মুহাম্মদ সাঈদ এর কবিতাগুচ্ছ
কবি - মুহাম্মদ সাঈদ
প্রত্যাশা
চাঁদ আর জুঁই ফুলের সাথে,জয়িতার কাটে নিত্যরাত
জানালার পর্দা সরিয়ে এখনো সে ঘুমাতে যায়;
ঝুল বারান্দায়,নীল জোনাকি,মাতাল বাতাসে অকস্মাৎ
পূর্বপুরুষদের মত কখনোবা জেগে ওঠে প্রত্যাশায়।
কার্নিসে বৃদ্ধ বনসাই-সমৃদ্ধ অতীতের আলপনায়
সমুহ সম্ভবনাকে সেই কবে রেখে গেছে কালি-তুলিতে
ক্যানভাসে আকা কর্কশ বর্তমান-দাড়িয়ে দেখেছে ঠায়
কখন নড়বড়ে হয় সঙ্গীত,বর্ষা সরিয়ে রেখে শীতে।
জয়িতার উর্বর জমিন ছুঁয়ে হেঁটেছে ঘর্মাক্ত রাখাল
শরীরে দৃঢ় চেতনা জাগিয়ে-অশরীরী বিদগ্ধজনেরা
দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে ঘাসের বুকে মরেছে পঙ্গপাল
লগি থেকে বৈঠায়,অভিমান থেকে অভিপ্রায় আগাগোড়া
গৃহস্থের গোপন উঠোনে
ঘোরের বারান্দায় ভোর রেখে এসে যৌবতী নারী
দুপুরের প্রখর রোদ্দুরে করেছিল আহাজারি!
আগমনী বিকেলের বিলাসিতা ছিলনা তখন,
গোধুলীও ভুলে ছিল গৃহস্থের গোপন উঠোন।
পক্ষ বিপক্ষের থেকে আপত্তি ছিলোনা এক রত্তি
দুর্জন সামন্তেরাও বলে দিয়েছিল সব সত্যি;
যৌবতী নারীর যাবতীয় লোকাচার কারুকাজ
ভোর থেকে মাঝরাতে ছিল যার সমুহ বিরাজ।
নির্ঘুম বলাকার সবুজ সম্পর্কের কাছাকাছি
যেভাবে চেয়ে থাকে আটপৌরে আগন্তুক মৌমাছি
মোহমায়ার মত ছায়াবাজি রেখে শুভ্র পালকে
যৌবতী তেমনি থাকে পৃথিবীর বুকে মুখ ঢেকে।
প্রতিবেশী
ছড়িয়ে দিও মেঠো পথ গাঙ্গের অববাহিকায়-
যদি কেউ নিতে আসে রথ;এমন ঘোর সন্ধ্যায়!
গোধূলি নিভে গেলে পর হয় সূর্যের সহোদর
পাড়া প্রতিবেশী-খুব বেশি নিতে আসেনা খবর।
জুড়ে দিও শেষ যৌবনের গান,বার্ধক্যের টান
বিনীত সম্মতি,সম্পর্ক,ভাবের আদানপ্রদান
মহাকাল,মহামায়া,স্নেহ ছায়া,বিশ্ব চরাচরে
কখন আসে যায় সমুহ সময়ের পারাপারে।
গেঁথে দিও হিজলের মালা,হাসনাহেনার ঘ্রাণ
অঘ্রাণের মাঠে অপার সুগন্ধি বাসমতি ধান,
গৃহস্থের গোপন কোঠরে,পিতল,কাসা সিন্দুকে
মর্যাদা জমা থাকলে কি এমন করবে নিন্দুকে।
বিনীত শব্দসম্ভার জড়োসড় হয় অভিধানে,
সেলুকাসের চিন্তিত রসায়ন স্রোতসিদ্ধ ঘ্রাণে
হেঁটে চলে যায়-সমৃদ্ধ নগরপিতার সুশাসনে
জলের নোঙর হতে আদিপুরুষের টানে।