মহানায়ক
তোমাকে ভোলা যায় না কখনো হে অমর প্রাণ
বাংলার ফসল থেকে উঠে আসে তোমার ঘ্রাণ
অনেক দিন হয়ে গেল, তুমি চলে গেছ পৃথিবী থেকে
রাত তো থেমে গেছে, দিন গেছে অশুভ মেঘে ঢেকে
তুমি চলে গেছ, তারপর এ বাংলার জীবন মাঠে মাঠে ঘাস হয়ে আছে পুরে
তোমার কন্ঠ থামে না, বেজে চলে আকাশ থেকে আকাশের দূরে
তোমাকে কেউ ভোলেনি, ভোলেনি পদ্মা মেঘনা যমুনা জল
তুমি ছাড়া এ দেশটা হয়ে গেছে গাছ ভরা মাকাল ফল
ধান কাটা কৃষক অপেক্ষা করে যেন তুমি আবার আসবে পৃথিবীর পরে
জলের দামে ধান দিয়ে সে কি করবে? মেয়ের বিয়ে তার ঘরে
রাত শেষ হয়ে যায়, আসে না এ জীবনে সাম্যের ভোর
মানুষ হাঁসফাঁস করছে, লেগেছে তাদের বৈষম্যের ঘোর
এ রাতের দেয়াল ভেঙে তুমি আবার আসবে তোমার শ্যামল গঞ্জে
মুক্তির কবিতা নিয়ে আবার তুমি উঠে দাঁড়াবে জনতার মঞ্চে
তোমার শরীরের রক্তের অক্ষর ব্যথার পৃথিবী হয়ে আসে
এ দেশ সবুজ ছিল যখন তুমি ছিলে আমাদের পাশে
তোমার নামে মানবতা জেগে ওঠে, মানুষ হয় মানুষের
তোমার কন্ঠ থেকে প্রেমশক্তি নামে এ জীবনের
ধবল বুকে রক্ত, ঢের রক্ত, আর কত
আলো ছেড়ে অন্ধকারে এ জাতি হয়েছে নত
জমির অাঙিনা ঘুরে ঘুরে নদী জলের সাথে তোমার কথা কয়
আকাশের মাঠে শুয়ে থেকে নক্ষত্র তোমার ধ্যানে রয়
এত দূরে কেন গেলে যেখানে নদী যায় না, পাখি ওড়ে না
এত অদৃশ্য কেন হলে যেখানে মন পৌঁছে না, চোখ খোলে না
বাংলার বাতাসে স্মৃতি হয়ে থাকো দুঃখের জল হয়ে
পুনর্জন্ম হবে তোমার মানুষের হৃদয়ে ভালোবাসা হয়ে।
ধবধবে শাদা পাঞ্জাবিতে তুমি যখন মানবতার কবি
কাক হয়ে যায় এ বাংলার আতিপাতি নেতারা সবি
তারা হয়ে জেগে আছ, বলতেছে আমার হৃদয়
জীবনের মায়া ত্যাগ করে যে দিয়ে গেছে বিজয়
জেগে আছে ধানের ক্ষেত, ফিসফিস করে বাতাস
তোমার পথে এসে দাঁড়িয়ে থাকে বাংলার আকাশ
যত ডাকি তোমাকে ব্যথা হয়ে আসে গলার স্বর
এই পৃথিবী তোমাকে একবার পেয়ে হয়ে গেছে পর
তোমার নাম উঠে আসে বাঙালি নদীর জলের বুদবুদ থেকে
এ বাংলা একটা পাখি, তোমাকে যায় বারেবারে ডেকে।