ভোলা দেবনাথ এর বাছাই দশ কবিতা
প্যালেস্টাইনের জন্য
দ্বন্দ্ব
রক্তের হোলি খেলায়
আমন্ত্রণ জানায়
আগ্রাসন
রচে নির্বাক ধরা
সভ্যতার কলঙ্ক অধ্যায়
মিত্রতা
বীরত্বে পৃথিবীকে বাঁচায়
প্রতিটি জীবন স্বমহিমায়
পথ
বৃষ্টি
গন্তব্যে পৌঁছায়
দ্রুত
মেঘ
পথকে দেখায়
সময়
হাঁটছি
জগৎময়
একজীবনে
কুড়ানীর ফুল
ফুল নেবে বাবু, ফুল নেবে-
পেটে খিদে কটা পয়সা দেবে,
নতুন দিনের রঙ-বেরঙের ফুল
পুণ্য লগনে ধন্যি প্রাণের দুল,
বাবুরা ফুল নেবে ফুল, ফুল
খোঁপায় তুলে দুল, প্রিয়জনের ফুল
কুড়ানীর ফোকলা দাঁতে শুকনো হাসি
হাঁক তুলেছে- কোকিল স্বরে ভাসি।
পকেট ভারী বাবুদের উৎসব এলে
কুড়ানীদের নিচু বলে দূরে ঠেলে,
ছুঁড়িস্ ক্যানো তুই, চাকার তলে
বল্ বল্ কোন্ ছলনার ছলে
ভদ্রবেশী মিষ্টভাষী দল
কোন্ আধারে দানবীর তুই, বল্
ফুল মেলায় তো থাকিস্ ফুলবাবু
ফুলের মর্ম কী বুঝিস্ বাপু!
জীবন
জীবনের নিগূঢ় তত্ত্বে
অনুসন্ধিৎসু জীবন
খুঁজে পায় আঁধারের মেলা।
আলোকিত মানুষ
হারায় আলো
বিচারকি জ্ঞান তত্ত্বে,
জ্ঞান সাগরে ডুবে জ্ঞানের ভেলা।
চোখ যা দ্যাখে, পায়না দ্যাখতে
অন্তরে বর্ণমালা উল্টো পথে
কলমে ওড়ে টাকা
চেয়ার অসহায়ত্ত্বে,
কসাইয়ের দুষ্প্রাপ্য চোখের জল
মনে ঝরে "
ভাঙ্গে অন্দর
বিবেকরা বিবেক গুটিয়ে কোণে।
আলো ফোটবে জোনাকি দলে
জ্যোৎস্না খোঁজবে সারাময় রাত
প্রাণখুলে দৌড়াবে জিজ্ঞাসু চোখ
জীবন, জীবনের গতিধারায়…।
ফেলে আসা একটি ভালোবাসা
ফেলে আসা একটি ভালোবাসা
ঝড় তোলে ঘরে, মা-ক-ড়-সা'র ঘরে
কুটেকুটে খায় ঘুণ শব্দবুনন টেবিলটা
সাদা ছত্রাকে ঢেকেছে ফ্রেমে বাঁধানো ছবিটায়
নোনাজলে দুষ্ট আবছা আবছা চোখটায়
কথা বলে সমুদ্রের ঢেউয়ে
নিরাকার ঘুমে কাটায় বেলা
কতোটি বছর… তারপর,
রেখে যাওয়া একটা টেবিল
শেষ হয়ে যাওয়া সলতের একটি হারিকেন
এবং কতগুলো এলোমেলো বুল
রচনার পাতা ছেঁড়া একটি জীবনের ইতিহাস
দৌড়ায় এখনো- সীমান্তের শেষ রেখায়…
অস্ত্র
কবির করে একটি অস্ত্র
শাণিত
নেশায় বেড়ায় নিয়ত,
রঙ ছোঁয়্
মাটি ছোঁয়্
বাতাস ছোঁয়্
আকাশ ছোঁয়্
প্রকৃতির গন্ধ ছোঁয়্
জলের ঢেউ ছোঁয়্
বরফের আড়ালে কিরণ ছোঁয়্
পাহাড়ের চূড়া ছোঁয়্
মন ছুঁয়ে ছুঁয়ে মনের গহীনে
কথা বলে সীমানা পেরিয়ে
একটি কবিতায়…।
বাংলাদেশ
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি
আত্মারা আত্মা হয়ে পবিত্রতায়
ফুলের বাগানে
সুগন্ধে
স্বাচ্ছন্দ্যে
কাটায় বেলা।
ভাসায় ভেলা
বাংলাদেশ নামে এক শাপলায়
পাপড়িদলে
মিঠাজলে
পলি ভরা সোনার বাংলায়।
স্বপ্ন দানে স্বপ্ন পূর্ণতায়
পতাকার ভুবনে
দুচোখ ভরে
সবুজ মুড়ে
সোনার বাংলা।
লাশের ভেতর এক লাশ
লাশ কাটা ঘরে
লাশ হয়েও
লোলুপতার শিকার অামি,
ক্ষমা করো পৃথিবী
অভিশাপ নেই আমার
চাই-না কোনো আইনি বিচার
নেই কোনো চাওয়া না-আছে কোনো পাওয়া
সার্বজনীন আমি।
ক্ষমা করো আমাকে…
সুষ্ঠু মস্তিষ্কসম্পন্ন বিবেক
জন্ম দিতে পারিনি আমি,
ক্ষমা করো আমাকে…
জয় মা দুর্গতিনাশিনী
যদি আমি বিশ্ব হই
বলবো- খুব কষ্টে আছি মা-গো!
ত্রিকালদর্শী কবি পঙ্ ক্তিতে-
দাঁড় করাবে তোমায় দোষের কাঠগড়ায়।
নিথর, নির্জীব- কী ক্ষমতা তোমার!
মুর্খের প্রলাপজ্ঞান কুটে কুটে খায় কীট
হায় ভাষা কম্পিত ধ্বনি…
ধ্বনিতেই জয়গান,
মানুষে মানুষ খোঁজে মানুষের অবতার
সৃজনে দংশন; দৌড়ায় দংশনে
নিজের সৃষ্টিতেই দোষে অপরকে।
যদি আমি বিশ্ব হই
বলবো- খুব ভালো আছি মা-গো।
ত্রিকালদর্শী কবি পঙ্ ক্তিতে-
দাঁড় করাবে তোমায় গুণের মহিমায়।
মৃন্ময়ীর মাঝে চিন্ময়ী হয়ে জাগাও আমায়,
জ্ঞানপিপাসুর আগমন জ্ঞানের কারখানায়
কী সুমধুর সুসজ্জিত ভাষা, সুশৃঙ্খলে
জয়-জয়কার ধ্বনিতে,
মানুষে মানুষ হবে মানুষের অবতার
সৃজনে দর্শন; দৌড়াবে দর্শনে
নিজের সৃষ্টিতে গড়াবে নিজেকে।
জয় মা দুর্গতিনাশিনী…
পরাহত
সকলের ভিডে নকলের মাঝে
কখন যে আসল হারাই
নকল সে-যে মস্ত বড্৷ই
নিজঘর শূন্যে পরঘরে বাজে ;;
সল্ তের বাতি বাতাসের ডরে
নিছক ভালোবাসা এ-মিছে
হৃদযে মেঘ, আঁধার-সাঁঝে সব
খালি করে শূন্যে ভাসি হেরে ৷