লেখকের প্রথম পাঠ ও বাংলা কবিতার ছন্দকলা । শফিকুল ইসলাম সোহাগ
কবি
মামুন সুলতান। পুরো নাম আব্দুল্লা আল মামুন। কবি ২ মার্চ ১৯৮০ সালে
সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার উপজেলা, লক্ষিপুর ইউনিয়ন চাঁনপুর গ্রামে জন্ম
গ্রহণ করেন। পিতা-সুলতান আহমেদ, মাতা- আফিয়া খাতুন। স্ত্রী-তাসলিমা বেগম
রেবা, ৩ মেয়ে-মারুফা মাহজাবিন মাহি, মাহফুজা মাহজাবিন রাহি, মাহবুবা
মাহজাবিন জুহি, কবি বি,এ (অনার্স) বাংলায় এম,এ লাভ করেন। তিনি পেশায়
শিক্ষকতাই বেছে নিয়েছেন। এটাই যেনো তার স্বাচ্ছন্দ জীবনের অনুষঙ্গ। একাধারে
তিনি কবি, প্রাবন্ধিক এবং প্রকাশক। প্রাকৃত প্রকাশ তার হাত ধরেই অগ্রসর
হচ্ছে সৃষ্টিময় প্রাণে। তিনি একজন ভালো আবৃতি শিল্পী ও উপস্থাপক। বর্তমানে
তিনি সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজে অধ্যাপনায় নিয়োজিত।
কবি মামুন সুলতান সাহিত্য সম্পাদকঃদৈনিক বিজয়ের কণ্ঠ। সম্পাদনা করে যাচ্ছেন সাহিত্যের ছোট কাগজ 'প্রাকৃত'।
এছাড়া
কবির জীবনাংশে যোগ হয়েছে বেশ কিছু সম্মাননা, পড়শী সাহিত্য পর্ষদ(এমসি
কলেজ)২০০০ । কেমুসাস তরুণ সাহিত্য পদক, ২০০৬ । কাব্যকথা সাহিত্য পদক,
২০১৬ । জালালাবাদ কবি ফোরাম ২০১৬ । কপোতাক্ষ সাহিত্য অঙ্গন, সম্মাননা
স্মারক ২০১৯ ।
যে গ্রন্থটি নিয়ে আলোচনা করবো “বাংলা
কবিতার ছন্দকলা” চৈতন্য প্রকাশ। গ্রন্থস্বত্ব লেখক নিজে। প্রথম প্রকাশ
একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারী ২০১৭ । গ্রন্থটি কবি কামাল তৈয়বকে উৎসর্গ করেছেন।
অনন্য প্রচ্ছদ এ্যঁকেছেন চারু প্রিন্ট। শব্দমালা অফসেট সিলেট থেকে মুদ্রিত।
অনলাইন পরিবেশক রকমারি ডটকম, সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন লাইব্রেরীতে বাজারজাত
হচ্ছে । অন্যান্য সৃষ্টির মধ্যে-জল ডাঙা স্বপ্নসিঁড়ি(কবিতা)২০১৫ । বাতাসের
ঘুড়ি(কবিতা)২০১৬ । মেঘ রাখালের বাঁশি (কবিতা)২০১৮ । গ্রন্থের গহীন গল্প
(প্রবন্ধ) ২০১৮। বৃত্তিহীন ব্যদনার জাদুকর (কবিতা) ২০০১৯ ।
একজন
পাঠক তার বইয়ের সান্নিধ্য পেয়েই চেতনার রূপ রস গন্ধ মেখেই লেখক এর
লেখালেখি যাত্রাপথ শুরু হয়। একজন লেখক মাত্রই ভালো পাঠক। আর চাই ভালো বই।
তেমনি একটি বই বাংলা কবিতার ছন্দকলা। লেখক কবি মামুন সুলতান সকল শ্রেণী
লেখকের জন্য পাঠ উপযোগী ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন । আমি বলব সীমার মাঝে
অসীমের সন্ধান। তিনি উক্ত বইয়ে সহজ সরল ঢংগে ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেখিয়েছেন
বিভিন্ন কলা কৌশল। পাঠকের কথা চিন্তা করেই নিজের ভাব ভাষা ও ভঙ্গিমায়
নির্মাণ করেছেন অনন্য ব্যাকরণ। পরিপুষ্ট গবেষণায় বপন করেছেন নতুন সমীকরণ।
মুখরিত তারুণ্যের দীপ্ত মিছিল, লেখালেখি জগতের একটা অন্যরকম অধ্যায়। হঠাৎ
কেউ লেখক হয়ে যায় না। লেখক হওয়ার জন্য দরকার কঠোর অধ্যবসায়। চাই বিস্তৃত
ভাবনার অনুপম শক্তি। তবে লেখকগণই শব্দসাধক। সুন্দরের পূজারী।
প্রতিশ্রুতিশীল দায়বদ্ধতার আড়ালে স্বাক্ষর রাখেন সৃষ্টিশীল বিন্যাসে। নিয়ম
শিখে লিখা যায়না, আবার এটাও ঠাহর করতে হবে নিয়ম ছাড়াও লেখকের উপজিব্য
কাঠামো দাড় হয় না। লেখাটি সুখপাঠ্য, শ্রুতি মধুর ও আকর্ষণ করে তুলতে হলে
লেখককে যথেষ্ট খেয়ালী হতে হবে। যেখানে লেখার মাঝে বিভিন্ন জটিল শব্দ, মেদ,
অযাচিত শব্দ, অসামঞ্জ্যস্য, সীমাবদ্ধতা, অতিরঞ্জিত শব্দের প্রয়োগ দুর করতে
হবে।
লেখককে লিখতে হবে পাশাপাশি ভাবতে হবে শব্দ,
বাক্য, উৎপেক্ষা, অলঙ্কার, বক্তব্য, উপমা ও উপস্থাপনা ঠিক হয়েছে কিনা।
এজন্য চাই সাহিত্য আড্ডা, বয়োজেষ্টদের শলা পরামর্শ, ভালো বই সংগ্রহ। লেখক
হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রেসক্রিপশন হল অধ্যয়ন। লেখকের চৈতন্য মন তৈরীতে তার পড়ার
মাধ্যমে উপলদ্ধি বাড়াতে হবে। তবে এটা সত্য যে বেশি থেকে বেশি বই পড়ায় একজন
মানুষের সীমাবদ্ধকে ভেঙ্গে দেয়। নতুন নতুন জানার কৌতূহল আপনাকে পরিবর্তনের
আবাস দেয়। যেখানে জেগে ওঠার দীপ্ত মিছিল। একজন মনীষী যথার্তই বলেছেন।
প্রতিভা বলতে আমি কিছুই বুঝি না, বুঝি অধ্যয়ন। বিশেষ করে কবিতার ক্ষেত্রে
ছন্দ অলংকারের ব্যাকরণ জানা খুব জরুরী তা নয়। আগে পড়া, তারপর লেখা, তারপর
আপনাকে অবশ্যই ব্যাকরণ খুঁজতে হবে। একটার সাথে আরেকটা সুসম্পর্কও বটে।
একটি ভালো লেখা উপমা নির্ভর হওয়া চাই। দিন বদলের যুগে অনেক পরিবর্তনের
ছোঁয়া এসেছে সাহিত্যে। তাই চিরাচরিত প্রথাটা এখন আর বোধগম্য নয়। লিখতে হলে
জানতে হবে। জানতে হলে পড়তে হবে। কোথায় যেনো পড়েছিলাম “ অবিরাম ঘাঁটাঘাঁটি
করুন, সাধনা করুন। নিবিড় ও গভীর অধ্যয়ন ছাড়া কলমে খুব ভালো কিছু আসতে পারে
না।
অনেকে বলেন,
লেখালেখিটা গড গিফটেড, আমি বিশ্বাস করি না। মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে
সৃষ্টি করেছেন জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেক দিয়ে, এটাই ধ্রব সত্য। তার জ্ঞান
দিয়েই লেখা লেখির প্লাটফর্ম নির্ণয় করবে । গড়বে সুউচ্চ মিনার। সেটাই চরম
সত্য। ব্যক্তির উপলব্ধি, সামাজিক দায়িত্ববোধ, সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতায়
বিশ্বাসী, রাষ্ট্রের প্রতি ধারনা, আত্মবিশ্বাস এবং আনন্দবোধই লেখকের
চালিকাশক্তি। বাংলা কবিতার ছন্দকলা বইটির গুরুত্ব যে কতখানি একজন পাঠকের।
তার হিসেব করে কবি নিজেই “বাংলা কবিতা ছন্দকলা” বইয়ের ফ্ল্যাপ পৃষ্ঠায়
বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। “সার্থক কাব্য সৌন্দর্য নির্মাণ করতে হলে
প্রত্যেক কবিকে অবশ্যই ছন্দজ্ঞান থাকা আবশ্যক। কবিতা ও ছন্দ একে অপরের
পরিপূরক। ছন্দ ছাড়া কবিতা হয় না। ছন্দই কবিতার ধ্বনী প্রবাহ ও গতি সঞ্চয়
করে। কবিতার ভাব, ভাষা আর ছন্দ একত্রিত হয়ে কাব্যমাধুর্য তৈরী করে, যা পাঠক
হৃদয়ে করে রস সৃষ্টি। ছন্দ মানুষের মন মুগ্ধ করে। ছন্দের গতির স্পন্দনে
রসালো বাক্য সহজে মানুষের মনে রসবোধ সম্পন্ন আনন্দ সৃষ্টি করে। এই আনন্দই
কবিতার খেলা। কবিতা লিখতে হলে কবিকে অবশ্যই ছন্দের অনুশাসন মানতে হবে। নচেৎ
ছন্দহীন কবিতায় কবি পাঠক হৃদয় জয় করতে পারবেন না। কাব্যরস সৃষ্টির জন্য
কবির ছন্দের উপর ভালো দখল থাকা জরুরী। প্রকৃত প্রভাবশালী কবি ছন্দকে
মনোভাব প্রকাশের বাহন হিসাবে গ্রহণ করেন।
বাংলা
কবিতার ছন্দকলা, কবি এখানে নয়টি পর্বে আলোচনা করেছেন-কবিতা:
জন্মান্তরে/কবিতার বাহন ছন্দ/ ছন্দের উপকরণ: প্রাথমিক ধাপ/ ছন্দের শ্রেণি
সংস্থাপন/স্বরবৃত্ত: অনুশীলন/ মাত্রা বৃত্ত : মধ্যায়ের ছন্দ/ অক্ষরবৃত্ত :
প্রাচীন ছন্দকলা/ কবিতার অন্যান্য প্রসঙ্গ/ অনুশীলন পর্ব/ সর্বশেষে কবি “ঋণ
স্বীকারে বিভিন্ন লেখক এবং গ্রন্থের কথা উল্লেখ করেছেন।
কবিতা
: জন্মান্তর পর্বে কবিতার সুন্দর শিল্পের বর্ণনা দিয়েছেন ,কবি বলেছেন
কবিতা একটি বহতা নদী, স্রােত কবিতায় ছন্দ বা গতি, ঢেউ কবিতার শব্দ। আরো
বলেছেন মানব হৃদয়ের গোপন কথাগুলো বলার বিশ্বস্থ বন্ধু কবিতা। কবিতা
অমীমাংসিত রহস্যময় পৃথিবী, কবিতা চিরকালীন সতেজ সুন্দর চির যৌবনময় চিরসবুজ।
কবিতা সুন্দরের প্রকাশ। কবিকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করেন “বাইরের জগতের
রুপ-রস-গন্ধ-স্পর্শ বা আপন মনের ভাবনা-বেদনা কল্পনাকে যিনি অনুভূতি-
স্নিগ্ধ ছন্ধবন্ধ দেহদান করতে পারেন। তিনি-ই কবি। এখানে কবি ও কবিতা নিয়ে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জীবনান্দ দাশ, আব্দুল মান্নান সৈয়দ, কবি হাসান হাফিজুর
রহমান, কবি আহমদ রফিক, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, কবি আল-মাহমুদ, শেলি এবং
