শফিকুল ইসলাম সোহাগ এর গুচ্ছকবিতা
অবশেষে আকাশ ছুঁই
আমার মৃত উচ্চারণ গুলো
যাতনার গহীন সমুদ্রে উঠানামা করে
ইহকালীন বৈরী বাতাস-
অসন্তুষ্টির দেয়ালে হানা দেয়
ব্যথিত যাতনার হিরণ্ময় নগরে
তবু খুঁজি স্বস্তির পথ
অভাবের ঘরে তালা ঝুলিয়ে অবশেষে আকাশ ছুঁই
অতপরঃ মানুষ, অন্ধকার নিয়েই লোকালয়ে ফিরে
হে অপ্রতিদ্বন্দ্বী
বিরাট উৎসের মালিক
প্রত্নতত্ত্বের স্তপতি-নিঃশ্বাসের বিশ্বাস
হিসেব চেয়োনা,
তোমার অসীম রহমতের ঢের
বিপুলার সাগর চুঁয়ে পবিত্র জল গড়াক
তাসবীহ্’র দানা ছুঁয়ে ছুঁয়ে----
চৈতন্য মন ভাবনার আলিঙ্গনে মাথা নোয়াই
সাঁতরে যাই -অথৈ পাথার
আবেগের নদীতে বিছাই ইশকের জায়নামাজ
ঘোরলাগা নিষিদ্ধ ছায়া
তালা ঝুলে আছে মহাকালের পৃষ্ঠায়
দোঁয়াশ বাংলায় বাসা বেধেঁছে কিট
বিভৎস রাখাল ভূলে গেছে সম্পর্কের অতীত
অবোধেরা কৃত্রিম জলসায় পাঠ করে লাভের ফিকির
অবলীলায় আন্তঃনগর ভোট লুটে রাষ্ট্রের গুদাম
চৌমাত্রিক খাসলতে চটকায় নাগরিক অধিকার
খরাক্রান্তির ঘোরালাগা নিষিদ্ধ ছায়ায়
নির্বিঘ্নে উদর ভরে অন্ধ জাতক
মন্ধ চোখে নেশা লাগায় লালসার হাত,
পরোচিত আবালেরা রাজনীতি জ্যামিতির রেখাংশে
রোপন করে নিষিদ্ধ আকাল
নষ্ট গলির ওপাশে চিৎকার করে জনতার কাঁক
আর অন্ধচোরারা অনিবার্য পতনের আওয়াজে গিলে খায় ভোটের বাহাস
তখন দাঁড়কাক টিনের চালায় লুকিয়ে সারে কল্যাণের গান
অবাধ্য মানুষ আর অশ্লীল নির্লজ্জ চোখ
নির্বাসিত ক্ষমতার গরিমায় চ্যাঁচান অন্তঃসারশূন্যে
নীতিকথার বাঁকে দূরাগত বিভাজনের রক্তচোখ
পাথর চাঁপা দিয়ে রাখে- নাগরিক ঘিলু
যেনো মগজ-ধোলাইয়ের সুগভীর মন্ত্রপাঠ
পরিবর্তন চাই নির্বাচনের সিষ্টেম
স্বচ্ছদৃষ্টি -গণতান্ত্রিক
সব চোরেরা মুখ লুকাবে উগার তলায়
আর প্রতিষ্টা পাবে ইনসাফ-রাষ্ট্র হবে যৌবনা
স্বীকারোক্তির পদ্য এবং
অসম্ভবের
শব্দগুলো কুড়িয়ে বেড়াই , দিগবলয়ের সবুজ পাখি । জেগে ওঠার মন্ত্র শেখার
যান্ত্রিকতায় । ক্রমাগত সমস্ত রাত শিকড় নিয়েই স্বপ্ন করি । অনবদ্য প্রণয়
মেলার-বিকশিত আলোর ঘাটে । ভেতর এবং বাহির বুঝি । আমিও এখন কাব্য লিখি ।
স্বীকারোক্তির
