হামিদুল ইসলাম এর কয়েকটি কবিতা
তুমি
কিভাবে ভুলে যাই সব
আমি থাকি না আমার মাঝে
ভুলে গেলে ছেড়ে আসি অনাদি শৈশব
পাখি জন্ম। নষ্ট নীড়। না বলা গোপন কথা
ভুলে গেলে মাঝে মাঝে হারিয়ে যাই
দুচোখে ভাসে অচেনা জগৎ
অচেনা মানুষ
পরিচয় করতে গিয়ে ফিরে আসি বারবার
ভুলে গেলে তোমার কথা একদম মনে পড়ে না
শূন্য প্রান্তরে পায়ে পায়ে হাঁটি
হোঁচট খাই। রক্ত ঝরে
আমার রক্তের স্রোতে ভাসে এক অচেনা মুখ
অবিকল তুমি
চেতনা ফিরে পাই
দেখি আমার রক্ত মজ্জার ভেতরে কেবল তুমি
সব ভুলে গেলেও তোমাকে ভুলতে পারি না কিছুতেই
বিপ্লব
দুচোখ বাড়িয়ে আকাশ দেখি
সূর্য পশ্চিম দিগন্তে। আঁধার ঘনায়
ক্লান্ত শ্বাসে জেগে ওঠে রোমকূপ
পেরিয়ে যাই দিন
বিপ্লব ভুলে গেছে চেনা পথ
চারদিকে বৈষম্যের বাতাবরণ
আকাশ ছোঁয়া ইচ্ছেগুলো ভেঙে পড়ছে প্রতিদিন
স্বপ্নগুলো সাজিয়ে রাখি
স্বপ্নের ভেতর জেগে উঠে মৃত্য
এদিকে আমি। ওদিকে আমার মৃত লাশ
মানুষ পুড়ছে
মানুষ পোড়াচ্ছে মানুষ। তবু বিপ্লব হয় না শেষ
ইতিহাস
কথা দিই
অগোছালো কথাগুলো মূল্যহীন হয়ে পড়ে মাঝে মাঝে
তবু কথা রাখি। বিনে মেঘে বৃষ্টি ঝরে
কথার অন্তর্বাস জুড়ে আগুন
পুড়ে যায় মানবিকতা
আমরা সমাজ সংসার আগুনে পোড়াই অকারণেই
পলাশ শিমুল ফোটে
পাখিরা আসে। কোনো সাড়া নেই। শব্দ নেই
ফিরে যায় হাহাকার বুকে নিয়ে
ঈশ্বর পাটনী নৌকোয়
বাড়িতে পোয়াতি বউ
প্রসব বেদনা কতোদিন। পাশে কেউ নেই
ঘুণ ধরা শরীর
শ্মশান কীট খেয়ে নেয় সমাজের অস্থি রক্ত মজ্জা
ইতিহাস
কথার সমুদ্র
কথার সমুদ্র সাজাই
জীবন তরীতে তুলে রাখি লাল টুকটুকে দিন। গোপন কথা
এসো বর্ধক্যকে দূরে সরিয়ে রাখি
শীত মাখি গায়ে। পেরিয়ে যাই ফাগুন রোদ্দুর
তুমি হও ষোলো
আমি সারা জীবন থেকে যাই ঊনিশ
দুহাতে ছুঁয়ে দেখি রাত
জোনাক মাখা রূপবতী আরশিনগর। বন্ধুত্ব পরস্পর
বাড়ি ফেরে ফসলের ঘ্রাণ
সোনা সোনা রোদ। ইষ্টনাম জপি ঈশ্বর ঈশ্বর
আশঙ্কা
শেষ থেকে শুরু করি জীবন
আশঙ্কার মেঘ ডাকে
তবু এগিয়ে যাই বেনামি বন্দর
জন্মেছি একদিন। জানি মৃত্যু নিশ্চিত
তবু খুঁটে খুঁটে খাই রোদ। মৃত স্বপ্নে পিপাসা মেটাই
সংসার সাজাতে গিয়ে ফিরে এসেছি স্নানের ঘাট থেকে
দুদিনের সংসার
বৃষ্টি ডুবুডুবু
কোথায় যাই
পালাবার রাস্তা নেই। কাঁটাতার ঘেরা
এতোদিনের পরিচিতি
তবু বিদেশী
সব আশঙ্কা ঝড় হয়ে ফিরে আসে কথার ভেতর