শামসুজ্জামান মেহেদী-এর কবিতাগুচ্ছ
শামসুজ্জামান মেহেদী-এর কবিতাগুচ্ছ
স্বাধীনতার জন্য

 

তোমাকে ভালোবেসেছিলাম বলেই

যানজটের এই শহরে কাজ করতে করতে আমি আজ ক্লান্ত!!

 

তোমার মুখে হাসি ফোটাতে গিয়ে দেখি

পৃথিবীর যাবতীয় ব্যর্থ প্রেমিকেরা একজোট হয়ে

ক্ষমতার দম্ভে বারুদ হাতে আজ উন্মত্ত!!

 

কুঁজো হয়ে যাওয়া শরীর সুখ অনুভব করার আগেই

হালালের খাদ্য বিজ্ঞান খোঁজে!!

 

কুড়কুড়ে খিদে পেট চিবিয়ে আওয়াজ মাইক হয়া কয়া উঠে ঘুমায় যা বাছাধন!!

 

সতিত্ব বিক্রি করে খাদ্য অন্বেষণের চেয়ে

একটা ঘুম তোর বড়ই প্রয়োজন!!

 

বিজয়ের মাসে স্বাধীনতাকে বলি....

ওরে ভালোবাসা, ওগো মোর প্রিয়, ওগো অনন্য

ঘুম আর তন্দ্রার সংজ্ঞা হারিয়ে লড়ছি তোমার জন্য!!

 


চলন্তিকা

 

চঞ্চু দ্বারা চলন্তিকা ইশারা করিলে

তাঁর চোখ দুটো চঞ্চুতে আবিষ্ঠ হলেও

চোখে চোখ রাখা হয় না!

 

চলন্ত পথে কোন এক ঠোঁটের আবেদন

পথের দাবিকে মাড়িয়ে চলে অজানা পথিক, যেখানে

পথিকের ডান-বামে ফাঁদ পেতে থাকে নিশীথ পুলিশ!

 

জেনে রেখো এই শহরের মাছরাঙার চঞ্চুগুলোয়

কাঠঠোকরায় আবাস গড়েছে!

 

বিষক্রিয়া

 

হৃদ্যতা আজ জেনে গ্যাছে হৃদয়ের গভীরতা,

প্রতিটি পশমের পরতে পরতে যেখানে শোষণের জীবাণু

এই শহরে আমার কাছে আজ আর

ভ্যালেন্টাইন্স মূখ্য নয়!!

 

দেহের ভেতর দেহের বিষক্রিয়া, রাষ্ট্রের ভেতর রাষ্ট্রের!

আমি আর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বুঝতে চাই না,

আমাকে খাদ্যবিজ্ঞান শেখাও!!

 

ওগো প্রিয়তমা,

তোমার হাতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান তুলে দিলাম!!

একটু ভালোবাসার জন্য,

অন্তত: একটি নির্বাসন দাও!!

 

 

 

 

আত্মসুখ

 

জানি কি এক চেতনা উদ্বুদ্ধ করে আমাকে

ঘরের মঙ্গলশঙ্খ, প্রেয়সির স্নিগ্ধ চোখ, কাকাতুয়া মন!

 

জন-জীবনের সমস্ত আত্মসুখ বিসর্জন দিয়ে বেড়ে উঠে

হৃদয়হীন, লোভী, অত্যাচারী,নিষ্ঠুর,অসহিষ্ণু পরিবেশে!

 

জীবন মানেই জীবের চেতনা

পরিবেশ সে চেতনায় ঝংকার তুলে,

আমরা তখন দিশেহারা হই!!

 

ঠিক সেই মূহুর্তে কেউ কেউ

আমাদের চেতনাকে নিয়ে খেলা করে

তখন আমরা আবার দর্শকের সাড়িতে চলে আসি!!


 

স্বাধীনতার সংজ্ঞা

 

শহুরে জীবনটা আজকাল

প্রেম প্রণয়ের মাঝপথে পারিবারিক বিপত্তির মতোন, যেখানে অধীনতা নোঙর ফেলে পরাধীনতায়!

 

এখানে রাজনীতি চলে, কুটনীতি চলে

চলে শোষন, বঞ্চনা, নির্যাতন, কর্তৃত্ব! আরো থাকে

পাওয়া না পাওয়ার বেদনা!

 

কি এক অদ্ভুত মায়াজাল তাঁড়িয়ে

তবুও স্বাধীনতা খুঁজে মন!

 

সংগ্রাম করি, স্বাধীনতার স্বাধীনতা আনি

সুখের অভিভাবক হয়ে ভাবি-

 

হে জননী তুমি আজ কতটা স্বাধীন

কতটা পরাধীন!!

 


ঠিকানা

 

কোন রাজ্যের বাসিন্দা আমরা....

যেখানে আনন্দ নেই, প্রেরণা জাগানো প্রেম নেই....

সম্ভাষণে কারো প্রতি দরদ নেই...

কোথায় ছিলাম সেই অতীতের স্মৃতি নেই

কোথায় দাঁড়িয়ে আছি সে বর্তমানের গতি নেই

কোথায় চলেছি সে ভবিষ্যতের ঠিকানা নেই

মনিহীন চোখ , চোখহীন মুখ

কোন রাজ্যের বাসিন্দা আমরা!!

 

একসময় এই কথাগুলো

আমাতে ভীষন সত্যি মনে হতো!

আবেগে আচ্ছন্ন করতো , হতাশার স্থলে

প্রত্যাশায় ভরে দিত জীবনকে , কিন্তু আজকাল কোন কিছু আশা করিনা বলে প্রত্যাশাও করিনা। তাই বলে কি সুখে নেই আমি কিংবা আমরা ?

 

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন , সুখ লাভের সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে 'নিজেকে সর্বাবস্থায় সুখী মনে করা' কথাটি অনুভব করছি বেশ দিন, ম্যাগার মনোবিজ্ঞানী হতে পারিনি!

 

তাই ভাবছি 'ফ্রয়েড'কে শ্যাডোতে রেখে 'সক্রেটিস'কে সামনে আনলে ক্যামন হয়। আসলে আমাদের 'ল্যাটেনসি পিরিয়ড'টা বোধ' এখনো কাটেনি! কহড়বিঃয ঞযুংবষভ , আগে নিজেকে জানতে হবে! অথচ আমরা ' মৈমনসিংহ' বাসিরা আমাদের সম্পর্কে আদৌ কি কিছু জানি ?

 

আমরা কি জানি একদা আমাদেরই কাননে ফুটেছিল ' মহুয়া' ফুল। অথচ পশ্চিমা জগতের অনেক খবর নিয়ে আমরা মাতোয়ারা হই!!

 

 


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান