চোখ ভিজে যায় রক্তাশ্রুতে-পুতলি ফেটে পুরোটাই লাল
বিধ্বস্ত জনপদে কংক্রিটের জমানো স্তুপ ঘন অন্ধকার
এর
নিচে ক্ষত মানুষের আহাজারি,ডাক শুনি আধিয়ার
পৃথিবী অবাক ,দেখে জনহীন বিরান বধ্যভূমির কঙ্কাল !
মনে হয় কোন এক পরিত্যক্ত মর্গ পুরোটা হাসপাতাল
যতদূর দৃষ্টি যায় সুনামীর মতো ভাঙা শহরের ঢেউ
ওঠে ,মরু ঝড় তান্ডবের মতো ,দিশেহারা সব নেই কেউ
জনম জনম ধরে -মাতৃভূমি ছিনিবারে হায়েনা বেসামাল!
এত সব দেখিতেছি -মানুষ শব হয় পাষাণের বেদিতে
মুক্তির পদতলে -স্বাধীনতা রুঢ় হয়ে আসে এ পৃথিবীর
কাছে ,বুকে তার ভীমরুল দংশন !যেনো রক্তের নদীতে
যতো ভাবি ততো আমি ডুবে যাই ভ্রমে,দোষ দেই নিয়তির
রেনেসাঁ আসেনা-মৃত্যুবীজ ওম দেয় গাজার রুক্ষ ভূমিতে
আশাহত নই ,প্রচণ্ড আক্রোশে হাড়ে শান দেই দধীচির ।
মানুষ মানুষে করে এপাশ ওপাশ খেলা
পৈথানের কাটি শিথানে নিলেই আজব তেলেসমাতি …
নখদন্ত বিষে ভরা যে জীবনের
এখানে শহদের পেয়ালা দেখে আত্মভোলা হয়োনা
সে-তো মেঘের গাংচিল ,নৈঃশব্দে ওড়ে যায় বৃষ্টির দেশে ।
মনোস্তত্ত্বের বেয়াড়া ঘোড়ার লাগাম ছিড়ে গেলে
বিজলির চাবুক কী তারে বসে আনতে পারে?এনেছে কি -
কেউ কোনদিন ॥
গোলাপের গ্রীবায় ঝরে কবির কান্না
ইরানে নিশাপুরের বিরান গলিতে
গোলাপের গ্রীবা বেয়ে ঝরে কবির কান্না
এখনো
খৈয়ামের বিদগ্ধ হৃদয়ের কস্তুরী সুঘ্রাণে
মৌ মৌ করে হাওয়ার শরীর ,
সে ঘ্রাণে মাতাল হয় কিছু ভাবুক অন্তর
এখনো প্রতিটি বালুকনায় সূর্যের আলো পড়লেই
সোনালি অক্ষরের মর্মরধ্বনি ,তাদের নড়াচড়া,
হাততালি শুনি ;
চাঁদের আলোতে কবির মৌন প্রহর ভেঙে
জেগে ওঠে মৃত আত্মার মিছিল
যখন ঐ দূর থেকে ভেসে আসা পাহাড়ের প্রতিধ্বনি শোনা যায় ...
এক সুরাহি সুরাব দিও একটি রুটির ছিলকে আর
প্রিয় সাকি,তাহার সাথে একখানা বই কবিতার ,,
ওমর খৈয়াম ,
ভাবের দেশে এখনো বেহুশ
নাম জপে প্রিয়ার সুবহা সাম ।
দ্রাক্ষারসে হয় কি নেশা ?
যে নেশা টুটে যায় ক্ষণিক পর,
প্রিয়ার নামে এমন নেশা
সে নেশায় মাতাল আমি জীবন ভর ।।
এখন কবিতার মৌসুম । দেদারসে বিক্রি
হয় কবিতা মেলায়,চটি কবিতার কদর আকাশ ছুঁয়ে যায় !
কবিতার সাথে নায়ক নায়িকার মিমিক্রি
কমনীয় লাস্যময়ী ছবি এক্কেবারেই ফ্রি !
সাথে অটোগ্রাফ রঙ করা হাসি একরাশ একটি কিনলে দুটি বোনাস !
দুর্বোধ্য কবিতা বড্ড কষ্টের কাবুলিত্তয়ালার মতো লেবাস ।
যেনো কাঁটার বাগানে পুষ্পের আনন্দে
পরাবাস্তব স্বপ্নের দেশে বারোমাস কবি শব্দ সেলাই করেন
আর আমি সারাটি বছর অপেক্ষায় থাকি একদিনের বাঙালী বাবু নরেন ।
কালের কলম লিখছে কি কিছু স্বচ্ছ ?
পুরানো ক্ষীরেই ঢালছে শুধু গুড়
বাতাসে ওড়ে ধীবরের বরশি গুচ্ছ
নদীর গহীনে গজিয়েছে হাতিশুঁড় ।
কাকের কপালে সূর্যের রক্ত সিঁদুর
রাজহংসের পায়ে লেগেছে লৌহ বেড়ি,
কচ্ছপের পিঠে চড়েই আমি বিভোর
ইচ্ছে করে দেবো ,দুর্গম গিরি পাড়ি ।
দিনের আলোতে তাই চলতে নারাজ
রাত হলে চলি রাজার মতোন ঢঙে ,
তস্কর হয়ে নিচ্ছি নিষ্কাম সাধু সাজ
পরেছি পোশাক কতোনা রঙের ঢঙে ।
মুখে যাহা বলি ঠিক বিপরীতে চলি
ঘোলা -জলে আঁকি ছবি জল তরঙ্গে ।