণে প্রতিটি প্রাণে শান্তির বারতা নিয়ে।
দেখা হবে আবার
দেখা হবে আবার সূর্যের জ্যোতির্ময় প্রভায়
দেখা হবে আবার ভগিনীলগ্ন ঊষা-ক্ষণদায়
দেখা হবে আবার আকাশের মেঘমেদুরে ভোরে
দেখা হবে আবার ঝড়ো মেঘ-নির্মল সমীরে
দেখা হবে আবার সিন্ধু-নদের তরঙ্গিত তটে
দেখা হবে আবার প্রকৃতিদত্তার বিশ্ব পটে
দেখা হবে আবার ঘাসের সবুজ বনায়নে
দেখা হবে আবার জননীর মমত্ব স্বর্গোদ্যানে...
নদী
বিকেলের ডাকে নৌকা বাঁধা ঘাটে
হাঁটি- স্বচ্ছ জলরাশি ছুঁয়ে ছুঁয়ে
নদী শুধায়,
আমার শরীরে তরঙ্গ খেলে খেলে আসবে তুমি
কতোকালে,
অনন্তকাল তোমায় পুষে পুষে আমি বহমান
সৃষ্টিলগ্ন থেকে এখন তোমার সভ্যতায়...
দ্যাখো- আমার সর্পিল চলাপথে বিঘ্নতায়,
হারিয়ে যাওয়া আমার ভেতরের প্রাণ
আমাকে খোঁজে- আমাকে কাঁদায়,
তুমি আসবে বলেই আমার চলা
তোমার সভ্যতায়...
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ধুয়ে ধুয়ে ছবি আঁকি পবিত্রতার
চাই অনুরাগের প্রণয়িনী পৃথিবী
মহাকালের অনন্তে নৈসর্গিক রূপে
হাঁটবে তুমি শীতল ভেজা নগ্নপায়...
তুমি আসবে বলেই ছিন্ন দেহে চলেছি কালান্তরে
এখন,
আমি হাঁটি বিকেলের ডাকে
জলরাশি ছুঁয়ে ছুঁয়ে...।