কবি : আব্দুল হাসিব
নিকুঞ্জে এসো
পর্ব-১
তুমি এসো;প্রাণনাথ
কুঞ্জে চলে এসো
আপন বিভূতি নিয়ে কাছে
এসে বসো
রাতের প্রহর যায়, বেশী
নাই নিশি
প্রতিক্ষায় বসে আছি
প্রেমপ্রার্থী ঋষি
অস্থির চঞ্চল আমি নাই
ধৈর্য আর
কেন এতো শঙ্কা, কেন
আচার-বিচার
কী দরকার তোমার রূপের
চর্চার
ওটা যে নেফেরতিতি বা
ক্লিওপেট্রার!
নিদারুণ কষ্টময় বিরহ
প্রহর
নয়নে ঝরিছে আজ কবোষ্ণ
নহর
চলে এসো বেণী খুলে
এলোমেলো চুলে
অনাবৃত দেহ থাকে! তাও
যাও ভুলে
পায়ের নূপুর যদি কারো
ঘুম টুটে
সন্তর্পণে খুলে রেখে
চলে এসো ছুটে।
পর্ব-২
মলয়ে
কাঁচুলি যদি খসে বার বার
ও দুটো লুকাবে কেন দান
বিধাতার
তুমি আসতে হবে না উর্বশী
ভূষণে
তুমি আসবে আমার পিপাসা
মুছনে
তুমি আসবে নেভাতে হৃদয়
আগুন
তোমার শরীর থেকে ঝরবে
ফাগুন
তুমি আমার কামাগ্নি
প্রণয়িনী রাধা
তোমার মানার কথা নয় কোন
বাঁধা!
তুমি আসবে মতুরা; প্রেমাসিক্ত
টানে
প্রতিক্ষার উষ্ণ ঠোঁট
তোমারই পানে
ছড়াবে কস্তুরী ঘ্রাণ
শর্বরী পবনে
দুই দেহ এক হবে অতি
সঙ্গোপনে
আনন্দে ভরিবে উঠি হৃদয় প্রাঙ্গণ
জ্যোৎস্না শিশিরে স্নান হবে সমাপন।
প্রবাসে নির্বাসনে
পর্ব-১
বৈচিত্রময় চারটি ঋতু কানাডার
আছে তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ সমাহার
এদেশ ভূমণ্ডলের বড় এক দেশ
আছি আমি বুকে নিয়ে দুঃখ কষ্ট ক্লেশ
আছি নির্বাসনে রুক্ষ যান্ত্রিক জীবনে
সুখ স্বপ্নের নিমগ্ন এক আয়োজনে
কাজ থেকে ঘরে ফিরি আমি অর্ধ রাতে
একা একা নিশিবাস কেউ নেই সাথে।
ভারাক্রান্ত মনে বসি জানালার পাশে
চেয়ে দেখি তোষারের সাদা দাঁত হাসে
প্রবল ঠাণ্ডার দৃপ্ত তির্যক বাতাসে
পত্রহীন বৃক্ষরাজি কেঁপে ওঠে ত্রাসে
নিঃশব্দ নীলের নিচে জমিন নিথর
নদীর চঞ্চল জল হয়েছে পাথর।
পর্ব-২
রাধার রাত্রির মতো সুদীর্ঘ রজনী
বুকের কষ্ট মুছাবে নেই যে সজনী
কিছুতে বসে না মন করে উচাটন
মনে পড়ে স্বদেশের বন-উপবন
চোখ ভরে ভেসে উঠে দূর্বায় শিশির
দুপুরে চিলের ডানা আকাশে অধীর
সন্ধ্যায় দিগন্ত পরে রঙধনু শাড়ি
অপূর্ব রূপের মোহ প্রাণ নেয় কাড়ি!
জ্যোছনায় দিঘি জল কাঁপে তির তির
নিরব রাতের বুকে নূপুর ঝিঁঝিঁর
সকালে বিলের জলে শাপলার হাসি
মাঠেতে ফসল কাটে শত শত চাষী
এসকল ছেড়ে আজ মুখে নেই হাসি
আমি জানি নিজ দেশ কতো ভালোবাসি।