কবি : মোহাম্মদ ইকবাল
যুগপৎ অমৃত এবং হলাহল
বায়স্কোপের প্রেক্ষাপটের মত বিগত জন্মের অতৃপ্তির ক্ষত সাদাকালোয় ভেসে ওঠে
বাস্তবতায় আগামীর সুখ তৃষিত রঙিন
তাড়া করে নিষ্কলুষ নির্লিপ্ত দুটি চোখ
কামরসে ঠাসা কামরাঙা বাঁকা ঠোঁট
হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরি জনপদ বনবাদাড় মন্দির মসজিদ চিতা শ্মশান
প্রতিক্ষায় থাকি শুক্লা পঞ্চদশীর আকাশে আগুন লাগা চাঁদের
মাথার উপর উলম্ব রেখায় সেই চাঁদকে পেয়ে গেলে কখনও কালেভদ্রে পেয়ে যাই দর্শন
অতঃপর রোমন্থন!
তারপর যুগপৎ পান তাঁর প্রেমের অমৃত এবং হলাহল......
আস্থাহীনতা
সে বলে,
যাপিত জীবন এখন তোমার কেমন?
বেচে নিয়েছো কি নিরানন্দ বিরাণ সন্যাসব্রত?
নাকি এখন ক্রীতদাশ কোনো কবিতার?
আগ্রহ নেই - - -
আগ্রহ নেই বিন্দুবিসর্গ এসবের,
যৌবনের আঁচ যখন প্রখর ছিলো
মোমের মতো সে আঁচে গলে যেতো তোমার কবিতার সাম্রাজ্য!
চাঁদের জোছনার হাত ধরে টুপটাপ ঝরে পড়তো
যৌবনবতী কবিতার মঞ্জুরি
দজলা ফুরাত কিংবা টাইগ্রিসের পাড়ের বেদুইন কোনও যুবতি গুনগুনাতো তোমার কাব্যকথা,
সেই হিরণ্ময় সময়ের বয়ান
কবিতার সেই যুবরাজই আমার ভালোবাসা!
মনে থাকা কিংবা না থাকা,
কিছুই কি আসে যায়?
নিঃশ্বাসের আঁচল তলে ভালোবাসার বুকে লাশ নিয়ে তাঁর নির্ঘুম পাহারায় থাকি
কখনও যেনো কোনও অবিশ্বাসী মশক লাশের ধারেকাছেও না ঘেঁষতে পারে......
আমি বলি ;
ভালোবেসেছি,
শুধু তােমাকেই ভালোবাসেছি।
জংধরা তালা
তোমার অনর্গল কথা বলা নির্বাক নিষ্কলুষ দুটি চোখেই আমার ভালোবাসার প্রথম পাঠ
প্রণয়ী থার্মোমিটারে প্রেমের পারদের ছুটাছুটি দিগবিদিক
হিমাংকে স্ফুটনাংকে একাকার তুমিময় ভালোবাসার সূচক
রাত নিশিতে নিশুতির সূর্য যখন ফোটে তোমার বুকে
আমার কথার তৃষিত ঠোঁট ছুঁয়ে যায় তোমার কথার কামনার শরীর
উড়ে সহস্র প্রজাপতি
নিযুত কোটি জোনাক
ধীরে খুলে জংধরা সব তালা
তোমার সব দরজার.....
কুঁড়ি ফোটার রীতি
কবোষ্ণ বুকে কামোষ্ণ ঠোঁট ঘষে ভালোবাসার আগুন জ্বালতে চেষ্টা করছি
বললে তার আগে কুঁড়ি ফোটার রীতি জেনে নিতে,
জেনে নিতে সুতীব্র সুঘ্রাণে পাপড়ির বিকাশন রীতি!
সে থেকেই অাদি অন্ত সর্বক্ষণ চোখ রেখেই চলি
বোধের রাডার স্ক্রীনে
দৈবাৎ যদি ধরা পড়ে পাপড়ি মেলার গ্রীন সিগন্যাল
মিস করতে চাইনা তার কোনো একটিও এপিসোড
এরই ধারাবাহিকতায় যখন হাত পৌছায় ব্রা'র স্ট্রাপে
বলে ওঠো অন্তর্বাসহীনা নয় মোক্ষম সময়ে লজ্জাহীনাই করো আমাকে।
শ্বেত কপোতের ঝাঁক
হিংসার ছুরি কাঁচি ক্রমাগত রক্তাক্ত করে শৃঙ্খলিত অসহায় শ্বেত কপোতের বুক,
ফিনকি দিয়ে উপচে পড়া রক্ত অভিসম্পাত দেয় আধুনিক সভ্যতায় সভ্য, অসভ্য মানুষদের।
সভ্যতার কাঠগড়ায় শান্তির আত্মাহুতি!
অথচ এদের বাড়িতে গাড়িতে দপ্তরে প্রগতির ফ্রেমে বাঁধাই মোনালিসা হাসিতে মানবতা শান্তি,
চক্ষুর আড়ালে তারাই নগ্ন বিভৎস!
অহরহ ছিড়ে খায় মানবতার সম্ভ্রম!
স্থানে স্থানে জানাজাও ওঠে মানবতার!
ধর্ম বর্ণ জাতি গোষ্ঠী ক্ষমতার লোভ ইত্যাদিতে ভেস্তে যায় সাম্য সামন্ত কিংবা যেকোনো মতবাদের ভিত,
মানুষেরা মানুষ হয়ে উঠলেই সবুজ মানবতা!
আকাশে আকাশে হয়তো আবারো ডানা ঝাপটাতো শ্বেত কপোতের ঝাঁক।
মানুষেরা কী কখনও মানুষ হয়ে উঠতে পারবে?