শামীম আহমদ এর গুচ্ছকবিতা
শামীম আহমদ এর গুচ্ছকবিতা

আর কতো বিভাজন রক্তের

শান্ত নদীর বুকে বৃষ্টি যেমন আনে জলোচ্ছ্বাসের কম্পন ,শিহরিত হয় নদী ,ঠিক তেমনি নিঃশ্বাসের স্পন্দন শরীর স্পন্দিত করে নিবিড় আলিঙ্গনে,অদেখা পুষ্পের ঘ্রাণের মতো
নিঃশ্বাস আর শরীরতো একই সুঁতোয় গাঁথা,নিঃশ্বাস থাকলে আপাদমস্তকের সম্মিলিত নাম মানুষ ,কালো অথবা সাদা যে রঙ’ই বলুন এ-যে স্রষ্টার সুসম বণ্টন একে অন্যের রক্তের ভাগিদার এটা সৃষ্টির চেইন অফ কমান্ড ,শুরু থেকেই আমরা একই প্রজাতির ডিএনএ বহন করি ,অথচ আজ অবলিলায় ভেঙে যাচ্ছি স্রষ্টার শৈল্পিক সৃষ্টি ,নিঃশ্বাসের পরিন্দা উড়ে গেলে সবাই একএকটা মৃতদেহ ছাড়া আর কিচ্ছু নয় , জন্মের সময় সবাই ছিলো মানব সন্তান অথচ সামাজিক কাঠামো আর উন্নত সভ্যতা ধর্মের স্বতন্ত্রতা আমার নাম দিয়েছে চাঁনমিয়া ,তোমার নাম চন্দ্র শেখর আর উনার নাম বাংকি মুন !আমি ধার্মিককে কিছু বলবোনা আপনারা নিজের ধর্মকে ধর্মের নিময়েই পালন করুন সকল ধর্মই অহিংস নীতিতে অটল ,
আমিও পালন করি আমার ধর্ম ,
কিন্তু ধর্মের টিকাদারদেরকে বলবো আর কতো বিভাজন ?আর কতো রক্তের স্রোত ,এই স্রোতে ভেসে যাচ্ছে সিরিয়া ,ইরান ,ভেসে যাচ্ছে হাজার বছরের ভাতৃত্ব্যবোধ ভারতবর্ষে !মানুষ আজ দিশাহারা পৃথিবীর পথে,কোথায় পালাবে মানুষ কোথায় পাবে অভয়আশ্রম যেখানে থাকবে কেবলই মানুষের বসবাস,দেহের সাথে প্রাণের মতো মিশে থাকবে শেষ সূর্যাস্ত পর্যন্ত ।
মিশ্রিত রক্তেতো কারো নাম লেখা নেই কে কালো কে সাদা কে হিন্দু কে মুসলমান ,কে জৈন কে কনফুসিয়াস ,তাহলে তুমি কে হে মশাই এই বিভাজনের কর্ণধার,যেখানে স্রষ্টা বলেছেন এ বাগান তিনি সজ্জিত করেছেন তাঁর আপন খেয়ালে ।

বুকের পাঁজরে নিঃশব্দে ভাঙে মহাকাল 

প্রেম সে’তো অলিক,
গ্রীস্মের প্রখর রৌদ্রে যেমন সূর্যমুখী ফুল নিজের অজান্তে দিক পরিবর্তনের নীরব সঞ্চালনে অবচেতন মনে সময়ের সহযাত্রি হয়,বর্ষার নতুন পানিতে যৌবনমাঝির নৌকাবিলাসের মতো ।
ভাটির টানে নদী যখন বালিয়াড়ীতে মাথা গুজে তীব্র আর্তনাদ করে তখন আর অস্ফুট ব্যথার লহরি কেউ শুনেনা ।
প্রণয়ের আটপৌরে জীবনে
কপালের কালো টিপ থেকে কষ্টগুলো চোখের কাজলা দ্বীপে নোঙর করে তারপর চিবুক বেয়ে হারিয়ে যায় অজানায় , নিছিদ্র বুকের পাঁজরে নিঃশব্দে ভাঙে মহাকাল ।

আপেক্ষিক সময় 

সময় আপেক্ষিক ,
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের তত্ব ;
আমরা সময়কে অনুভব করি একটি স্রোতশ্বিনীর স্রোতধারার মতো চঞ্চল ,আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা-লব্ধপ্রতিষ্ঠ জ্ঞান দিয়ে চলমান প্রবাহ যা কেবলই ভবিষ্যতের দিকে ধাবমান ,তাই অতীতে যাওয়ার সক্ষমতা আমাদের নেই আর,ভবিষ্যতে কী ঘটনা অপেক্ষমাণ তাও কল্পনার সামিয়ানার তলে আসেনা কখনোই ,মাঘ কুয়াশা ভোরের বিমূর্ত কুহেলিকা যেমন ।

সময়ের প্রতিটি স্ন্যাপসর্ট মূহুর্তের পর মূহুর্ত
একের পর এক সমান্তরাল পটভূমি স্থিরচিত্রে সাজিয়ে দেখুন মনে হবে যেনো মহান এক স্রষ্টার একটি মহা কল্পনার বাস্তব চিত্রকল্প ;
যারা আসছে সবাই যাচ্ছে চলে
কেউ কিছু বলে কেউ না-বলে ,
যারা অপেক্ষমাণ তারা আসবে আবার চলেও যাবে
সময়ের স্রোতে ভেসে - --
কী অনিন্দ্য কারূকাজ ,এক প্রাণেতে এক পৃথিবী ,আমার মতো আমার ,আপনার মতো আপনার ।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান