কবি : শামীম আজাদ
মসৃন মার্বেল
When spoken words lose their voices
The speakers die without choices.
তোমাকে আজ এত টক্টকে দেখাচ্ছে যে !
রাতে শোনা সব রবীন্দ্রসংগীতগুলোই ছিলো প্রচন্ড লাল,
ঠিক শৈশবের মত।
শৈশবস্মৃতি এক অনন্য যাদুকর
যার ম্যাজিক চলতেই থাকে
বলে আমি ঠোঁটে ফোয়ারা এনেছিলাম।
শুনে তিন মানুষ পেছনে দাঁড়ানো এক বয়ষ্ক বালকের কন্ঠ থেকে উচ্ছ্বাস উড়ে এসেছিলো।
তার মুখে ও পোশাকে হতাশায় হদ্দ হয়ে যাওয়া মানুষের নানান রকম মানচিত্র।
তুমি মানুষটাকে আড়াল করে দিলে
আমি তার দাঁত দেখতে পেলাম না।
আমরা তখন এ্যাকসেন্ট্রিক ও এ্যক্লেইমড আর্টিস্ট
লুইস বোর্জোয়ার কাজ নিয়ে কথা শুনবো বলে হোয়াইট চ্যাপেল আর্ট গ্যালারীতে কিউ ধরেছি।
আমাদের ঠিক পেছনের মানুষটি নারী না পুরুষ বুঝতে না বুঝতেই সে টিরামিসু টিউলিপ হাসি দিয়ে থ হয়ে যাওয়া এই আমাকেই
সোজা সিলেটিতে বলল, আফনে সামনে আগ্গাউকা!
বিলেত বলে কথা!
এখানের আরেকটি ভাষা ইংরাজী !
অথচ টিউলিপ পরা দেখে বুঝতেই পারিনি
কিউয়ে আমাদেরো কেউ আছে।
এরা আর্টস এ্যাডমিনে দাঁড়ায়, নিউইয়র্কার পড়ে,
১৮৯৪ সালের ব্লাইন্ড বেগার পাবে গিয়ে
খোলা চোখে পাইন্ট নিয়েই বসে
এমনকি প্রতিবন্ধীদের প্রপিতামহরা পাপী ছিলেন এমন কথা খারিজ করতে ইংরেজীতে ভাল ডিবেটও করে!
নিশ্চয়ই ওর দাঁতও উৎকৃষ্ট।
মনে আছে, একদিন,
আমাদের প্রথম কালে
চলতি লাল বাসের দোতলায়,
ল্যা মিজারেবল দেখে রাতের বেলায়
তোমাকে হো হো হাসির মধ্যে থামিয়ে বলেছিলাম-
চোখ বন্ধ করে ওভাবেই থাকো।
ট্রফেলগার স্কোয়ার পেরিয়ে যেতে যেতে
মুখগহব্বরটা সেরকম অটুট রেখে
তুমি ইউনিক্লো কোটের কলারটা পেছনে ঠেলে দিলে।
সিটের নিচ থেকে হিটিং পা উষ্ণ করে দিচ্ছিলো।
আমি গ্লভস খুলে
বাঁ হাত তোমার জুলপির উপর রেখে
ডান হাতের নির্দেশিকা দিয়ে
তোমার ওপর পাটি দাঁতে ঘষা দিয়েছিলাম!
তুমি, এটা কি হ’ল এটা কী হ’ল বলবার আগেই-
মানুষের সুখী মুহূর্তে
আমার কি যে মায়া লাগে!
আর তাদের দাঁত ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করে,
বলেছিলাম আমি।
অদূরে সুইট চেস্টনাট ভাঁজছিল
সেই মাল্টা থেকে মশলা আনা পিটার।
পকেটে টিকেট ঢুকিয়ে হলে প্রবেশের আগে
তুমি খপ করে আমার হাত জোড়া ধরে বল্লে,
আনবো এক ঠোঙা গরম গরম?
তুমি জানো, আমি ঐ চেস্টনাটে
আমার শৈশবের বৃষ্টিদিনের
টিনের চালের শব্দ শুনি,
পোড়া কাঁঠাল বিচির গন্ধ পাই।
বলেছিলাম, নাহ্।
আমি আসলে সেই
হতাশায় হদ্দ হওয়া মানুষটার আদৌ কোন
দাঁত আছে কিনা
দেখতে চেয়েছিলাম।
তা হ’লে আমার মগজে কোন
কাঁচা ইঁদুরের গন্ধ আর ধাঁ করে পেতাম না।।
৭ এপ্রিল ২০১৯
লন্ডন