সান্দীপনি কুশারী - শ্যামল কুমার রায়
কবি : শ্যামল কুমার রায়
গুরুদেব! তুমি সান্দীপনি এ শতকের
তোমার কাছেই শিক্ষা শুরু নবজাতকের।
সহজাত ভাবে শেখে মাতৃভাষা
'সহজ পাঠ' এ প্রথম তোমার কাছে আসা।
তোমার সান্নিধ্যে দীক্ষা নিয়েছিলেন যাঁরা
স্ব স্ব ক্ষেত্রে উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা তাঁরা।
এক লপ্তে বাঙালির মনে ভাসে সেই সব নাম
মর্ত্যের পৃথিবীতে অমর্ত্য তাঁর নাম।
'জল পড়ে, পাতা নড়ে' তে লেখনী হয়েছিল শুরু
'বাল্মীকি প্রতিভা' তে উদ্ভাসিত গুরু ।
কত শত যাতনা, সয়েছো হাসি মুখে
সবেরই প্রতিফলন আছে তোমার লেখনীতে।
জীবন সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি
তোমার কাছে পাওয়া।
তোমার লেখা গান শুনে মন ভালো হওয়া।
তোমার ঐ স্নেহের 'মোহর' আজও বেঁচে আছে
তোমার দেওয়া নাম 'আকাশবাণী'তে তাঁরই গান বাজে।
শিক্ষা নিয়ে কাটাছেঁড়া হয়েছে জগতে কত
সব তত্ত্ব, সব নীতি শেষে তোমাতে প্রণত।
ধন্য হয়েছিলেন ইয়েটস তোমার মুখবন্ধ লিখে
তোমার লেখা 'গীতাঞ্জলি' বিশ্বজয়ী বটে।
তোমার সময়ে লাগেনি জগতে বিশ্বয়নের ছোঁয়া
প্রান্তিক মানুষের জন্যে তবু তুমি করেছিলে দোয়া।
তোমারই হাতে শুভারঙ্ভ হয়েছিল পৌষমেলা
বিশ্বায়নের মাঝেও তাই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পথ চলা ।
কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প ভবিষ্যত
'হলকর্ষ' ও 'শিল্প সদন' আজও দেখাচ্ছে পথ।
স্বামীজি সম্পর্কে তুমি ছিলে প্রায় চুপ-
রোঁমা রোঁল্যার সাথে কথনে স্বামীজিকে মেপে ছিলে তুমি নিখুঁত ।
সম্পূর্ণ মানুষ হতে আর কি কি লাগে?
সবেরই জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত তুমি নিজেকে দেখালে।সান্দীপনির শিষ্য প্রাণনাথকে যায় না যেমন মাপা
কুশারী তেমনি তোমাকে ছাড়া এ শতাব্দী ফাঁকা।