জবান পাঠে নালিশগুলো দেই খারিজে । যদিও এখন আমার নামের নামজারিটাও শেষ
করেছি । প্রতিচ্ছবির পদ্য মাঠে-অনন্ত যার রহস্য পাঠ । শুদ্ধ বুলির আবাদ
শেষে ,অসীম শাখায় বকুল তুলি । মনন পথে ।
বিচ্ছেদ নেই-অক্ষরে যার রোজ মিতালি । চিত্রকল্প উদ্ভাবনে প্রতিদিনের ডায়েরি ভরি । অামিও এখন কাব্য লিখি ।
মমতার বাড়ী
যেখানে শিমের মাচা আর লাউয়ের ঘুরি
শালিকের দেশ যেন শ্যামলের বহুরুপী ঢেউ
সৃষ্টির গহীন সমুদ্রে -বাতাসের আবেগী হানা
কৃষকের মাঠে রাখালি সুর আর কাঠালের ঘ্রাণ
সবুজ আঁচড়ের দাগ- অসীমের পরমতম সুখ
মৃত্তিকার আকাশ মায়াবী অপেক্ষায় থাকে রোজ
নক্ষত্রের সড়কে জানি নেমে আসে বোধের ঢল
জীবন্ত নদীর শাখা-প্রশাখায় ফিরি মমতার বাড়ী
ওখানে ইচ্ছেরা প্রতি প্রহরে নিভায় মননের আগুন
জন্ম থেকেই পুড়ি বেদনাদগ্ধের ধূসরাভনীল মাঠ
যন্ত্রণাহীন মন্ত্র পাঠে সোনালি বৃক্ষ শাখায় পাখিদের শীষ
সবুজ পাতার জংশনে অনুবাদ হয় সৃষ্টিতত্বের বোধ
নিরব কুয়াশা ভেজা চোখ মুছি শহোরের দেয়াল ঘেষে
যাওয়া হয়নি আজও -উৎসবের বটবৃক্ষের কুটিরে
যেখানে হেসে ওঠা সকাল ফুলে-ফলে ভরা রুপালিগ্রাম
মধ্যবিত্তের ঘর
অপ্রত্যাশিত উচুমানের জমিটা বিক্রিই হলো
নামকাওয়াস্তের দরদামে
খরচ মেটালো সংসারী দৈন্যে---
চরাদামের মাইনা দিতে গিয়ে কর্পোরেট দরজায়-
ধাক্কা পোহাতে হল মধ্যবিত্তের ঘর
সুখ খুঁটে খায় অস্বস্তির ঋণ
করিমন ব্যাকরণবিরুদ্ধ কথায় তুলে আক্রোশের বোধ
মধ্যপ রাজ্যটারে করেছে শেয়ালের খুঁপ
আর কত দেখুমরে ভাই- ফেটে যায় অভাগার বুক
আমরার অধিকার নিয়া ছিনিমিনি
ভোটের পর চোখেই দেহেনা
আসে যেন আবার-
হাত ভাইঙ্গা দিমু-----
এই ঘরেই ঢুকে গিয়েছে মর্মভেদী অভিশাপ
সহসায় নির্বাসনে গেছে সুখানুভব সংসার
যে রাষ্ট্রে অমলিন উৎসব আর
দুঃখ উন্নয়নের মহাসভায় ভোজের আসর
দস্যুতার মাতাল হাটে চলে দেন-দরবার
রাজনীতির হনুমান খেলায় মজে সভ্যতার চোখ
অসংখ্য বাজেট প্রনোদনার মালগাড়ি-
প্রসব করে অকাল গণতন্ত্র
সেখানে তেলের মাথায় তেল -দিয়েই দায়সারা
নগর রাষ্ট্র
দেমাকীর নাট্য উৎসবের মহৌষদ
তলাবিহীন ঝুড়ি ছুঁয়ে যায় করিমনের ঘর
সেখানে মধ্যবিত্তের কিছুই নাই-----