মাহমুদ কিয়ানুশের এর কবিতা । অনুবাদ: তানভীর রাসেল
উত্তর-পূর্ব ইরানের মাসহাদ শহরে ১৯৩৪ সালে মাহমুদ
কিয়ানুশের জন্ম। তেহরান বিশ্ববিদ্বালয় থেকে ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে
স্নাতক এই কবি কবিতার পাশাপাশি ছোটগল্প, উপন্যাস এবং সমালোচনা সাহিত্যেও
সিদ্ধহস্ত। ইরান সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকুরী করেছেন মাহমুদ কিয়ানুশ।
“সোখান” এবং “সাদাফ” নামক দুটি প্রতিনিধিত্বশীল ফারসী সাহিত্য পত্রিকা
সম্পাদনা করেছেন এই কবি। ১৯৭৬ সাল থেকে সপরিবারে বাস করছেন লন্ডনে। ফারসী
ভাষায় অনুবাদ করেছেন ডি. এইচ লরেন্স, এমি সেজায়ার, স্যামুয়েল বেকেট,
কনস্তান্তিস কাভাফি এবং লোরকার সাহিত্যকর্ম। তাঁর উল্লেখযোগ্য
কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে – ‘দি ফিফ্থ এন্ড দি লাস্ট নেইল’, ‘অব বার্ড
এন্ড ম্যান’ এবং ‘দি এম্বার শেল অব সেল্ফ’। অনূদিত কবিতাগুলো তাঁর ইংরেজী
কাব্যগ্রন্থ ‘দি এম্বার শেল অব সেল্ফ’ থেকে নেয়া।
পাতার রহস্য
শরতের ঝরা পাতাটি কুড়িয়ে নাও ভূমি থেকে
আর মুছে দাও তার ধূলিধূসরতাঃ
এরূপ স্বচ্ছ ভালবাসায় উন্মোচিত হতে পারে
কিছু নিগুঢ় রহস্য---সকল ছায়াপথের।
তুষার
তুষারপাত ঘটল
শুভ্রতার শুদ্ধ আগুন পৃথিবীর মুখায়বয়ব থেকে
মুছে দিল সকল বর্ণচ্ছটা সকল ক্লান্তিঃ
কিছুটা সময় এইখানে এখন উন্মত্ত
কোলাহলের চিহ্নও থাকবেনা
সুর থেকে যায়
গোলাপের পুস্পিত শাখায় বসে
পাখিটা গাইলো একটি মধুর গান
মৌনতার শুন্য বুকে ছড়িয়ে পড়লো যেন আনন্দচিৎকার।
গোলাপটি ঝরে গেলো
তার সকল বর্ণবিভুতি আর সুঘ্রাণের লেশমাত্র না রেখেই--
অথচ শিকারীর তীব্র তীরে পাখিটি নির্বাক হলেও
রয়ে গেল তার সুর মুর্ছনা।
.
আত্মায় ভ্রমণকারী
আমি আমার আত্মায় ভ্রমণ করি
আর নিথর পৃথিবী শুধু সময়ের পদচিহ্ন গোনে।
আমিই সময়
পৃথিবী থেকে সঞ্চয় করি বিচিত্র অভিজ্ঞতা-
দেখি তারকাপুঞ্জ, ছাইভষ্ম
মেঘমালা, মরুভূমি
পাখপাখালী, বর্ণিল পাতা
মানুষ আর দিগন্তমাধুরী।
আমি আমার আত্মায় ঘুরিফিরি,
পৃথিবীকে উপেক্ষা দেখাই;
চলে যাই সেখানে, যেখানে স্বপ্নেরা থাকে,
থাকে মহোময় সুরের লহরী
থাকে যাতনা, আশা, স্তাবকতা আর হতাশ্বাস
থাকে দোলনায় দোল খাওয়া প্রফুল্ল শিশুমুখ।
আমি আমার আত্মায় ভ্রমণ করি,
সব পিছুটান পিছে ফেলে অনন্তের পথে পথে
গড়ি অধিবাস।
আমি সময়
আমি স্বাধীনতা।
অনুবাদক : তানভীর রাসেল