সিদ্ধার্থের নদী
টিকটক
টিকটক
টিকটক
গড়ায় বিভোর শব্দগাড়ি, ঝুলন্ত ডায়ালে
অবিশ্রান্ত দিন, রাতের আড়ালে।
টপাটপ
বোকা পোকাগুলো গিলে
হঠাৎ খেয়ালে হৃষ্ট টিকটিকি
ডেকে ওঠে, ঠিক ঠিক
ঠিক ঠিক
ঠিক-
আমাদের নোনা ধরা রুমের দেয়ালে
বহু দূর হেঁটে এসে গলে যায় সিদ্ধার্থের নদী।
চিরকালের যুগলবন্দী
বলিনি কখনও ভালোবাসি, তবু তো এসেছি, তবু দেখ
খোলা রকে কিছুটা বসেছি, গেয়েছি যুগলবন্দী দোহে মিলি
সেই যে অমল বিভাসের রাগে শুরু, বুকে দুরুদুরু কেঁপেছে
দীপক, মেঘমল্লার, আশাবরী; ক্রৌঞ্চমিথুন তুলেছি ফুল্ল টোড়ি
হাতে হাত, চোখে ছুঁয়ে পূরবীর মীড়, হেসে ফের উঠি ভেসে
কাফি খাম্বাজে চঞ্চল কন্নড়ে, বেলা পড়ে এলে খেলি রামকেলি
মন্দ্র সুধীর কুসুমিত সাহানায়।
এখন বুঝি বা রাত্রির শেষ যাম, গালিচায় ঝরে
পোড়া আগরের ছাই, ঘুমে ঢুলু ঢুলু তিমিত দ্বীপের শিখা
সময় হয়েছে, বলো তো এবার যাই; যাবো যাবো করে পা তুলেছি তবু
কী যেন হারানো খেই, টেনে রাখে পিছু ঝোলা কাঁধে ফেলি যেই।
জানি সুর অসীমের, এপার ওপার রাখে সেতু বেঁধে অনন্ত মহাকাল
প্রিয় সুরটুকু বেঁধো বিলোয়ালে যদি জাগো ফের কাল।
হে প্রিয়, বিদায়!
তারপর কি লিখি বল তো
লিখি কিছু হাহাকার অদেখা কালিতে, ব্রাকেট-বন্দী ক্রীতদাস,
নিরুপায় হরফের ছায়া, বেআইনি অস্তিত্বের ভারে
তবু থাক
অবাছাই কবিতার মত মলিন হনুর টিপে
শুকিয়েছে স্বচ্ছ হিরা ফুল,
আমাদের অন্ধ বোবা বধির ঘুমের স্তব্ধ গুপ্ত ক্যাটালগ
অনন্তের মায়াবি জাজিম।
যদি
যদি ফিরে আসো
যদি আসো
যদি আসো
যদি
ভালোবাসো কি না বাসো
যদি হাসো
অধরে শানাও পরিহাসও
ভুলে গিয়ে সব নেকি বদি
পিরালির ভক্তিপ্লুত গদি
ছেড়ে নেমে যাবো
পায়ে পা মেলাবো।
বকুলে জড়াবো চারু গ্রীবা
বেকেয়ার কে বলিলো কীবা।
(সনেট)
তোমাকে দেখবো বলে
তোমাকে দেখার লোভে জেগে আছি হাজার বছর
অপেক্ষার অভিশাপে নেমে আসে বৈরী কাল ঘুম
খেজুর কাঁটায় বিঁধে আঁখিপাতা করেছি নির্ঘুম
অরূপ লাবণ্য ছুঁলে শান্ত হবে লোনা সরোবর।
তুমি তো জীবনদায়ী বিশ্বাসের নিত্য সহচর
খরা তাপে ভরা নদী, আকাঙ্খায় লিপ্ত কুমকুম
আঙুল ছোঁয়াও যদি, যেন উষ্ণ অধরের চুম
মুছে দেয় ব্যর্থতার নুন ঘাম দৈন্য গ্লানিকর।
অকরুণ মরুপথ শুষে নেয় তাজা প্রাণরস
নাগিনীর কালকূটে বাস্তুভিটে হয়েছে জর্জর
নিস্পন্দ স্নায়ুতন্ত্র, চেতনার বনে বিস্মরণ
কানে বাজে পীড়িতের অবিশ্রান্ত নিশিথ ক্রন্দন
নির্বোধের জ্ঞাননাদে ব্যথাদীর্ণ কানের কুহর
অধরা পরমা আনো নির্বাসিত প্রাণের হরষ।