নিতান্ত অবহেলায় জীবনের উত্থান পতনে আমরা যেনো অপু আর দূর্গা ।
গোধুলী থেকে সন্ধ্যা হয়ে রাত্রি গড়িয়ে এলে আঁধার ঘন হয়ে আসে একটি সুপ্রসন্ন প্রভাতের অপেক্ষায়,যদিও প্রভাত হয় প্রকৃতির নিয়মে কিন্তু ধর্ম, সামাজিক বৈষম্য হয় না দূর ,
যাঁরা দেবীর মূর্তি গড়েন মেধা আর মনের মাধুরী মিশিয়ে, শৈল্পিক সৌন্দর্য যাঁদের আরাধনা দেবালয়ে তাঁরাই আশ্রয়হীন নিগৃহীত যুগের পর যুগ !
এক সময় আমরা ঐ আঁধারের খোলস ভাঙার চেষ্টা করে আবার নিজেরাই অন্ধকারে মিশে একাকার হয়ে যাই ,তারপর সমাধির এপিটাফে অক্ষরের কঙ্কাল হয়ে ঝুলে থাকি সময়ের সাক্ষী হয়ে কেউ হয়তো বিজেতা আর কেউ নপুংসক ।
অক্ষর, কবি ও মিসিং মিটিওরাইট
অক্ষরগুলো কোন মিসিং মিটিওরাইট নয়
মহাশূন্য থেকে ছিটকে পড়ে
বায়ুমণ্ডলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে,
অক্ষর হলো প্রাণের স্পন্দন
হৃদয়ের বিস্তৃর্ণ মানচিত্র জুড়ে যার নির্মল হৈহুল্লোড় ,
হীমেভেজা রাতে পেঁজা তুলোর মতো ওড়ে
নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে কবিতা হয়ে ,
এ যেনো কবির অরূপে স্বরূপ আরাধনার মতো ।
কবিতা ধীর পায়ে হাঁটে ,বহুদূর যায়
বাতাসের পায়ে যেনো ছন্দনূপুর ।
নিকষ আধাঁরে ,বজ্রের পথচিহ্ন ধরে ,কবি পথচলে
যেতে যেতে এক সময় ঈশ্বরের খুব কাছাকাছি কবি ,
কালোকে আলো করে মাটির তবকে জ্বেলে আগুন
জ্যোৎস্নার শরীর যখন পুড়ে হয় ছাই অমাবস্যার তাপে !
এ আগুন পোহাতে এসোনা সখি ,ভস্ম হবে ।
যদি হও অনলের কোরক
যদি ভালবাসা হয় ফুলে
যদি ভালবাসা হয় কবিতায়
তবে পুড়তে হবে নির্ঘাত জেনো
সাথে পোড়াতেও পারো তাবৎ ব্যথিত হৃদয় ।
ফাগুনের চিৎকার
ভাঙা পাথরের পথে এখনও হামাগুড়ি দেয় -
বাংলা বর্ণমালাগুলো
বুকের গভীরে কে যেনো জ্বালিয়েছে হোম
নিঃশ্বাসে বিষ ঢালে দুরন্ত সময় ,
দাঁড়াতে পারেনা আর ,পাথরের ধারালো নখের
আচড়ে রক্তাক্ত হয়ে মৃতপ্রায়
একটি আটই ফাল্গুনের অধীর অপেক্ষায় ।
বেনিয়া বুদ্ধিজীবীদের ঠোঁট থেকে হায়নার মতো
টুক্ করে লাফ দিয়ে বেরিয়ে আসে
ভিনদেশি শব্দের আগ্রাসন
ফেব্রুয়ারি গিলে খায় আটই ফাল্গুনের ভুবনরাঙা
শিমুলের হাসি ,
ফাগুনের চিৎকারে আগুন লাগে বাসন্তী বনে
আর পুড়ে পুড়ে ভস্ম হয় ভাষাশহিদের অমলিন স্বপ্নগলো ।
বিস্তৃর্ণ আনন্দলোকে আগুন
প্রান্ত থেকে প্রত্যন্তে -
উতলা পৃথিবীর বুকে কেবলই অন্ধকার ঝরে
অগ্রিম অন্ধকারে গিলে খায় রেনেসাঁর মশাল ।
কালো রাত অন্ধকারে আরো কালো আজ
দুর্যোগ ঘনঘটা, অবাধ্য সাপের মতো সময়ের গতি,
দুধারি খঞ্জর কেটে দেয় হাজার বছরের সঞ্চিত বোধ ,
এ যেনো সুঁতাকাটা ঘুড়ির মতো হৃদয়ে ওঠে থরথর কম্পন ।