চোখ
তোমার চোখের ভেতর থেকে কাব্যিক শব্দাবলী
নরম ঝর্ণার মত ছল ছল নির্ঝরিত হয় ;
তোমার চোখের ভেতর থেকে মর্ম কথার মালা
আকাশ পানে হংস সারির মত উড়ে উড়ে যায়;
তোমার চোখের ভেতর স্বপ্নময় কুমোদী ফুটে
জন্ম দেয় অনুপম কবিতার প্রাণময় কথা;
তোমার চোখের মাঝে সৌন্দর্যের যশোগান আছে
আছে প্রেমের আরাধনা, আছে প্রশান্তির আরতি;
তোমার চোখে আছে মন্থন, আছে শ্রাবণ বর্ষণ,
আছে কর্ষণ, আছে রোপন, আছে সজীব ফলন;
তোমার চোখ তমীস্রার আদিম গুহা হতে আসা
ক্লান্ত পুরুষের শান্তি দানে নিরব জলদ মায়া;
তোমার চোখ সর্বোপরি তৃষ্ণার সু-শীতল জল
তোমার চোখে জেগে উঠে আমার প্রতিক্ষার ভোর।
নিষ্ফলা জমির কান্না
ওখানে আমরা যারাই আছি প্রবাসে
সবারই সাধ আছে বিশ্রাম বিলাসে,
বড় বিরল মানুষ আছে পৃথিবীর পরে
অতি লোভ সংবরণে তা সম্ভব করে।
কেউ কেউ নিত্য প্রয়োজনের তাগিদে ব্যতিব্যস্ত
কেউ আবার উচ্চাকাঙ্খায় টাকার কূহক পানে নেশাগ্রস্ত
কেউ বিলাস বহুল জীবন-যাপনে পাল্লা দিতে দায়গ্রস্থ
মন নামের প্রিয় জগৎ তাদের ধ্বংস বিধ্বস্ত।
সুখ-ভোগ বিলাস-ভ্রমণ রসালাপ সাধ
নিত্য দিন সঙ্গী থাকুক ইচ্ছা অগাধ
মেটে না মনের আশা জীবন যান্ত্রিক
সময় অসময় বাজে সঙ্গীত ত্রৈকালিক
ইচ্ছার ছন্দ গুলো উদভ্রান্ত হয়ে তুলে ঝংকার
সাজানো যায় না যে অমিত্রাক্ষর থেকে যায় তার
কিছুতেই মেলে না হিসাব ভুল বারংবার
গোপন থেকেই যায় শূণ্যতার জীর্ণ হাহাকার।
চাহিদার চূড়ান্ত চাপে কত আগে কে মরেছে কেউ জানে না,
কী ভাবে যে কখন! জানবার সময়টা তাও জুটে না।
প্রফুল¬ চেহারা আজ শুষ্ক দ্রাক্ষাতরু,
প্রেম প্রীতি ভালোবাসা সাহারার মরু।
গোধূলি আকাশ দেখে আজ প্রাণ কাঁদে ত্রাসে,
নিষ্ফলা জমির কান্না ভাসে চৈত্রের বাতাসে।