কবি - হাফিজ রহমান
চৈত্র-সংক্রান্তি
চৈত্র-সংক্রান্তিতে কখনও বৃষ্টি হয় না,
খাঁখাঁ মাঠ, ঝাঁঝাঁ রোদ, চোখ পোড়ে,
কণ্ঠ শুকায়।
চৈত্র-সংক্রান্তিতে বৃষ্টি হবে না,
এই বিশ্বাস নিয়ে বহুদূর মেলায় গেল বালক,
গ্রামের অপর প্রান্তে, বটতলায়, নদী তীরে মেলা,
না হাঁটা বেলায় দাদার কাঁধে চড়ে গেছে,
দাদার কোমরে পয়সা থাকত, পুতুল আর লাল জিলাপি,
এখন দাদা নেই, নিজের গরজে তাই একাই ছোটা,
সারা বছর এক-একটি করে কষ্ট সঞ্চয় করে কয়েক টাকা,
আজ আর পুতুল নয়, ছুরি আর কাটারি,
কামারেরা হাপরে লোহা লাল করে!
বোশেখের ঝড়ে আম পড়ে, এসব তাই একান্তই দরকার।
চৈত্র-সংক্রান্তিতে বৃষ্টি হবে না, হৃষ্ট মনে তাই ফিরতে গিয়ে,
গায়ের একমাত্র বস্ত্রটি ভিজে যায়,
এলোমেলো বাতাসে চোখে পড়ে ধুলো,
একটা বিশ্বাসের মৃত্যু হয়...
পয়লা বৈশাখ
আজ পয়লা বৈশাখ, আজ কালবৈশাখী হবে,
সেই সাথে শীতল বৃষ্টি, প্রতীক্ষা বালকের,
বিকেলে একটা কালো মেঘ গর্জন করে,
এলোমেলো উড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে মিশে যায় আকাশে,
বালক অবাক হয়, লালিত বিশ্বাসের মৃত্যু হয়...
ঈদ মানে খুশী
ঈদ মানে খুশী, মনের আনন্দে ছুটোছুটির মজা,
রঙিন পোশাক পড়ে বালিকা রোশনাই,
হঠাৎ বিষাদ আসে, বালিকার নিম্ন শরীর বিদ্ধ হয়,
এক অযাচিত পাপের কাটায়,
রক্তাক্ত শরীরে তার সব খুশী ভেসে যায়,
সে এখন আর বালিকা থাকেনা,
সে এখন পাপবিদ্ধ নারী।
ঈদ মানে খুশী, এই বিশ্বাসের অপমৃত্যু হয়...