ইলিয়ট সহ আরো অনেকে স্তুতিবাদ আলোচনা করেছেন।
কবিতার
বাহন ছন্দ পর্বে ছান্দসিক প্রবোধচন্দ্র সেন, অমূল্যধন মুখোপাধ্যায় তারাপদ
ভট্টাচার্য, ড. সুনীতি কুমার চট্টোপধ্যায়, কবি আব্দুল কাদির। ছন্দ
সম্পর্কে তাদের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন।
ছন্দের
উপকরণ : প্রাথমিক ধাপ পর্বে অক্ষর, বর্ণ, ধ্বনি, ছেদ, পর্ব, পংক্তি,
চরণলয়/গতি, স্বরাঘাত, মিল,ছন্দসন্ধি, সমাস সন্ধি, ইত্যাদি মৌলিক বিষয়গুলো
বর্ণনা করেছেন। এছাড়া মুক্তাক্ষর, যুক্তাক্ষর, মাত্রাবৃত্ত, স্বরবৃত্ত,
বদ্ধাক্ষর, মাত্রা, নিয়ে সহজ সমীকরণে আলোচনা করেছেন, যতি- অনুযতি, উপযতি,
লগুযতি, অর্ধযতি, ছেদ, পর্ব-পর্বাঙ্গ, অতিপর্ব, অপূর্ণ পর্ব, পংক্তি বা
চরণ, স্তবক নিয়ে সুবিস্তৃতভাবে আলোচনা করেন। যা একজন পাঠকের জন্য বেশ সহজতর
এবং প্রয়োজনীয়।
ছন্দের শ্রেণি সংস্থান পর্বে ছন্দের
প্রকার-স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত নিয়ে সুন্দর আলোচনা করেন। কবি
ছক এ্যঁকে দেখিয়েছেন বিভিন্ন কলা কৌশল। গতিসিদ্ধ শিল্প নির্মাণে ছন্দের
আশ্রয় নিতে হয়।
অক্ষরবৃত্ত : প্রাচীন ছন্দকলা, এখানে
সনেট এর মিত্রাক্ষর ও অমিত্রাক্ষর, পয়ার, মহাপয়ার, তরল পয়ার, পর্যায় সম
পয়ার, মধ্যসম পয়ার, মালঝাঁপ পয়ার, ভঙ্গপয়ার ইত্যাদি নিয়ে বিস্তর আলোচনা
করা হয়েছে।
স্বরবৃত্ত : অনুশীলন, বাংলা কবিতা আদি
ছন্দ স্বরবৃত্ত। যে ছন্দগুলোই বাংলা লোক সাহিত্যের ছড়া, প্রবাদ, স্লোক
পাঁচালির বাহন হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। এ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, দ্বিজেন্দ্র লাল রায়, প্রবোধ চন্দ্র সেন, অমূল্যধন
মুখোপাধ্যয়, বিভিন্ন জনের মতবাদ আলোচনা করেছেন। এখানে লেখক স্বরবৃত্ত
ছন্দের বিভিন্ন কবিতার আদর্শিক প্লট নির্মাণ করে দেখিয়েছেন বেশ মুনশিয়ানার
সাথে।
মাত্রাবৃত্ত : মধ্যলয়ের ছন্দ , স্বরবৃত্ত
ছন্দের সড়ক থেকে মুক্ত হয়ে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ নিজস্ব একটি রাস্তা নির্মাণ
করেছে। মাত্রাবৃত্তকে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি বলে মনে করেন। তবে সত্যি যে
মাত্রাবৃত্ত ছন্দ আধুনিক কালেই সৃষ্টি। যেখানে গোবিন্দ দাস, বলরাম দাস,
শশী শেখর, প্রমুখ কবিদের কবিতায় এই ছন্দের ব্যবহার পাওয়া যায়।
শ্রীকৃঞ্চকীর্তন কাব্য, কবীন্দ্র পরমেশ্বর এর মহাভারত, জৈনদ্দীনের রসুল
বিজয়, শ্রীকৃঞ্চ বিজয়, লোচন দাসের চৈতন্য মঙ্গলকাব্যেও এই ছন্দের ব্যবহার
দেখা যায়।
কবিতার অন্যান্য
প্রসঙ্গ, এই পর্বে কবি বলেন কবিতাকে সর্বাঙ্গীন সুন্দর, মসৃণ, পরিপাটি,
লাবণ্যকান্তি, দিতে হলে আরো কিছু অপরিহার্য শিল্পগুণ সম্পর্কে জানার ইচ্ছার
কথা বলেছেন। কবিতার ছন্দগত দিক, ভাবগত দিক ও বিষয় বৈচিত্র। কবিতার জন্য
রস, অলংকার, অনুপ্রাস, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, চিত্রকল্প, ভাব অলংকার ইত্যাদি
বিষয়গুলো জানতে হবে।
অনুশীলন পর্বে, কবি এখানে
মাইকেল মধুসূদন দত্ত, কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আল-মাহমুদ, আবু
হাসান শাহরিয়ার, জসীম উদ্দীন, ওমর আলী, সৈয়দ শামসুল হক, রফিক আজাদ, তাদের
বিভিন্ন কবিতা অনুশীলন করার জন্য রেখেছেন। শুদ্ধভাবে কথা বলার চর্চাটা
নিজকে উপযুক্ততা তৈরীর একটি অন্যতম অধ্যায়। কথা বলার শিল্পটাই মানুষের কাছে
বেশি পরিচিত হওয়ার একটি সফল মাধ্যম। যদিও আমাদের মাঝে আঞ্চলিকতা বেশি কাজ
করে। তা বয়স্কদের পক্ষে দূর করা কঠিন। সেদিক থেকে শিশুদের টার্গেট নিতে
হবে। শিশুদের শেখার উপযুক্ত সময়। নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে শুদ্ধভাবে
বাংলাভাষা চর্চা করলে নিজের মধ্যে সমৃদ্ধ ভাবনা তৈরী হয়। বাংলা কবিতার
ছন্দকলা বইটি বিশেষ করে শিশু কিশোর সহ সকল শ্রেণির মানুষের কাছে ব্যাপক
আলোড়ন সৃষ্টি করবে । এমন বইটি বর্তমান সময়ে পাঠকের জন্য সত্যিই বিরল। যা
পাঠকের অভাব ঘুঁচাতে সক্ষম। বিশুদ্ধ উচ্চারণ, ছন্দ, যতি ও স্বরক্ষেপণ এবং
নিঃশ্বাস একজন পাঠক বাড়তি অনুষঙ্গ হিসেবে নিতে চান। প্রাত্যাহিক জীবনের মান
উৎসাহের জন্য স্বাভাবিকভাবেই অনেকে একটু ভিন্ন চেষ্টা করে সফলতা খুঁজেন
ভিন্ন মাত্রায়। মূলত : সদিচ্ছার মাধ্যমেই শুদ্ধচর্চা সম্ভব। সবকিছুর মূলে
চাই আবেগ। শিল্প সৃষ্টির পেছনে আবেগ অতি গুরুত্বপূর্ণ। জাগায় সুপ্ত প্রতিভা
। সন্ধান দেয় অনুপম শিকড়ের। রস দেয় সবুজাভ বৃক্ষের। হাতছানি দেয় আশা
জাগানিয়া ।
প্রকৃত পক্ষে সব শেষে একটি ভালো বই
চিন্তাকে বিকশিত করে । ভাবনার স্তরকে করে উন্নত । আত্মবিশ্বাস শিখায়। এবং
বদলে দিতে পারে চারপাশ । অসম্ভবকে করতে পারে সম্ভব । মানুষকে করে সৃজনশীল
এবং অনুসন্ধানী। আগামীর প্রজন্মের সুপ্ত প্রতিভা ও মেধার বিকাশে একটি ভালো
বই হিসাবে বাংলা কবিতার ছন্দকলা ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। লেখকের
জন্য সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা । বাংলা কবিতার ছন্দকলা বইটি সকল শ্রেণীর
পাঠক অন্তরে দাগ কাটুক.....।