রাজন্য রুহানির কয়েকটি কবিতা
রাজন্য রুহানির কয়েকটি কবিতা

মুখোশজাদুর স্বাদুগল্প

দু হাতে সমালোচনা বিলি কেটে কেটে

দরদ ভঙিতে ক্যামেরার দিকে ছুটে যাওয়া মুখ

একেকটা রাষ্ট্রীয় দানব

দানবের হাতে খন্তা দিয়ে নধর পাছারা হাইকোর্টে যায়,

মহামান্য বিচারক বর্ণচোরা কলমের স্বগতোক্তি লিখে

চিয়ার্স আইনে আঁকে মদ আর মাংসের উৎসব।

উৎসবের ছিদ্রে ফুল গোঁজে গৃহপালিত মিডিয়া

সুউচ্চ চেয়ার বেয়ে নামে ব্যান্ডপার্টি।

সব মাথা জোড়া দিয়ে বানানো চাতালে

মাতালিয়া সুরে সুরে নাচে ভেড়াছাগলের পাল

আমরা তখন তাকে শিল্পকলা জানি

জানি, মুখোশে মুখোশে মানুষ ঈশ্বর হয়ে যায়

শেয়াল ছায়া

একটা ছায়াকে দীর্ঘ হতে দেখে ঠোকর মারল রাজহাঁস। গলায় বিঁধল যমকাঁটা

যে বকটা ছুটে এলো, তার শর্ত মেনে নিলে জলাশয় বেদখল। সহচর পাখিদের মধ্যে মাছরাঙা ভেটো দিল। সে ছায়ার প্রার্থনা করলো মহাভোজে বক এবং ডাহুকেরে বলি দিতে। রাজহাঁস প্যাঁকপ্যাঁক করতে থাকল কিন্তু যে শব্দ বের হয়ে এলো তা চিঁউচিঁউ

ছায়াটা আগুন নিয়ে ফিরে এলো হাঁসকে রান্নার জন্য, তার আগেই শেয়াল উপস্থিত, সে- ছায়াকে টোপ হতে শিখিয়েছিল

গণতন্ত্রের চশমা

গৃহপালিতের দিকে চেয়ে থাকে লোভী জিহ্বা। লালা ঝরানোর আগে রান্নার রেসিপি সাজানো মানুষ নোনাঘামেরও কর দেয় সাধ করে মাথায় উঠানো বাঁদরকে

রাখালকে রোজ খাবারদাবার দিয়েও বেতন দিতেদিতে পারিবারিক স্বাস্থ্যটা ভেঙেচুরে যায়। কোরবানির ঈদে সেই লগ্নি হস্তান্তর করতেই কিছু রক্ত চুষে নেয় জোঁক। তবুও ঘোরের জ্যামিতিক বৃত্তে আমরা উঠোন আঁকি

বনে আইন নেই পরধনে পোদ্দারি করার। বনেবনে তবু মাংসাশীর চলে শক্তির মহড়া। তৃণভোজীর সান্নিধ্যে ঘন হয়ে বসে থাকা রোদ দেখেদেখে মানুষের সভা আর সংঘের ভেতর সাধুর নজরে উড়াই শুভঙ্করের ঘুড়ি। শান্তি আর সংহতির ওমেওমে রাখি ছাইচাপা আগুনের তেজ। অথচ ভেতরে খেলা করে অসুরচালাকি

ঝড়ের সামনে ওড়ে তোমাদের বস্ত্র। বন্যার করাল স্রোতে ভেসে যায় সুনিপুণ চোখ। আগুনের ঠোঁটেঠোঁটে নিভে যায় ধর্মের পতাকা

এতসব ভেল্কিবাজি শিখেশিখে নাকে বসে দুই হাতে কান ধরে বেড়ে ওঠে গণতন্ত্রের চশমা

বিবশবেদন

উদ্বেগের দিনগুলি বুকে রাখে শাঁখেরকরাত,

পশ্চাৎগমনের মদিরাক্ষী;

বাঁশরির বিপরীতে ভুভুজেলা শঙ্কাময়

যেন বসন্ত ভুলেছে কোনো প্রিয়ডাকের আনন্দ

পাখি পাতার অভিসার

পঙ্কজের সংবেদে কে সাপের কাহিনী,

কোন কররেখা ধরে রাখে

কুহকের ফুল?

বাহুর নিবন্ধে খোঁড়া পায়ের কবিতা

পাল্লাছাড়া দরোজার চৌকাঠেই ওড়ে!

মন রে, আয়না খুঁজে দেখে নাও নিজের চেহারা

মারা শব্দের ভাঁজে আজো আছে ওম

অহিংস প্রার্থনা আজো কাঁদে আলোর শরীর ছুঁয়ে

শঙ্খের রাত,

আমাকে ফিরিয়ে দাও হাতে রাখা হাতের পূর্ণতা

শুদ্ধ নাভিমূলে

 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান