কবি ও কথাসাহিত্যিক নাহিদা আশরাফী
এ সময়ের বরেণ্য কবি ও কথাসাহিত্যিক নাহিদা আশরাফীর আজ ৪৬তম জন্মদিন । আজকের এই দিনে তিনি পটুয়াখালীর নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার দাদাবাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জে।
নাহিদা আশরাফী বর্তমানে "কবিতা ক্যাফে" এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর দায়িত্ব পালনসহ লেখালিখি সঙ্গে যুক্ত আছেন। তার কর্মজীবন শুরু ৯০-এর দশকে। স্কুলছাত্রী থাকা অবস্থাতেই ওই সময়ে বিটিভিতে নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন। মাস্টার্স সম্পন্ন হওয়ার পর ২০০৮ সালে বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ২০১২ সালে যোগ দেন ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে লাইফস্টাইল ও বিনোদন বিষয়ক ম্যাগাজিন নন্দিনী’র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আশরাফ আলী মৃধা ও নিলুফা আশরাফ দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে নাহিদা আশরাফী বড়। ছোট ভাই অস্ট্রেলিয়ায় রিয়েল এস্টেট সেক্টরে যুক্ত আছেন।
বাবা বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ডেভেলপমেনট করপোরেশনের (বিএডিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। মা গৃহিনী। বাবার চাকরির সুবাদে শৈশব কৈশোরে বর্ণাঢ্য সময় কেটেছে তার। এইচএসসি সম্পন্নের আগেই বাংলাদেশের প্রায় সবকটি জেলা ঘোরা হয়েছে তার। বাবা সরকারি দায়িত্বে থাকার ফলে যখনই যেখানে ট্যুরে যেতেন কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। যার ফলে এখনও খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারেন এই কথাশিল্পী।
কবির শৈশব-কৈশোরের বেশিরভাগ সময় কেটেছে মাদারীপুরে। এখান থেকেই এসএসসি, এইচএসসি সম্পন্ন করেন। স্কুলজীবনে যশোর ও রাজবাড়ীতেও চমৎকার সময় কেটেছে তার।
মাদারীপুর ডনোভান গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পাসের পর ভর্তি
হন মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজে। এরপর কুষ্টিয়া ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর
অলিয়স ফ্রাসেজে ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে পড়াশুনা করেন।
প্রিয় ঋতু বর্ষা। বৃষ্টিতে রিকশায় ঘুরতে ভীষণ পছন্দ তার।
মুভি দেখতে, গান শুনতে খুব পছন্দ করেন। আর্ট ফিল্ম আর হলিউড মুভির প্রতি বাড়তি টান আছে তার। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে রয়েছে দীর্ঘ বিচরণ। বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন টানা তিন বছর। পছন্দের অভিনেতা টম হ্যাংকস, জনি ডেপ। অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন, ফেরদৌসী মজুমদার।
একনজরে নাহিদা আশরাফীর সাহিত্যকর্ম-
গ্রন্থতালিকা
০১- এপিটাফ (কবিতা, ২০১৫)
০২-শুক্লা দ্বাদশী (যৌথ কবিতাগ্রন্থ,২০১৬)
০৩-দীপাঞ্জলি(যৌথ কবিতাগ্রন্থ,২০১৬)
০৪- মায়াবৃক্ষ- (গল্পগ্রন্থ, ২০১৬)
০৫- প্রেম নিয়ে পাখিরা যা ভাবে (কবিতাগ্রন্থ ২০১৮)
০৬- জাদুর ট্রাঙ্ক ও বিবর্ণ বিষাদেরা(গল্পগ্রন্থ ২০১৯)
সম্পাদিত গ্রন্থ
০১- মুক্তির গল্পে ওরা এগারোজন (মুক্তিযুদ্ধের গল্প২০১৮)
০২- বিজয়পুরাণ (বিজয়ের গল্প সংকলন ২০১৯)
সম্পাদক
জলধি- সাহিত্যের কাগজ
কবির ৪৬ তম জন্মদিনে দীর্ঘ সাক্ষাতকার নিয়েছেন সাহিত্যবার্তার সম্পাদক , কবি আরিফুল ইসলাম
আরিফুল- কেমন কাটছে দিনকাল? আপনি গল্পকার হিসেবে সুপরিচিত হলেও মূলত কবিতার মানুষ। তাই কবিতা দিয়েই শুরু করতে চাই। কবিতা আসলে কি?
নাহিদা- জি ভালো। আমি মূলত মানুষ হবার সাধনা করে যাচ্ছি। গল্প না কবিতার এখনই তা নির্ণয়ের সময় আসেনি। কবিতা কি? আলো বা হাওয়ার মত। অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পারেন, ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করতে পারেন কিন্তু কবিতা সর্বদাই তৃষ্ণা জাগানিয়া। ধরা বা ছোঁয়ার বাইরে।কবিতা তো পদার্থ, রসায়ন বা গনিতের সূত্র নয় যে আপনি বা আমি একটা সংজ্ঞা দিলাম আর তা থেকেই নির্ণীত হল কবিতা কি।
আরিফুল- সমসাময়িক কোন বিষয়টি কবিতায় প্রাধান্য দিচ্ছেন। অথবা কবিতা কি কোন সমসাময়িক বেড়াজালে আবদ্ধ?
নাহিদা- কোন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে যেমন কবিতা লেখা সম্ভব নয় আবার তার সাথে এটাও পরিষ্কার যে একজন কবির কবিতায় সমকালীন চিত্র খুঁজে পাওয়া না গেলে কবির চিন্তার চরিত্র এবং কবিতার আদর্শিক অবস্থান আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে না। যতদূর জানি বাংলা কবিতার উৎপত্তি হয়েছিলো মূলত পালি, প্রাকৃত সংস্কৃতি এবং সামাজিক রীতিনীতি থেকে। সেই সময়কার কবিতাতেও আমরা তৎকালীন সামাজিক রীতিনীতি, আচার, বা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে খুঁজে পাই। তাহলে ভেবে দেখুন সমসাময়িকতাকে কখনই কবিতার বাইরে রাখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু ওই যে বললেন বেড়াজাল। কবিতাকে সমসাময়িক কেন, কোন বেড়াজালেই আবদ্ধ করা যায়নি, যাবেও না কখনো। বাংলা কবিতা বরাবরই রোমান্টিসিজম ও রিয়েলিজম এর দ্বন্দ্বকে সাথে নিয়েই পথ চলেছে। সামাজিক রাজনৈতিক অস্থিরতা, যান্ত্রিকতাবাদ, হতাশাবাদ, অবক্ষয়ের অতলান্ত স্পর্শ করা সমাজে একজন কবি নিশ্চই নিরুর মত নিরুদ্যোগ থেকে বাঁশি বাজাতে পারবেন না। কবির কাছে কবিতা কখনও 'মক্তবের মেয়ে চুলখোলা আয়েশা আক্তার' আবার কখনও 'পথের চির পথিক। তার কি সহে ঘরের মায়া।'
আরিফুল- গল্পের প্রসঙ্গে আসি। গল্পে আপনার উপস্থিতি কতটুকু।
নাহিদা- গল্পে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি বেশি এটা নির্দ্ধিধায় বলা যায়। এর কারন অবশ্য আছে। গল্পের যে মেদহীন, নিবিড় নিজস্ব বয়ানরীতি তা আমাকে খুব টানে। প্রেক্ষাপট, চরিত্র নিয়ে বিশ্লেষণের , বিষয় ও আঙ্গিকের ধারালো উপস্থাপনের সুযোগ গল্পে অনেক বেশি। তাই গল্পটাই বেশি লিখতে চেষ্টা করি। কিন্তু এটাও সত্যি যে গল্প অনেক মনোযোগ ও নিবিষ্টতা দাবী করে যা আমার পক্ষে যোগান দেয়া প্রায়শই বেশ কষ্টকর হয়ে যায়।তবু মনের মধ্যে কোথাও লালন করি একদিন হেমিংওয়ে বা কাফকার গল্পের মত আমারো কোন একটি গল্প মহাকালের বাতাসকে আন্দোলিত করবে। স্বপ্নের ডানায় তো স্পিডব্রেকার লাগানো যায় না। তাই না?
আরিফুল- প্রচারকাঙ্গাল কবি-সাহিত্যিক সবসময়েই থাকে। তাদের ডামাডোলের আড়ালে হারিয়ে যান প্রকৃত লেখক। লেখক- পাঠকের দূরত্বের সূত্রপাত কি এ কারনেই?
নাহিদা- সত্যিই কি হারিয়ে যায়? আমার তো তা মনে হয় না। পাখি আকাশের উপর নয় নিজের ডানার উপর আস্থা রেখে ওড়ে। একজন লেখককে তার নিজের লেখার উপরে আস্থা রাখতে হয়। আস্থার এই জায়গাটি যদি শক্তপোক্ত হয় তবে প্রচার প্রচারণা ডামাডোল আপনার হয়ে পাঠকই করবে। আর সমঝদার পাঠক মাত্রই জানে কোনটি গ্রহণের আর কোনটি বর্জনের। প্রচারণার ঝলকানি দিয়ে তো জীবনানন্দ বা শহীদ কাদরী হওয়া যায় না। আজ না হোক কাল পাঠক তার যোগ্য লেখককে খুঁজে নেবেই। তবে লেখক পাঠকের মাঝখানে একটু সেতু আছে যার কথা না বললেই নয়। সেই সেতুবন্ধনটি হল প্রকাশক। পাঠকের হাতে ভালো বই তুলে দেবার দায় মূলত তাদেরকেই নিতে হয়। প্রকাশনা শিল্পকে পুরোপুরিভাবে বানিজ্যিক অবস্থানে না নেয়াটাই উত্তম।
আরিফুল- এই ধারাবাহিকতায় আরেকটি প্রশ্ন। লেখকরা ইদানীং নিজের টাকায় বই প্রকাশ করছেন। প্রকাশকরাও টাকা পেয়ে যাচ্ছেতাই বই ছাপছেন। এটাকে আপনি কিভাবে দেখেন। বইমেলায় এই যে এত এত বই আসছে সব কি পাঠযোগ্য?
নাহিদা- ইদানীং নয় তো। এটা সব সময়েই হয়ে আসছে। পঞ্চাশের দশকে প্রকাশনার অবস্থা তো ছিল বেশ দুর্বল। প্রকাশক ছিল না বললেই চলে।
১৯৫০ সালে যে সব নতুন কবিতার বই বেরিয়েছিল তার অধিকাংশই কবি বা লেখকের নিজের অর্থে প্রকাশ করেছেন।। হাসান হাফিজুর রহমান, মুস্তাফা নূরউল ইসলামের সম্পাদনায় দাঙ্গার ৫টি গল্প প্রকাশ হয় পাট বিক্রির টাকায়। দেওয়ানগঞ্জে পৈতৃক ব্যবসার পাট বিক্রি করে টাকা এনে হাসান হাফিজুর রহমান কবিতার বই প্রকাশ করেন। আলাউদ্দিন আল আজাদের উপন্যাস 'জেগে আছি' নিজের টাকায় প্রকাশ হয়। ১৯৫৪ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম বই প্রকাশিত হয়। সেখানেও তাঁকে বাবার কাছ থেকে টাকা এনে বই করতে হয়েছিলো।
আমি কখনই বলবো না প্রকাশকেই লেখকের বই প্রকাশের সব দায় নিতে হবে। লেখক বা প্রকাশক যার টাকাতেই হোক বইটি কতটা মানসম্পন্ন সেটা যাচাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর এ জায়গাটিতে প্রকাশকের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।
আর পাঠযোগ্য কিনা সে ব্যাপারে না পড়ে কি করে সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব বলুন। একটা কথা কি জানেন। বাগান মাত্রই নানাজাতের ফুল থাকবে। স্রোতস্বিনী মাত্রই অনেক ধারা-উপধারা থাকবে। কোন ফুল সুরভি ছড়াবে, কোন ধারা ঝর্ণা সৃষ্টি করবে তা তো সময়ই বলে দেবে।
আরিফুল- এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। কবিতায় নারী উপস্থাপন আছে অনেক। কিন্তু আপনি নারী হিসেবে পুরুষকে উপস্থাপন করেন কি?
নাহিদা- একজন লেখক তার লেখায় সর্বদা দুটি স্বত্বাকে জারি রাখেন। নারী ও পুরুষ স্বত্বা। উভয়ের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা না থাকলে লেখার পরিপূর্ণ অবয়ব দাঁড় করানোতে ব্যর্থ হতে হয়। কবিতায় বা গল্পে যেই চরিত্রই লেখক নির্মান করেন তার সাথে তাকে সম্পূর্ণ মিশে যেতে হয়। অতএব আলাদাভাবে উপস্থাপনের বিষয়টা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। হ্যা তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে সাহিত্য নারীর রূপ ও আঙ্গিক বর্ণনায় বরাবরই অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে আসছে। আর আমার কথা যদি বলেন তবে নারী হিসেবে পুরুষকে নয়। লেখক হিসেবে পুরুষ চরিত্র যতটুকু মনোযোগ দাবী করে তা যথাযথভাবে দেবার চেষ্টা করেছি।
আরিফুল- শোনা যায় আজকাল অনেকে তেলবাজি করে সাহিত্যে পদক পাচ্ছে। এটার সত্যতা কতটুকু।
নাহিদা- হা হা হা। আমি লেখক ও সম্পাদক। গোয়েন্দা বিভাগের কেউ নই। কাজেই সত্যমিথ্যা নির্ণয়ে
আমার কোন ভূমিকা নেই। আর এসব নিয়ে জানার আগ্রহ ছিটেফোঁটাও নেই ।
আমি শুধু জানি একজন প্রকৃত লেখক বা সাহিত্যকর্মীর
তেলবাজির কোন প্রয়োজন নেই। দিনশেষে আপনার কাজই শুধু কথা বলবে।
আরিফুল- আপনি 'জলধি' নামক একটি ছোটকাগজ সম্পাদনা করেন। এটা করতে গিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হয়েছে কি?
নাহিদা- জি হয়েছে। কোন কাজটা সমস্যা ছাড়া হয় বলুন। লিটলম্যাগের ইতিহাস বলে; হাজারো সমস্যাকে মাথায় নিয়ে, হাজারো বিপদ ও সংকটকে উপেক্ষা করে এক একটি লিটলম্যাগ প্রকাশিত হয়।ছোটকাগজের একজন সম্পাদক এটা খুব ভালো করেই জানেন। তবুও ভালোবাসা আর সহিত্যের প্রতি একধরনের দায়বদ্ধতা থেকেই কাজটি করে যান। আমকেও সেসব সংকটের সবক'টি মোকাবিলা করেই এগুতে হচ্ছে। বাড়তি কিছু সমস্যা বরং আমার ক্ষেত্রে যোগ হয়েছে। যাক এ নিয়ে কথা বলা সময়ের অপচয়।
আরিফুল- কবিতা বারবার বাঁক বদল করে। এই বদলটা আসলে কিসের উপর নির্ভর করে?
নাহিদা- বাঁক তো বদল হবেই। বদলটা নির্ভর করে সামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আত্মকেন্দ্রিক-চিন্তাচর্চা, বহুস্বরপ্রবণতা, নিরিক্ষার অতিমাত্রিকতা , গঠনশৈলীর অসম্পূর্ণতা, চিত্রকল্পের ভিন্নতা, এ ছাড়াও আরো অনেক কিছুর উপর। কথা হচ্ছে বদলের এই প্রক্রিয়া যিনি বদলাচ্ছেন মানে কবি বা লেখকের কাছে কতটা অর্থপূর্ণ, কতটা স্থিতিশীল এবং কতটা সৃষ্টিশীল। প্রশ্ন হতে পারে বাঁক বদলের এই বাঁকা চেষ্টায় বাংলা সাহিত্য দুর্বোধ্যতার জালে জড়িয়ে তার কমনীয় রূপটি হারিয়ে ফেলছে না তো? তাই বিবেচনায় আনতে হবে অনেক কিছু। ভাবনার বিস্তার ঘটালেই দেখতে পাবেন এই বদলে যাওয়ার অতলান্তে আমরা মূলত আবার পেছনেই ফিরে যাচ্ছি। অনেকটা বৃত্তের মত। সামনে হাটছি বটে। ফিরে যাচ্ছি আগের অবস্থানে। তাই বাঁক বদলের এই প্রক্রিয়ায় অবগাহন করতে হবে দেশ, সমাজ ও মানুষের কল্যাণের জন্যে।
আরিফুল- নতুন যারা লিখছে তাদের জন্যে কিছু বলুন।
নাহিদা- আমি নিজেকে প্রতিনিয়ত নতুনের দলে ঠেলে দেই। কারন নতুনকে স্বাগত জানানোর জন্যে এরচেয়ে ভালো আর কোন প্রক্রিয়া নেই। কারো উদ্দেশ্যে কিছু বলার যোগ্যতা আমার এখনও হয়নি।তাই নিজেকে প্রতিদিন যা বলি আজ তাই আরেকবার বলি,' নাহিদা পড়ো বেশি, লেখো কম। তোমার কর্মে, মর্মে তুমি সৎ থাকো। সাফল্যের জন্যে ব্যস্ত হয়ে ক্লান্ত হয়ে পরো না। প্রকৃতি তোমার কর্মের হিসাবরক্ষক। তার কাছে ফাঁকির কোন সুযোগ নেই।'
আরিফুল- কবি আজ ৪৬ এ পা দিলেন, শুভ জন্মদিন। দীর্ঘ অতীত পেরিয়ে কি পেলেন আর কি হারালেন। সে গল্পটা শুনতে চাই প্লিজ।
নাহিদা- মানুষ যেহেতু প্রকৃতির সন্তান তাই সে হারায় না কিছুই। সব ফিরে পায় যা তার পাওয়ার কথা। নানা রূপে নানা বৈভবে। আমি আশাবাদী মানুষ। আর অল্পে তুষ্ট। তাই হারানোর হিসেব করে পাওয়ার মূহুর্ত নষ্ট করতে চাই না। যতক্ষণ বেঁচে আছি হাসিমুখে কাজ করে যেতে চাই। শুধু আমার কাছের মানুষদের কাছে একটাই নিবেদন, 'আমার জন্যে এইটুকু শুভকামনা রেখে যান যেন কর্মহীন এই আমার দায় প্রকৃতি একদিনও বহন না করে।'
আরিফুল- আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সাহিত্য বার্তাকে সময় দেবার জন্য।
নাহিদা- আপনাকে ধন্যবাদ। সাহিত্য বার্তার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এবং এর সম্মানীয় পাঠক, লেখক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতিও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।